ঝালকাঠিতে ট্রাকচাপায় ১৪ জন নিহত
পাশাপাশি কবরে শায়িত স্বামী, স্ত্রী ও দুই সন্তান
ঝালকাঠিতে সিমেন্টবোঝাই ট্রাকের চাপায় নিহত প্রাইভেটকার ও অটোরিকশার ১৪ যাত্রীর মধ্যে চারজন ঝালকাঠি রাজাপুরের একই পরিবারের সদস্য। একই সঙ্গে আজ তাদের দাফন সম্পন্ন হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) সকাল ১০টায় উপজেলার মঠবাড়ি ইউনিয়নের দক্ষিণ সাউথপুর দাখিল মাদরাসা চত্বরে জানাজা সম্পন্ন হয়। জানাজায় প্রায় দুই হাজার মানুষ অংশ নেন। সাউথপুর কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের ইমাম আব্দুল খালেক মাওলানা জানাজায় ইমামতি করেন। পরে বিকেল ৫টায় পারিবারিক কবরস্থানে চারজনের দাফন সম্পন্ন করা হয়। এর আগে গতকাল রাতে তাদের মরদেহ নিজ বাড়িতে এসে পৌঁছালে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে আসে।
বিজ্ঞাপন
নিহতরা হলেন- রাজাপুর উপজেলার মঠবাড়ি ইউনিয়নের সাউথপুর এলাকার মৃত মিজানুর রহমানের বড় ছেলে প্রিন্স হাসিবুর রহমান (৩২), তার স্ত্রী নাহিদা আক্তার (২৭), তাদের সন্তান তাকিয়া (সাড়ে চার বছর), ও তাহমিদ (১)।
সাউথপুর এলাকার মো. বরকত উল্লাহ বলেন, প্রিন্স হাসিবুর রহমানের বাবা মারা যাওয়ার পর তিন ভাইকে মানুষ করার জন্য তিনি অত্যন্ত চেষ্টা চালিয়েছেন। পরিবারে তিন ভাই ও মাকে নিয়ে তিনি একসঙ্গে ছিলেন। তিনি অনেক ভালো মানুষ ছিলেন। এলাকার অসংখ্য বেকার যুবকদের চাকরি দিয়েছেন।
আরও পড়ুন
সাউথপুর গ্রামের ৬নং ওয়ার্ডের সদস্য মো. তাওহীদুল ইসলাম বলেন, নিহতের ছোট ভাই তানভীর দুবাই থাকেন। তিনি আজ সকালে ঢাকায় এসে পৌঁছান। সেজন্য সকালে জানাজা শেষে দাফন করা হয়নি। বাড়িতে আসার পর বিকেল ৫টায় পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে।
রাজাপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ডেজলিং তালুকদার বলেন, গতকাল সড়ক দুর্ঘটনায় একই পরিবারের চারজন এবং প্রিন্স হাসিবুর রহমানের শ্যালিকা ও ভায়রা ভাই নিহত হয়েছে। আমরা এলাকাবাসী মর্মাহত। প্রিন্স খুবই ভালো মনের মানুষ ছিল। আমরা সবাই তাদের জন্য দোয়া করি।
রাজাপুর উপজেলার চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ মনিরুজ্জামান বলেন, গতকাল যে মর্মান্তিক ঘটনা ঘটেছে সেটি ভাষায় প্রকাশ করার মতো না। এ ধরনের ঘটনা আর যেন না ঘটে তার জন্য সংশ্লিষ্ট সকলের সচেতন হতে হবে। এ ছাড়া সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে হবে। নয়তো এ ধরনের ঘটনা বার বার ঘটবে।
ঝালকাঠির জেলা প্রশাসক ফারাহ্ গুল নিঝুম বলেন, দুর্ঘটনা তদন্তে ঝালকাঠির অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক সাজিয়া আফরোজকে প্রধান করে চার সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত প্রত্যেকের পরিবারকে পাঁচ লাখ টাকা আর্থিক সহায়তা দেওয়া হবে। এ ছাড়া যারা পঙ্গুত্বের শিকার হয়েছেন তাদের প্রত্যেককে তিন লাখ টাকা এবং আহতদের জন্য এক লাখ টাকা সরকারের পক্ষ থেকে দেওয়া হবে।
মো. নাঈম হাসান ঈমন/এমজেইউ