সরদার আবুল কালাম আজাদ

আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে কটাক্ষ করে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে চরম সমালোচনার মুখে পড়েছেন পাবনার ভাঙ্গুড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সরদার আবুল কালাম আজাদ। তিনি বর্তমান ভাঙ্গুড়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বাকী বিল্লাহর ছোট ভাই ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি লোকমান হোসেনের ভাগনে। আওয়ামী লীগ নেতার এমন কাণ্ডে উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ চরম ক্ষোভ প্রকাশ করে তার শাস্তি দাবি করেছেন।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সরদার আবুল কালাম আজাদের বড় ভাই বাকী বিল্লাহ দীর্ঘদিন ধরে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। এছাড়া বাকী বিল্লাহ ২০০৬ সালে ভাঙ্গুড়া পৌরসভার মেয়র এবং ২০০৯ সালে ও ২০১৮ সালে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। আজাদের আপন মামা লোকমান হোসেন ২০০৯ সাল থেকে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন। বাকী বিল্লাহর ছোট ভাই হেদায়েতুল হক রাজনীতি না করেও আওয়ামী লীগের সমর্থন নিয়ে উপজেলার পারভাঙ্গুড়া ইউনিয়ন পরিষদের দুইবার চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। মূলত বড় ভাই এবং মামার খুঁটির জোরে আজাদও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদকের পদ পান দুই বছর আগে। দায়িত্ব পাওয়ার পর থেকেই আজাদ বিভিন্ন সময়ে ফেসবুকে আওয়ামী লীগের নেতাদের সমালোচনা করে স্ট্যাটাস দিয়ে বিতর্কিত হন। এ অবস্থায় তিনি বুধবার (১ মে) প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে কটাক্ষ করে ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দেন। তিনি লিখেন ‘হাসিনার নিয়ম-নীতির বিবর্তনে, এই অঞ্চলে নেতাকর্মী-জনগণের চরিত্রে পালাক্রমে ধর্ষণ চলিতেছে। তবুও আমি সতী।’

উপজেলার দিলপাশার ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি রিপন আহমেদ বলেন, সরদার আবুল কালাম আজাদ আওয়ামী লীগ নেতা হয়ে প্রভাব খাটিয়ে ভাঙ্গুড়া বাজারে রেলের এবং নদীর অনেক জায়গা দখল করে ভবন নির্মাণ করেছেন। রেলের জমিতে পুকুর করেছেন। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আছে বলেই তিনি আঙুল ফুলে কলা গাছ হয়েছেন। এখন তিনি শেখ হাসিনার নেতৃত্ব মানেন না। এমন নেতা আওয়ামী লীগের কোনো প্রয়োজন নেই। এই নেতার কঠোর শাস্তি হওয়া উচিত।

এ বিষয়ে কথা বলতে সরদার আবুল কালাম আজাদের মোবাইল ফোনে একাধিক বার কল করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।

উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও আজাদের মামা লোকমান হোসেন বলেন, ফেসবুকে যেটা লিখেছে আজাদ, সেটা কোনোভাবেই সে লিখতে পারে না। জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আমাকে বিষয়টি অবগত করেছেন। এখন নেতাকর্মীর সঙ্গে আলোচনা করে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কোনোভাবেই তাকে ছাড় দেওয়া হবে না। 

পাবনা জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সদর আসনের সংসদ সদস্য গোলাম ফারুক প্রিন্স বলেন, জননেত্রী শেখ হাসিনাকে নিয়ে আওয়ামী লীগ নেতার এমন স্ট্যাটাস খুবই ন্যাক্কারজনক। বিষয়টি আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতাদের জানানো হয়েছে। ওই আওয়ামী লীগ নেতার বিরুদ্ধে কঠোর সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

রাকিব হাসনাত/আরএআর