রাঙামাটি সদরের পুরানপাড়া এলাকার বাসিন্দা শাবানা বেগম। তার স্বামী দিনমজুর আর তিনি গৃহিণী। কয়েক মাস আগে তার বাসায় বিদ্যুৎ অফিসের লোকজন গিয়ে প্রিপেইড মিটার লাগিয়ে দিয়ে আসেন। প্রিপেইড মিটার লাগানোর পর তার বকেয়াসহ ১১০০ টাকা বিদুৎ বিল আসে। কিন্তু পরের মাসে তার বিল আসে ৬৪ হাজার টাকা। একইভাবে শহরের পুরানপাড়া, জালিয়াপাড়া, ইসলামপুর এলাকার শতাধিক গ্রাহক অতিরিক্ত বিদ্যুৎ বিলের কারণে হয়রানির শিকার হয়েছেন। 

গত রোববার (২৮ এপ্রিল) সকালে ভূতুড়ে বিদ্যুৎ বিল নিয়ে শহরের রিজার্ভ বাজার, পুরানপাড়া ও  শরীয়তপুর এলাকার বাসিন্দারা বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের কার্যালয়ে এসে অভিযোগ করেন।

পুরানপাড়া এলাকার বাসিন্দা আবদুর রহিম বলেন, আমি পেশায় একজন ইমাম। আমি বেতন পাই ৭ হাজার টাকা। আমি প্রতি মাসের বিদ্যুৎ বিল প্রতি মাসে পরিশোধ করি। কিন্তু প্রিপেইড মিটার বসানোর পর ৯ হাজার টাকা বিদ্যুৎ বিল এসেছে। এতগুলো বিল আমি কীভাবে পরিশোধ করব?

আরেক ভুক্তভোগী নতুন জালিয়াপাড়া এলাকার মিনাকী রাণী দাস বলেন, প্রিপেইড মিটার বসানোর পর থেকে প্রতি মাসে ২ হাজার টাকা রিচার্জ করেও কুলাতে পারছি না। টাকা কেটে নিয়ে যাচ্ছে। তার ওপর আগের ব্যবহৃত ইউনিট বকেয়া আছে জানিয়ে ২৫ হাজার টাকা বিদ্যুৎ বিল এসেছে। আমরা নিম্নআয়ের মানুষ। এত টাকা কোথা থেকে দেব?

রাঙামাটি পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মো. হেলাল উদ্দিন বলেন, আমার এলাকার অনেকের নাকি অতিরিক্ত বিল এসেছে। এলাকাবাসী আমাকে জানানোর পর আমি তাদেরসহ বিদ্যুৎ অফিসে গিয়ে বিষয়টি জানিয়েছে। 

বিদুৎ উন্নয়ন বোর্ড রাঙামাটির পরিচালন ও সংরক্ষণ সার্কেলের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মো. কামাল উদ্দিন আহমেদ বলেন, আমরা রিজার্ভ বাজার এলাকায় ৪ হাজার গ্রাহকের মধ্যে ইতোমধ্যে প্রায় ৩ হাজার গ্রাহককে প্রিপেইড মিটার দিয়েছি। যারা প্রিপেইড মিটার পেয়েছে তাদের পুরাতন মিটারে কিছু ইউনিট বকেয়া থাকার কারণে সেগুলোর বিল এসেছে। যারা অভিযোগ করেছেন অতিরিক্ত বিলের তারা যদি আবেদন করেন তাহলে আমরা বিলগুলো কিস্তির মাধ্যমে পরিশোধ করার সুযোগ দেব।

অতিরিক্ত বিলের বিষয়ে তিনি বলেন, মিটার রিডারদের ভুলের কারণেও এমনটা হতে পারে। আমরা সেগুলো দেখছি।

মিশু মল্লিক/আরএআর