ভারত ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা জারি করায় বেনাপোল বন্দর দিয়ে সোমবার (২৬ এপ্রিল) সকাল থেকে দুই দেশের মধ্যে পাসপোর্টধারী যাত্রী চলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ রয়েছে। তবে বাণিজ্যের ক্ষেত্রে কোন বিধিনিষেধ না থাকায় দুই দেশের মধ্যে আমদানি-রফতানি বাণিজ্য সচল রয়েছে।

সোমবার (২৬ এপ্রিল) সকাল থেকে বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দরের মধ্যে পাসপোর্টধারী যাত্রী চলাচল করেনি। আগামী ১০ মে থেকে আবারো এ পথে যাত্রী চলাচল স্বাভাবিক হবে বলে জানা গেছে।

জানা গেছে, ভারত ভ্রমণকারীদের মাধ্যমে করোনা সংক্রমণ ও আক্রান্ত বাড়ছে। এমনকি ভারত ভ্রমণে অনেকে করোনা আক্রান্ত হয়ে জীবনও হারাচ্ছেন। মার্কিন স্বাস্থ্য সংস্থা সিডিসিও ভারত ভ্রমণে করোনা আক্রান্তের ঝুঁকির বিষয়ে সাম্প্রতিক সতর্ক করেছে। বিষয়টি মাথায় রেখে গত মাসের ২৯ মার্চ বাংলাদেশ সরকার সতর্কতা হিসেবে ১৮টি বিধিনিষেধ দিয়ে একটি প্রজ্ঞাপন জারি করে ইমিগ্রেশনসহ বিভিন্ন দফতরে চিঠি পাঠায়। 

এর মধ্যে একটি ধারা ছিল- যারা ভারত থেকে ফিরবেন অবশ্যই ব্যক্তিগত খরচে ১৪ দিন বেনাপোলে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনে থাকতে হবে। পরে সংক্রমণ ঝুঁকি মুক্ত হলে ফিরবেন বাড়িতে। কিন্তু এসব নির্দেশনা বাস্তবায়ন করেও করোনার প্রকোপ নিয়ন্ত্রণে আনা যাচ্ছিল না। অবশেষে বাধ্য হয়ে রোববার দুপুরে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে একটি জরুরি বৈঠকে ১৪ দিনের জন্য সীমান্ত পথে ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে যাত্রী যাতায়াত বন্ধে ইমিগ্রেশন কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা করে।

এদিকে সরকারের এ সিদ্ধান্তকে অনেকে সাধুবাদ জানিয়েছেন। আবার অনেকে মনে করছেন এ সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে দুই দিনের সময় বেধে দিলে ভাল হতো। হঠাৎ করে ইমিগ্রেশন বন্ধ কার্যক্রম ঘোষণার এ তথ্য জানতে না পারায় অনেক যাত্রী সকাল থেকে ভিড় করছেন বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল ইমিগ্রেশন অফিসের সামনে। এসব যাত্রীদের মধ্যে অধিকাংশ রয়েছে চিকিৎসা, বাণিজ্য ও শিক্ষার প্রয়োজনে যাতায়াতকারী। আটকে পড়া এসব যাত্রীদের অনেকের ভিসার মেয়াদ শেষের পথে হওয়ায় তারা পড়েছেন বিপাকে। 

বেনাপোল ইমিগ্রেশনের ভারপ্রাপ্ত কমকর্তা (ওসি) আহসান হাবিব জানান, ১৪ দিন ইমিগ্রেশন বন্ধের নির্দেশনাপত্র ইতোমধ্যে হাতে পেয়েছেন তিনি। সকাল থেকে যাত্রীদের পাসপোর্টের যে আনুষ্ঠানিকতা সেটি বন্ধ রাখা হয়েছে। তবে চিঠির তথ্য অনুযায়ী হাইকমিশনার কর্তৃক বিশেষ অনুমতিপত্র যদি কারো থাকে তার যাতায়াতে বাধা নেই। 

বেনাপোল স্থলবন্দরের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক আব্দুল জলিল জানান, সরকারের নিষেধাজ্ঞায় সকাল থেকে কোন যাত্রী ভারতে প্রবেশ করেনি। ভারত থেকেও কোন যাত্রী বাংলাদেশে আসেনি। তবে বাণিজ্যের ক্ষেত্রে কোন বিধি নিষেধ না থাকায় এ পথে দুই দেশের মধ্যে আমদানি-রফতানি ও বন্দর থেকে পণ্য খালাস সচল রয়েছে।

বেনাপোল ইমিগ্রেশন স্বাস্থ্য বিভাগের মেডিকেল অফিসার হাবিবুর রহমান জানান, গতকাল সর্বশেষ ভারত থেকে ৫৭০ জন বাংলাদেশি ফিরেছেন। এসব যাত্রীদের মধ্যে ৩ জন যাত্রী ছিলেন করোনা পজিটিভ। এরা ভারতে গিয়ে করোনা আক্রান্তের শিকার হয়। আক্রান্তদের যশোর সদর হাসপাতালের করোনা ইউনিটে আর করোনা নেগেটিভ সনদবিহীন ১১ জনকে বেনাপোল রজনীগন্ধা প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে।

এসপি