গ্রামে লাশ পৌঁছাতেই কান্নার রোল
গুলিবিদ্ধ ছাত্রলীগ নেতার মৃত্যুতে এলাকা থমথমে
লক্ষ্মীপুরের চন্দ্রগঞ্জে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে হামলার ঘটনার ৪ দিন পর আহত ছাত্রলীগ নেতা এম সজীব মারা গেছেন। মঙ্গলবার (১৬ এপ্রিল) রাত ২টার দিকে ঢাকার পপুলার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ময়নাতদন্ত শেষে বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) সন্ধ্যায় গ্রামের বাড়িতে তার লাশ পৌঁছালে হৃদয় বিদারক দৃশ্যের সৃষ্টি হয়।
এদিকে ঘটনার পর থেকে চন্দ্রগঞ্জ এলাকাজুড়ে থমথমে ভাব বিরাজ করছে। হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন নিহতের মাসহ স্বজনরা।
বিজ্ঞাপন
এর আগে শুক্রবার (১২ এপ্রিল) রাত ২টার দিকে সদর উপজেলার চন্দ্রগঞ্জ ইউনিয়নের পাঁচপাড়া গ্রামের যদির পুকুর পাড়ে প্রতিপক্ষের লোকজন সজিবসহ ছাত্রলীগের চার নেতাকর্মীকে গুলি ও কুপিয়ে জখম করে। এ ঘটনায় সোমবার (১৫ এপ্রিল) রাতে সজিবের মা বুলি বেগম বাদী হয়ে চন্দ্রগঞ্জ থানা স্বেচ্ছাসেবক লীগের আহ্বায়ক কাজী মামুনুর রশিদ বাবলু ও সদস্য সচিব তাজুল ইসলাম তাজু ভূঁইয়াসহ ১১ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা দায়ের করেন। এতে ২০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়।
আরও পড়ুন
সজিব চন্দ্রগঞ্জ কফিল উদ্দিন বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি প্রার্থী ছিলেন। তিনি পাঁচপাড়া গ্রামের মৃত সিরাজ মিয়ার ছেলে। সজীব চন্দ্রগঞ্জ থানা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মাসুদুর রহমান মাসুদের অনুসারী।
মাসুদ সাংবাদিকদের বলেন, সজীবের মাথায় অস্ত্রোপচার করা হয়। এরপর থেকে তাকে আইসিউতে রাখা হয়। আমার ভাইটাকে তারা মেরে ফেলল।
এজাহার সূত্রে জানা যায়, শুক্রবার রাতে চন্দ্রগঞ্জ থানাধীন পাঁচপাড়া গ্রামের পুকুরপাড় এলাকায় ছাত্রলীগ কর্মী সজীব, সাইফুল পাটোয়ারী, মো. রাফি ও সাইফুল ইসলাম জয়ের ওপর অতর্কিত হামলা চালায় অভিযুক্তরা। একপর্যায়ে সজীবকে লক্ষ্য করে গুলি চালানো হয়। এ সময় তাকে বাঁচাতে গেলে অন্যদের ওপরও গুলি চালানো হয়। পরে আহত অবস্থায় ওই চারজনকে সদর হাসপাতালে নিয়ে যান স্থানীয়রা। হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক উন্নত চিকিৎসার জন্য সজীব, সাইফুল ও রাফিকে ঢাকায় প্রেরণ করে।
চন্দ্রগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. এমদাদুল হক বলেন, হামলা ও গুলির ঘটনায় সোমবার রাতে সজীবের মা বুলি বেগম বাদি হয়ে কাজী বাবলুকে প্রধান করে ১১ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা করেন। এতে অজ্ঞাতনামা আরও ১৮/২০ জনকে আসামি করা হয়। পরে বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে মামলার দ্বিতীয় আসামি থানা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সদস্য সচিব তাজুল ইসলাম তাজু ভূঁইয়াসহ পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করে আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী জেলা কারাগারে পাঠানো হয়েছে। অপরাপর আসামিদের ধরতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
হাসান মাহমুদ শাকিল/এমএসএ