গাজীপুরের শ্রীপুরে অবহেলায় এক প্রসূতির মৃত্যুর ঘটনায় লাইফ কেয়ার হাসপাতালের কার্যক্রম বন্ধ করে দিয়েছেন সিভিল সার্জন। মঙ্গলবার (২ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে শ্রীপুর পৌর এলাকার মাওনা চৌরাস্তায় লাইফ কেয়ার হাসপাতালের কার্যক্রম পরিদর্শনে আসেন গাজীপুরের সিভিল সার্জন ডা. মাহমুদা আক্তার। পরিদর্শন শেষে তিনি হাসপাতালের কার্যক্রম বন্ধ রাখার নির্দেশ দেন।

এ সময় সিভিল সার্জন বলেন, লাইফ কেয়ার হাসপাতালের একজন সিস্টারের সঙ্গে কথা বলেছি। সে আসলে সিস্টার না, সে কোথাও পড়াশোনা করেনি। যিনি ব্লাড সংগ্রহ করেন তার কোনো ট্রেনিং নাই। রোগীর ফাইলে প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস পাওয়া যায়নি, প্রতিটি রোগীরই একই কেস। কোনো ওটি নোট লেখা নেই। শুধুমাত্র কনসার্ন পেপারে আছে, যাতে কোনো ডাক্তারের স্বাক্ষর নেই। যারা লিখছে তারা সেখানে কি লিখছে, সেটাও তারা বলতে পারছেন না। আমি কী বলবো। এটা তো অদক্ষতার মধ্যেও পড়ে না। এই রিলেটেড লোকই না তারা। আমি হাসপাতাল বন্ধ করে দিয়ে যাচ্ছি। এজন্য আমি এসেই ভর্তি রোগী কয়জন আছে তার খোঁজ খবর নিয়েছি। শনিবার এবং রোববার অপারেশন হওয়া তিনজন রোগী ভর্তি আছেন। আজকে রাতে না হলেও আগামীকালের মধ্যে তাদের ছুটি দিতে পারবে।

সিভিল সার্জন ডা. মাহমুদা আক্তার আরও বলেন, লাইফ কেয়ার হাসপাতালটি ১০ বেডের হাসপাতাল। ১০ বেডের হাসপাতালে কাগজপত্রসহ সব কিছুই থাকবে। ১০ বেডের হাসপাতালে যতজন ডাক্তার লাগে, যতজন সিস্টার লাগে, সেই ডাক্তার এবং সিস্টারসহ সব কাগজপত্র আমাদের কাছে নিয়ে যাবে, তারপর আবার এসে দেখব। দেখে সন্তুষ্ট হওয়া গেলে তারপর হাসপাতাল চালুর অনুমতি দেওয়া হতে পারে। আপাতত তিনজন রোগীর চিকিৎসা চলমান আছে, তাদের আজ রাতে অথবা আগামীকাল ছুটি হওয়ার কথা। তাদের ছুটি হয়ে গেলে এই হাসপাতাল নতুন করে আর কোনো চিকিৎসা কার্যক্রম চালাতে পারবে না।

এর আগে গত রোববার (৩০ মার্চ) রাতে শ্রীপুর উপজেলার মাওনা চৌরাস্তা এলাকার লাইফ কেয়ার হাসপাতালে নার্স দিয়ে অস্ত্রোপচারে করানোয় এক প্রসূতি মৃত্যুর অভিযোগ ওঠে। এর পরপরই চিকিৎসক, নার্স ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ পালিয়ে যান। রোগীর স্বজনেরা হাসপাতালে ভাঙচুর চালান। পরে উপজেলা প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। 

শিহাব খান/আরএআর