নোয়াখালীর সেনবাগে বৈশাখী মেলা বসানো নিয়ে দুই কিশোর গ্যাংয়ের সংঘর্ষে মো. শাওন (১৮) নামের এক কিশোর নিহত হয়েছেন। একই সময়ে ধারালো অস্ত্রের আঘাতে আরও সাতজন আহত হয়েছেন। বুধবার (১৭ এপ্রিল) রাত সাড়ে ৮টার দিকে সেনবাগ উপজেলার সেবারহাট বাজারে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

নিহত শাওন উপজেলার দক্ষিণ রাজারামপুর গ্রামের জমাদার বাড়ির কচি মিয়ার ছেলে। তিনি স্থানীয় উত্তর রাজারামপুর বশিরিয়া মাদরাসার আলিম দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। তাৎক্ষণিকভাবে আহতদের নামপরিচয় জানা যায়নি। তবে তাদের মধ্যে পিয়াস নামে একজনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ফেনী সদর হাসপাতাল থেকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।  

স্থানীয়দের বরাতে পুলিশ জানায়, উপজেলা প্রশাসন কিংবা থানা পুলিশের অনুমতি না নিয়ে বৃহস্পতিবার সেবারহাট বাজারে বৈশাখী মেলা আয়োজন করা হয়। রাতে মেলায় দোকান বসানোকে কেন্দ্র করে দুই কিশোর গ্যাংয়ের মধ্যে বিরোধ দেখা দেয়।

পরে তারা সেবারহাট বাজারের ওআলী মুন্সী সড়কে মারামারিতে লিপ্ত হয়। এ সময় প্রতিপক্ষের ধারালো অস্ত্রের আঘাতে শাওনের নাড়িভুঁড়ি বেরিয়ে যায়। তাকে ফেনী সদর হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

আহত অন্যদের ফেনী, দাগনভূঞা ও সেনবাগ উপজেলার বিভিন্ন হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে চট্টগ্রাম পাঠানো হয়েছে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে দুটি কিশোর গ্যাংয়ের মধ্যে আধিপত্য নিয়ে বিরোধ চলে আসছিল। বুধবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে সেবারহাট বাজারে বৈশাখী মেলা বসানো নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে উভয় পক্ষ ধারালো অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়ায়। এতে শাওনসহ সাতজন আহত হন। এর মধ্যে শাওন ও পিয়াসের অবস্থা গুরুতর হলে তাদের ফেনী সদর হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে শাওনকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক। আর উন্নত চিকিৎসার জন্য পিয়াসকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পাঠানো হয়। অপর আহতদের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

সেনবাগ থানা পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মো. হেলাল উদ্দিন বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, প্রথম দিকে কেউ ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেনি। পরে খোঁজ নিয়ে জানতে পারি শাওন নিহত হয়েছে। তার মরদেহ ফেনী সদর হাসপাতালে রয়েছে। এ বিষয়ে তদন্ত করে আইনগত পদক্ষেপ গ্রহণ করা ও অপরাধীদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।

নোয়াখালীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (বেগমগঞ্জ সার্কেল) মো. নাজমুল হাসান রাজীব ঢাকা পোস্টকে বলেন, অনুমোদনহীন মেলা বসানো কেন্দ্র করে দুই পক্ষের মধ্যে বিরোধ দেখা দেয়। ওই বিরোধের জের ধরে এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। ঘটনার পরপরই অবৈধ মেলা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। অবৈধভাবে মেলা বসানো ও হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। আমরা ঘটনার সঙ্গে জড়িত কিছু আসামির নাম পেয়েছি। তবে তদন্ত শেষে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানানো হবে।     

হাসিব আল আমিন/আরকে