গাজীপুরের ১৫ মোড়ে গতি হারাচ্ছে দূরপাল্লার যান, ঈদযাত্রায় ভোগান্তি
গণপরিবহন সংকট, বাসের টিকিট না পাওয়াসহ পথের ভোগান্তি নিয়েই প্রিয়জনের সঙ্গে ঈদ করতে ছুটছে ঘরমুখো মানুষ। আসন্ন ঈদুল ফিতর উপলক্ষ্যে সোমবার দুপুরে ছুটি পেয়ে শিল্প অধ্যুষিত গাজীপুর থেকে লাখ লাখ গার্মেন্টস শ্রমিক নাড়ির টানে ঈদযাত্রায় শামিল হয়েছে। এতে গাজীপুরের ঢাকা-টাঙ্গাইল ও ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে ঈদে ঘরে ফেরা যাত্রীদের ঢল নেমেছে। এতে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের জয়দেবপুর চৌরাস্তা থেকে জৈনাবাজার এলাকার ১৫টি পয়েন্টে যাত্রী উঠানামা করানোয় গতি হারাচ্ছে। ফলে যানজট সৃষ্টি হয়েছে। যানজট নিরসনে পুলিশের উদ্যোগ কাজে আসছে না বলে জানিয়েছেন পরিবহন সংশ্লিষ্টরা।
ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের জয়দেবপুর চৌরাস্তা থেকে জৈনাবাজার পর্যন্ত প্রায় ৪০ কিলোমিটার এলাকায় ১৫টি পয়েন্টে যানজট সৃষ্টি হয়েছে। ঢাকা থেকে আব্দুল্লাহপুর হয়ে জয়দেবপুর চৌরাস্তা এলাকায় গাড়িগুলো পৌঁছে। এরপর সালনা, রাজন্দ্রেপুর, হোতাপাড়া, ভবানীপুর, মেম্বারবাড়ি, বাঘের বাজার, গড়গড়িয়া নতুন বাজার, গড়গড়িয়া মাস্টারবাড়ি, ১নং সিএন্ডবি বাজার, আনসার রোড, মাওনা চৌরাস্তা, অবদার মোড়, এমসি বাজার, নয়নপুর বাজার, জৈনাবাজার এলাকায় যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। যানজটের কারণ হিসেবে দুরপাল্লার যানবাহনের চালক ও সহকারীরা অটোরিকশা, স্বল্প দুরত্বে চলাচল করা মিনিবাস, মহাসড়কের মোড়ে মোড়ে যাত্রীর জন্য অপেক্ষমান বাস, সিএনজি, ট্রাক ও পিকআপকে দোষারোপ করছেন।
বিজ্ঞাপন
ময়মনসিংহগামী আলম এশিয়া পরিবহনের চালক দেলোয়ার হোসেন বলেন, ঢাকা থেকে গাড়ি নিয়ে বের হয়েই জয়দেবপুর চৌরাস্তা এসেছি। প্রায় এক ঘণ্টারও বেশি সময় লেগেছে মহাসড়কের ওই অংশ পার হতে। যত্রতত্র গাড়ি দাঁড় করিয়ে তোলা হচ্ছে যাত্রী। সড়কে কোনো শৃঙ্খলা নেই। সবকিছু নিয়মমাফিক চললে এমন অবস্থার সৃষ্টি হতো না।
নেত্রকোণাগামী হযরত শাহজালার পরিবহনের চালক আনোয়ার শেখ বলেন, আমরা রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকা যাত্রী তুলি না। এজন্য কোনো মোড়ে আমাদের দাঁড়ানোর দরকার হয় না। ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের রাজেন্দ্রপুর এলাকা পাড় হতে প্রায় ১৫ মিনিটের মতো সময় লেগেছে। রাজন্দ্রেপুর পার হয়ে হোতাপাড়া, ভবানীপুর, মেম্বার বাড়ি ও বাঘের বাজার পার হতে প্রায় ঘণ্টা খানেক সময় লেগেছে। সময় লাগার কারণ হিসেবে তিনি বলেন, মহাসড়কে ছোট ছোট পিকআপ, খোলা ট্রাক ও স্বল্প দুরত্বের যান দুরপাল্লার যাত্রী বহন করছে। তারা মহাসড়কের যত্রতত্র দাঁড়িয়ে যাত্রী তুলছে। মহাসড়কের ওপর দাঁড়িয়ে ভাড়া নির্ধারণ করে তারা যাত্রী তোলায় সময় যাচ্ছে আর এতেই গাড়ির গতি হারাচ্ছে। মহাসড়কের মোড়ে মোড়ে দাঁড়িয়ে থাকতে হচ্ছে, আর এতেই যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে।
ট্রাকে যাত্রী পরিবহন করছে ট্রাক চালক মমিনুল ইসলাম। তিনি বলেন, ভবানীপুর থেকে যাত্রী নিয়ে কয়েকটি জায়গার যানজট পেরিয়ে মাওনা ফ্লাইওভারে উঠেছি। মাওনা ফ্লাইওভার থেকে নেমেই আবদার মোড়ে দাঁড়িয়ে থাকা যাত্রী তুলছে গাড়িগুলো। এতে পেছনে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে, যানজটে ফ্লাইওভার ছাড়িয়ে বহুদুর পর্যন্ত ছাড়িয়েছে।
হাইওয়ে পুলিশের গাজীপুর রিজিওনের পুলিশ সুপার মো. মোস্তাফিজুর রহমান রহমান বলেন, আমরা এক-দেড় সপ্তাহ আগে পরিকল্পনা নিয়েছি মহাসড়কের ওপর যত্রতত্র কোনো গাড়ি দাঁড়িয়ে যাত্রী তুলতে পারবে না। এখন তার বাস্তবায়ন করছি। গাজীপুর চৌরাস্তা থেকে ময়মনসিংহ পর্যন্ত আমাদের হাইওয়ে পুলিশ বিভিন্ন জায়গায় পিকেট আকারে কাজ করছে, মোবাইল টিম হিসেবে কাজ করছে। এ ছাড়া বিভিন্ন জায়গায় রেকার মোতায়েন করা হয়েছে, এ্যাম্বুলেন্স আছে। সিসি টিভি ও ড্রোনের মাধ্যমে মনিটরিং করা হচ্ছে, যেখানেই অসঙ্গতি পাওয়া যাচ্ছে সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
শিহাব খান/এএএ