কিশোরগঞ্জের কুলিয়ারচরে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে বিরোধ আর বাগান থেকে কলার ছড়ি চুরির ঘটনায় দুই গ্রামবাসীর মধ্যে ভয়াবহ টেঁটা যুদ্ধের ঘটনা ঘটেছে। এতে অন্তত ১৫ জন আহত হয়েছেন।

শনিবার (৪ মে) উপজেলার ছয়সূতি ইউনিয়নের মধুয়াচর ও কলাকূপা গ্রামবাসীর মধ্যে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

দুপুর পৌনে ৩টা থেকে ৪টা পর্যন্ত চলা দুই গ্রামবাসীর মধ্যে এ সংঘর্ষের সময় গোটা এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। পরে স্থানীয়দের মাধ্যমে খবর পেয়ে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে লাঠিচার্জ করে। এরপর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।

দুই গ্রামবাসীর মধ্যে এ সংঘর্ষের ঘটনায় বিভিন্ন বয়সের অন্তত ১৫ জন আহত হয়েছেন। তাদেরকে স্থানীয় হাসপাতাল-ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়েছে।

স্থানীয় এলাকাবাসী জানান, কলাকূপা গ্রামের একটি কলাবাগান থেকে কলার ছড়ি চুরির ঘটনায় মধুয়াচর গ্রামের কয়েকজনকে অভিযুক্ত করেন গ্রামের লোকজন। এছাড়াও পূর্ব থেকে এলাকার আধিপত্য নিয়ে বিরোধ চলছিল এই দুই গ্রামে। নতুন করে কলাবাগান থেকে ছড়ি চুরির ঘটনায় এ দুই গ্রামবাসীর মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয়।

এমন উত্তেজনা যেন সংঘাতে না রূপ নেয় সেজন্য এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিদের মধ্যস্ততায় শনিবার দুপুরে সালিশি দরবারে বসেন দুপক্ষের লোকজন। স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাদের পাশাপাশি জনপ্রতিনিধিরা এ সালিশ দরবারে উপস্থিত ছিলেন।

নেতৃবৃন্দ ও জনপ্রতিনিধির উপস্থিতিতেই সালিশ দরবারের একপর্যায়ে কথা-কাটাকাটি থেকে দুই পক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। অল্প কিছুক্ষণের মধ্যেই এই সংঘর্ষ দুই গ্রামের মধ্যে ছড়িয়ে যায়। এরপরেই এলাকার শত শত লোকজন দেশীয় অস্ত্র টেঁটা, এক কাটিয়া, হলঙ্গা, লাঠিসোঁটা ইত্যাদি নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে।

এরপর দুপুর পৌনে তিনটা থেকে চারটা পর্যন্ত চলে দুই পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা।

কুলিয়ারচর উপজেলার ছয়সূতি ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ইকবাল হোসেন ওরফে ভিপি ইকবাল জানান, দুই গ্রামবাসীর মধ্যে গত কয়েকদিন যাবত কলার ছড়ি চুরির ঘটনাকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা বিরাজমান ছিল। আর আজ সেটা নিয়ে সালিশ দরবারে বসা হয়েছিল। কিন্তু একপর্যায়ে কথা কাটাকাটি নিয়ে দুই গ্রামের লোকজনের মধ্যে এমন সংঘর্ষ ও ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় বেশ কয়েকজন লোক আহত হয়েছেন।

কুলিয়ারচর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সারোয়ার জাহান জানান, কলার ছড়ি চুরির ঘটনাটি আপোষ করার জন্য শনিবার দুপুরে সালিশে বসেছিলেন গ্রামের লোকজন। কিন্তু এই সালিশ দরবার চলাকালীন সময়ে একপর্যায়ে উভয় এলাকার লোকজনের মধ্যে কথা কাটাকাটির জের ধরে তারা সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে।

তিনি আরও বলেন, সংঘর্ষে বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন। তবে পুলিশি তৎপরতায় বড় ধরনের কোনও দুর্ঘটনা ঘটেনি। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।

মোহাম্মদ এনামুল হক হৃদয়/টিএম