হাতীবান্ধায় নারী প্রার্থীর ওপর হামলা, সাংবাদিকসহ আহত ১০
লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থী শাহানা ফেরদৌসী সীমার ওপর হামলা চালিয়েছেন অপর প্রার্থী লিয়াকত হোসেন বাচ্চুর সমর্থকরা। এ ঘটনায় সাংবাদিকসহ দুই প্রার্থীর ১০ জন সমর্থক আহত হয়েছেন। তারা হাতীবান্ধা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিচ্ছেন। শুক্রবার (৩ মে) দিবাগত রাতে হাতীবান্ধা উপজেলা মেডিকেল মোড় এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, রাতে হাতীবান্ধা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান প্রার্থী লিয়াকত হোসেন বাচ্চুর সমর্থক হাফিজুল অপর চেয়ারম্যান প্রার্থী আনারস প্রতীকের শাহানা ফেরদৌস সীমাকে নিয়ে নির্বাচনী প্রচারণার সময় অশ্লীল মন্তব্য করেন। বিষয়টি জানতে পেরে চেয়ারম্যান প্রার্থী শাহানা ফেরদৌসী সীমার স্বামী ও পাটিকাপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মুজিবুল আলম সাদাত প্রতিবাদ করেন। এর প্রেক্ষিতে দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা তৈরি হয়।
বিজ্ঞাপন
একপর্যায়ে পুলিশ এবং সাংবাদিকদের উপস্থিতিতে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে শাহানা ফেরদৌসী সীমা তার সমর্থকদের নিয়ে মেডিকেল মোড় ত্যাগ করার সময় লিয়াকত হোসেন বাচ্চুর সমর্থকরা তাদের ওপর হামলা চালায়। এ সময় লিয়াকত হোসেন বাচ্চুর সমর্থকরা শাহানা ফেরদৌসী সীমার গাড়ির জানালা ভেঙে লাঠি দিয়ে আঘাত করে। এতে শাহানা ফেরদৌসী সীমা হাতে ও শরীরে আঘাতপ্রাপ্ত হন। সংবাদ সংগ্রহ করতে গেলে দৈনিক কালের কণ্ঠের উপজেলা প্রতিনিধি হাসানের ওপর হামলা করা হয়।
এ বিষয়ে আহত হাফিজুল ইসলাম বলেন, আমি কারো বিরুদ্ধে অশ্লীল ভাষায় কিছু বলিনি। আমি শুধু কাপ পিরিস মার্কার ভোট চেয়েছি।
আহত গ্রাম পুলিশ রুবেল মিয়া বলেন, আমার পাটিকাপারা ইউনিয়নের চেয়ারম্যানের ওপর হামলা করেছে শুনে ঘটনাস্থলে যাই। পরে কাপ পিরিস মার্কার সমর্থকরা আমার ওপর হামলা চালিয়ে আমার হাত ভেঙে দেয়। আমি আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছি।
শাহানা ফেরদৌসী সীমার স্বামী মজিবুল আলম সাদাত বলেন, মেডিকেল মোড় এলাকায় হ্যান্ড মাইক দিয়ে আমার স্ত্রী এবং আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছিল লিয়াকত হোসেন বাচ্চুর লোকজন। বিষয়টি অনেকেই দেখেছে। আমরা প্রতিবাদ জানিয়েছিলাম। কিন্তু তারা আমাদের ওপর হামলা করেছে। এ ধরনের ঘটনায় আমরা সুষ্ঠু ভোট নিয়ে শঙ্কিত।
এ বিষয়ে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান প্রার্থী লিয়াকত হোসেন বাচ্চু বলেন, আপনারা সাংবাদিকরা আনারস মার্কার সমর্থক ও কর্মী। এ বিষয়ে আমার কোনো বক্তব্য নেই।
উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থী শাহানা ফেরদৌসী সীমা বলেন, প্রতিপক্ষ চেয়ারম্যান প্রার্থীরা আমাকে নিয়ে বাজে এবং অশ্লীল বক্তব্য দেন। এই ঘটনায় আমি এবং আমার স্বামী তীব্র প্রতিবাদ জানাই। এরপর আমার সমর্থকদের ওপর কাপ পিরিস মার্কার চেয়ারম্যান প্রার্থী লিয়াকত হোসেন বাচ্চুর লোকজন অতর্কিত হামলা চালালে আমিসহ আমার সমর্থক ১০ জন আহত হন।
হাতীবান্ধা থানা পুলিশের ওসি (তদন্ত) নির্মল চন্দ্র মোহন্ত জানান, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে। বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে।
নিয়াজ আহমেদ সিপন/আরএআর