১৫ দিন আগেও সাতক্ষীরার বাজারে তরমুজের দাম ছিল প্রতি কেজি ২০ থেকে ২৫ টাকা। এরই মধ্যে এখন বাজারে প্রতি কেজি তরমুজের দাম ৪৫ থেকে ৫০ টাকা। তরমুজের আকার হিসেবে দামও কমবেশি। তীব্র এই দাবদাহে ক্রেতাদের মাঝে তরমুজের চাহিদা বেড়েছে। তেমনি রয়েছে ভোগান্তিও।

তবে ক্রেতাদের দাবি, কেজি হিসেবে নয়, পিস হিসেবে বিক্রি করা হোক সুস্বাদু এ ফলটি। বিক্রেতারা বলছেন, তবে গ্যারান্টি দিতে পারব না। অনেক তরমুজ পচে যায়, সে কারণে লোকসান ঠেকাতে একটু বেশি দামে বিক্রি করা হয়। ক্রেতা ও বিক্রেতার ভিন্ন দুই দাবি নিয়ে মুখোমুখি তারা। মার্কেটিং কর্মকর্তা জানিয়েছেন, বাজার তদারক করা হচ্ছে।

সাতক্ষীরা শহরের হাটের মোড় এলাকায় তরমুজের বড় আড়ত ও খুচরা বিক্রেতার দোকান। দোকান ও আড়তগুলোয় এখন তরমুজের সরবরাহ রয়েছে প্রচুর। তিন জাতের তরমুজ পাওয়া যাচ্ছে বাজারে।

তরমুজের আড়তদার ব্যবসায়ী রমেশ চন্দ্র দাস ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমরা চাষিদের তরমুজ চাষ শুরুর আগে সামান্য কিছু টাকা দিয়ে রাখি। বিনিময়ে তরমুজ বাজারে আসার পর সেই ক্ষেতমালিক আমার আড়তে তরমুজগুলো দেন, তার জন্য আমি ১০ শতাংশ কমিশন খাই। আমরা কেজি দরে বিক্রি করছি তরমুজ।

তরমুজ ক্রেতা আজিজুর রহমান জানান, একটি তরমুজ তারা ক্ষেত থেকে ৩০ থেকে ৩৫ টাকা দরে কিনে বাজারে ক্রেতাদের কাছে বিক্রি করছেন ১৫০ থেকে ২০০ টাকা। একটি তরমুজে এত টাকা লাভ করছেন। বাজারে কোনো মনিটরিং নেই। ক্রেতারা প্রতারিত হচ্ছেন। আমি ৩ কেজি ৪০০ গ্রাম একটা তরমুজ কিনেছি। তার দাম পড়েছে ১৪০ টাকা। আর একটু আকারে ভালো নিলে দামও বেশি। তরমুজ কেজিতে বিক্রি না করে পিস হিসেবে বিক্রির জন্য দাবি করছি। তা ছাড়া কর্মকর্তারা ভোক্তা অধিকার আইন প্রয়োগ করলে ক্রেতারা ঠকবেন না।

শহরের হাটের মোড় এলাকার খুচরা বিক্রেতা মোত্তর্জা আহমেদ মিলন বলেন, আমরা আড়ত থেকে মণ হিসেবে কিনি। সে কারণে কেজি হিসেবে বিক্রি করি। কিন্তু জানতে পেরেছি আড়তদাররা ক্ষেত থেকে পিস হিসেবে তরমুজ কিনে আনেন। ক্ষেত থেকে অল্প দামে নিয়ে এসে আমাদের কাছে চড়া দামে বিক্রি করেন। সে কারণে আমাদেরও চড়া দামে বিক্রি করতে হয়। এতে ক্রেতাসাধারণ অনেক সমস্যায় পড়ে। দাম বেশি হওয়ায় সবাই কিনতে পারছে না। এখন গরমের সময় প্রচুর চাহিদা রয়েছে। 

তরমুজের খুচরা বিক্রেতা মহিউদ্দীন জানান, তরমুজের ভেতরে কী আছে কেউ বলতে পারে না। কেনার সময় ক্রেতাদের গ্যারান্টি দিয়ে দিতে হয়। খারাপ হলে বাড়ি থেকে ফিরিয়ে এনে মুখে ছুড়ে মারে। ওই তরমুজ আর বিক্রি হয় না। সে কারণে আমাদের বেশি দামে বিক্রি করতে হয়। হ্যাঁ, আমরা পিস হিসেবে বিক্রি করব, তবে তখন কোনো তরমুজের আমরা ভালো বলে গ্যারান্টি দিতে পারব না। খারাপ হলে ফেরতও নিতে পারব না।

সাতক্ষীরা জেলা মার্কেটিং কর্মকর্তা (বিপণন) সালেহ মো. আব্দুল্লাহ ঢাকা পোস্টকে বলেন, স্যোশাল মিডিয়ায় তরমুজের কেজি ও পিস হিসেবে বিক্রির জন্য যে দামের কথা নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা হচ্ছে, সেটি নিয়ে আমরা কৃষি বিভাগ অধিদফতর কাজ করছি। এখানে কোনো দামের তারতম্য আছে কি না, আমরা বাজার মনিটরিং করছি। কোথাও কোনো অভিযোগ পাওয়া গেলে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

আকরামুল ইসলাম/এনএ