অবন্তিকার আত্মহত্যা
দুই সপ্তাহ পার হলেও জমা হয়নি জবির তদন্ত প্রতিবেদন
ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) আইন বিভাগের শিক্ষার্থী ফাইরুজ সাদাফ অবন্তিকার আত্মহত্যার ঘটনায় দুই সপ্তাহেও প্রতিবেদন জমা দিতে পারেনি বিশ্ববিদ্যালয় গঠিত করা তদন্ত কমিটি। দ্রুততম সময়ে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হলেও দুই সপ্তাহ পার হয়েছে। তবে ঠিক কবে নাগাদ প্রতিবেদন জমা দেওয়া হতে পারে তা নিশ্চিত নয় তদন্ত কমিটিও।
বুধবার (৩ এপ্রিল) তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. জাকির হোসেনের সাথে কথা বলে এ তথ্য জানা গেছে।
বিজ্ঞাপন
তদন্ত কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন- জবির সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো. আবুল হোসেন (সদস্য), জবির আইন অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. এসএম মাসুম বিল্লাহ (সদস্য), জবির সংগীত বিভাগের চেয়ারম্যান ড. ঝুমুর আহমেদ (সদস্য) এবং জবির আইন বিভাগের ডেপুটি রেজিস্ট্রার অ্যাডভোকেট রঞ্জন কুমার দাস (সদস্য সচিব) ।
এ কমিটি গঠন করার পর গত ২২ মার্চ কমিটির ৫ সদস্য জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের গাড়িতে করে কুমিল্লায় অবন্তিকাদের বাসায় যান। এ সময় অবন্তিকার মা তাহমিনা শবনমের সঙ্গে প্রায় আড়াই ঘণ্টা বৈঠক করেন তারা। বৈঠকে অবন্তিকার মায়ের কাছ থেকে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য নেন। পরে তারা কুমিল্লা কেন্দ্রীয় কারাগারে গিয়ে সহকারী প্রক্টর দ্বীন ইসলাম ও শিক্ষার্থী আম্মান সিদ্দিকীর সঙ্গেও কথা বলেন।
অপরদিকে এ ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তথ্য দিয়ে একটি নির্ভুল প্রতিবেদন জমা দিতে চায় তদন্ত কমিটি। এমনটিই জানিয়েছেন তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. জাকির হোসেন।
তিনি ঢাকা পোস্টকে বলেন, অবন্তিকার মোবাইলের কল লিস্ট, গ্যালারিতে থাকা স্ক্রিনশট, মেসেঞ্জার, হোয়াটসঅ্যাপ টেক্সটসহ সকল সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের কথোপকথনের বিষয়ে তথ্য চেয়ে পুলিশের কাছে চিঠি দেওয়া হয়েছে। পুলিশের কাছ থেকে এসব তথ্য পেলে আমাদের প্রতিবেদনটি জমা দিতে সুবিধা হবে।
কুমিল্লা কোতোয়ালি মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফিরোজ হোসেন ঢাকা পোস্টকে বলেন, এমন কোনো চিঠি আমরা এখনো পাইনি। চিঠি পেলে প্রয়োজনীয় সহায়তা করা হবে।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা কোতোয়ালি মডেল থানা পুলিশের পরিদর্শক (তদন্ত) শিবেন বিশ্বাস ঢাকা পোস্টকে বলেন, বাসা থেকে উদ্ধার করা অবন্তিকার মোবাইল ফোন আদালতের অনুমতিক্রমে ফরেনসিক ল্যাবে পাঠানো হবে। তবে ঈদের পর ছাড়া এসব প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা সম্ভব হবে না।
প্রসঙ্গত, গত ১৫ মার্চ রাতে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে সহকারী প্রক্টর দ্বীন ইসলাম ও আম্মান সিদ্দিকী নামে এক সহপাঠিকে দায়ী করে আত্মহত্যা করেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের শিক্ষার্থী ফাইরুজ সাদাফ অবন্তিকা। পরদিন ময়নাতদন্ত শেষে পারিবারিক কবরস্থানে তার মরদেহ দাফন করা হয়। নিহত অবন্তিকা কুমিল্লা সরকারি কলেজের সাবেক শিক্ষক মরহুম অধ্যাপক জামাল উদ্দিনের মেয়ে। এ ঘটনায় অবন্তিকার মা তাহমিনা শবনম বাদী হয়ে কোতোয়ালি মডেল থানায় আত্মহত্যার প্ররোচনার অভিযোগে মামলা করেন। অপরদিকে ঘটনার পরদিন ১৬ মার্চ জবি শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. জাকির হোসেনকে আহ্বায়ক করে ৫ সদস্য বিশিষ্ট একটি উচ্চমান তদন্ত কমিটি গঠন করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। কমিটিকে দ্রুততম সময়ের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়।
আরিফ আজগর/আরএআর