নকল দুধ তৈরির সংবাদ করায় সাংবাদিকের পা ভেঙে দিল সন্ত্রাসীরা
নকল দুধ তৈরির সংবাদ প্রকাশের জেরে পাবনার ভাঙ্গুড়া উপজেলার দৈনিক খোলা কাগজের প্রতিনিধি মানিক হোসেনকে পিটিয়ে পা ভেঙে দিয়েছে নকল দুধ ব্যবসায়ীদের ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসীরা। মঙ্গলবার (১৬ এপ্রিল) সকাল ৯টার দিকে উপজেলার পুঁইবিল গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। গুরুতর আহত অবস্থায় মানিককে পাবনা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
মারধরের সময় মানিকের মোটরসাইকেল ও মোবাইল কেড়ে নেয় সন্ত্রাসীরা। মানিক ভাঙ্গুড়া প্রেসক্লাবের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক।
বিজ্ঞাপন
অভিযোগে জানা যায়, ভাঙ্গুড়া উপজেলার দিলপাশার ইউনিয়নের চক লক্ষীকোল গ্রামের দুগ্ধ ব্যবসায়ী রাজীব আহমেদ এবং কৈডাঙ্গা গ্রামের আবুল বাশার দীর্ঘদিন ধরে নকল দুধ তৈরির করে বাজারজাত করে আসছেন। এ নিয়ে কিছুদিন আগে মানিক হোসেনসহ কয়েকজন সাংবাদিক নকল দুধ তৈরির ভিডিওধারণ করেন। এসব ভিডিও উপজেলা প্রশাসন ও থানা প্রশাসনকে দেখালে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার মতবিনিময় সভায় স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও সুশীল সমাজের বক্তারা এদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য প্রশাসনকে অনুরোধ করেন।
পরে এ নিয়ে বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হয়। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে রাজিব আহমেদ ও আবুল বাশারের নেতৃত্বে বায়েজিদ, রাজিব ও মাহাতাবসহ ১০-১২ জন ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসী মঙ্গলবার সকালে পুঁইবিল সড়কে মানিককে একা পেয়ে পিটিয়ে পা ভেঙে দেয়। পরে স্থানীয়রা উদ্ধার করে মানিককে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নিয়ে যায়। অবস্থা মুমূর্ষ হওয়ায় হাসপাতালের চিকিৎসকরা মানিককে পাবনা জেনারেল হাসপাতালে স্থানান্তর করেন।
আহত সাংবাদিক মানিক বলেন, সংবাদ প্রকাশের পর থেকেই নকল দুধ তৈরির ব্যবসায়ীরা বাড়িতে এসে কয়েকদিন ধরে হুমকি দিচ্ছে। এ অবস্থায় আমাকে পিটিয়ে পা ভেঙে দিয়েছে এবং সেই পেটানোর ভিডিও করেছে তারা। আমার মোটরসাইকেল ও মোবাইল কেড়ে নিয়েছে। আমি আমার পরিবারের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বিগ্ন।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক ইকরামুন নাহার শেলী বলেন, এক্সেরেতে দেখা যায় মানিকের পায়ের হার ডিসপ্লেস হয়ে গেছে। এর চিকিৎসা ভাঙ্গুড়ায় সম্ভব নয়। তাই পাবনা পাঠানো হয়েছে।
ভাঙ্গুড়া থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাজমুল হক বলেন, পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়েছিল। এ বিষয়ে মামলা রুজু হলে আসামিদের আটক করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এছাড়া নকল দুধ তৈরির বিষয়টি বর্তমানে খুবই আলোচিত। এ বিষয়েও আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
রাকিব হাসনাত/এমএএস