সাড়ে তিন বছরের শিশুর সঙ্গে এ কেমন নির্মমতা
বাগেরহাটের মোল্লাহাটে মুখমণ্ডলে পলিথিন দিয়ে সার্জিক্যাল টেপ পেঁচানো ও হাত-পা বাঁধা অবস্থায় সাড়ে তিন বছর বয়সী এক শিশুর মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। শনিবার (৬ এপ্রিল) দুপুরে উপজেলার চরকচুরিয়া গ্রামের দাউদের পানের বরজের পাশের একটি গর্ত থেকে মরদেহটির উদ্ধার করা হয়।
নিহত শিশুটির নাম আহসান বিশ্বাস। সে নড়াইলের কালিয়া উপজেলার নড়াগাতি থানার চরশুকতাইল গ্রামের কামরুজ্জামান বিশ্বাসের ছেলে। সে মায়ের সঙ্গে মোল্লাহাট উপজেলার চরকচুরিয়া গ্রামে নানা ফিরোজ আহমেদের বাড়িতে থাকত।
বিজ্ঞাপন
পুলিশের ধারণা- বলাৎকারের পরে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে শিশুটিকে। পরিবারের অভিযোগ, পরিকল্পিতভাবে তাকে হত্যা করা হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গতকাল শুক্রবার (৫ এপ্রিল) বিকেলে নানা বাড়ির প্রতিবেশীর বাড়িতে আম কুড়াতে গিয়ে নিখোঁজ হয় আহসান বিশ্বাস। এ ঘটনায় রাতে তার বাবা মোল্লাহাট থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন। রাতেই পুলিশ শিশুটিকে উদ্ধারে অভিযান শুরু করে। না পাওয়ায় সকালেও চলে অভিযান। অবশেষে শনিবার দুপুরের দিকে পানের বরজের মালিক দাউদ শিশুটিকে বরজের পাশে একটি গর্তের মধ্যে সুপারির পাতা দিয়ে ঢাকা দেখতে পান। নিহতের মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য বাগেরহাট জেলা হাসপাতালে পাঠিয়েছে পুলিশ।
জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধে পূর্ব শত্রুতার কারণে এ হত্যাকাণ্ড ঘটেছে বলে দাবি শিশুটির নানা ফিরোজ আহমেদের। তিনি বলেন, প্রতিবেশী দোলন শেখ, নুরুল ইসলাম শেখ, আবুল ও বাবুল পরিকল্পিতভাবে আমার নাতিকে হত্যা করেছে। তারা বিভিন্ন সময় আমাকে হুমকিও দিত। আমি এই হত্যাকারীদের বিচার চাই।
এদিকে একমাত্র ছেলে সন্তানকে হারিয়ে বার বার মূর্ছা যাচ্ছেন মা হুমায়রা বেগম। জ্ঞান ফিরলেই ছেলের হত্যাকারীদের ফাঁসি চেয়ে বিলাপ করছেন। স্বজনদের শত আশ্বাসেও শান্ত হচ্ছে না মায়ের মন।
শিশুটির মা হুমায়রা বেগম বলেন, আমার ছেলেকে যারা হত্যা করেছে, আমি তাদের ফাঁসি চাই। আর কিছু চাই না।
মোল্লাহাট থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এস এম আশরাফুল আলম বলেন, নিহতের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য বাগেরহাট জেলা হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে শিশুটিকে বলাৎকারের পর শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে। পারিবারিক ও সামাজিক অবক্ষয়ের কারণে এ হত্যাকাণ্ড ঘটতে পারে। হত্যার সঙ্গে জড়িতদের শনাক্ত ও গ্রেপ্তারে পুলিশ অভিযান শুরু করেছে। খুব দ্রুত অপরাধীদের আইনের আওতায় আনা হবে।
শেখ আবু তালেব/আরএআর