বরিশালের গৌরনদী উপজেলা পরিষদ নির্বাচনকে ঘিরে সংঘর্ষের ঘটনায় আওয়ামী লীগের ১০৪ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে পাল্টাপাল্টি দুটি মামলা হয়েছে। এর মধ্যে পদধারী ৬৪ নেতার নাম উল্লেখ করে এজাহার দেওয়া হয়েছে।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন গৌরনদী থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনোয়ার হোসেন। তিনি ঢাকা পোস্টকে বলেন, উভয় পক্ষ থানায় এজাহার দায়ের করেছেন। আমরা মামলা গ্রহণ করে তদন্ত করছি। তদন্তে যারা দোষী প্রমাণিত হবেন তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

তবে ঘটনার পর এখন পর্যন্ত কাউকে গ্রেপ্তার করেনি পুলিশ। পুলিশ জানিয়েছে, শুক্রবার (৩ মে) রাতে উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থী হারিছুর রহমানের সমর্থক আহত দেলোয়ার হোসেন দিলুর স্ত্রী আফরোজ আক্তার মুন্নি বাদী হয়ে আওয়ামী লীগের ৩৮ জন নেতাকর্মীকে অভিযুক্ত করে অভিযোগ দায়ের করেন। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন- আহত ইউপি চেয়ারম্যান সৈকত গুহ পিকলু, তার ছোট ভাই যুবলীগ নেতা সলিল গুহ পিন্টু, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মাসুম মল্লিক খোকন, আওয়ামী লীগের সদস্য জাকির হোসেন সান্টু, পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ও পৌর যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক আল আমিন হাওলাদার, পৌরসভার প্যানেল মেয়র ও পৌর যুবলীগের সহ-সভাপতি মো. ইখতিয়ার হোসেন হাওলাদার।

এদিকে পৌর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও মাহিলাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সৈকত গুহ পিকলুর মা তাপসী রানি গুহ বাদী হয়ে একই দিনে আওয়ামী লীগের ২৬ নেতাকর্মীর নাম উল্লেখ করে ৬৬ জনকে অভিযুক্ত করে লিখিত অভিযোগ দেন। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য আসামি হলেন- উপজেলা যুবলীগের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক দেলোয়ার হোসেন দিলু, তার ছেলে ছাত্রলীগ নেতা ইমতিয়াজ মাহমুদ, বাটাজোর ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক রেমন তালুকদার কালু।

স্থানীয়রা জানিয়েছেন, হামলা ও সংঘর্ষের পর উপজেলার গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে পুরো উপজেলাজুড়ে।

গৌরনদী পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থী মনির হোসেন মিয়া অভিযোগ করে বলেন, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হারিছুর রহমানের নির্দেশে হামলায় ইউপি চেয়ারম্যান সৈকত গুহ পিকলুসহ তিনজনের অবস্থা গুরুতর। তাদের মধ্যে পিকলু ও মামুন বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আছেন। আর পলাশকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নেওয়া হয়েছে।

বাটাজোর ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক রেমন তালুকদার কালু দাবি করেছেন, সৈকত গুহ পিকলুর ওপর কেউ হামলা করেনি। বরং পিকলুর নেতৃত্বে দেলোয়ার হোসেন দিলু ও তার ছেলে ইমতিয়াজ মাহমুদকে গুলি করে আহত করা হয়েছে।

তবে বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক মো. শাহাদাত হোসেন জানিয়েছেন, ইউপি চেয়ারম্যান সৈকত গুহ পিকলুর অবস্থা আশঙ্কাজনক। তার মাথায় ধারালো অস্ত্রের আঘাত গুরুতর।

তিনি আরও বলেন, হাসপাতালে ভর্তি অপর আহত দেলোয়ার হোসেন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন এমন কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি।

উল্লেখ্য, আগামী ২১ মে গৌরনদী উপজেলা পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।

সৈয়দ মেহেদী হাসান/এমজেইউ