‘জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু’ না বলায় নীলফামারীর সৈয়দপুরের একটি কলেজের অধ্যক্ষের কক্ষে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। রোববার (২৪ মার্চ) সকালে সৈয়দপুর সরকারি কলেজ শাখা ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে অধ্যক্ষের কক্ষে তালা ঝুলিয়ে দেওয়া হয়। 

একই সময় কলেজটির অধ্যক্ষকে অপসারণের দাবিতে ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেন তারা। এ সময় অধ্যক্ষের কক্ষে তালা ঝোলানোর পর দরজায় হাতে লেখা পোস্টার সেঁটে দেয় ছাত্রলীগ। ওই পোস্টারে লেখা আছে, ‌‘জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু না বলায় অধ্যক্ষের কক্ষে তালা, চলছে লড়াই চলবে ছাত্রলীগ লড়বে’। ওই সমাবেশে সৈয়দপুর সরকারি কলেজ শাখার ছাত্রলীগের সভাপতি শাহ আলম রনির সভাপতিত্বে বক্তব্য দেন সাধারণ সম্পাদক আকাশ সরদার।

কলেজ ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের অভিযোগ, গত ৭ মার্চ জাতীয় দিবস পালন না করে অধ্যক্ষ একজন বিএনপির শিক্ষককে অনুষ্ঠান পালনের দায়িত্ব দিয়ে নিজে ছুটিতে ছিলেন। এরপর ওই শিক্ষক অনুষ্ঠানে ‘জয় বাংলা জয় বঙ্গবন্ধু’ না বলে অনুষ্ঠান শেষ করেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে ছাত্রলীগসহ সাধারণ শিক্ষার্থীরা। এ নিয়ে তারা কলেজ ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিলসহ অধ্যক্ষের অপসারণ দাবি করেন। এ নিয়ে গত ২০ মার্চ সুরাহার জন্য স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতারা কলেজ অধ্যক্ষের রুমে গেলে সেখানেও কোনো সুরাহা পাওয়া যায়নি। পর দিন ২১ মার্চ এ নিয়ে সৈয়দপুর সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ ড. আতিয়ার রহমান ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে ‘জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু’ না বলায় সৈয়দপুর প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে সৈয়দপুর উপজেলা, পৌর আওয়ামী লীগ, বঙ্গবন্ধু পরিষদ ও মুক্তিযোদ্ধা সংসদ।

সমাবেশে ছাত্রলীগ নেতা আকাশ সরদার তার বক্তব্যে বলেন, জয় বাংলা জাতীয় স্লোগান। সব সরকারি অনুষ্ঠানে এটা বলতেই হবে। অথচ সরকারি কলেজে সরকারি অধ্যক্ষ ও বিএনপিপন্থি শিক্ষকরা এটা না করে পুরো বাংলাদেশকে অবজ্ঞা করেছেন। আমরা এটা মেনে নিতে পারি না। জামায়াত-বিএনপির অ্যাজেন্ডা বাস্তবায়ন করতে দেওয়া হবে না। এর প্রতিবাদ করায় কলেজের একজন শিক্ষককে শোকজ করা হয়েছে। ওইদিন আমরাও অধ্যক্ষের অপসারণের দাবিতে আন্দোলন করে আসছি। আমাদের সঙ্গে কলেজের সাধারণ ছাত্ররাও রয়েছেন। কলেজ অধ্যক্ষ তিনি যদি নিঃশর্ত ক্ষমা ও সমাধানে না আসেন ততদিন অধ্যক্ষের রুমে তালা খোলা হবে না।

এ বিষয়ে সৈয়দপুর সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ ড. আতিয়ার রহমানের মোবাইলে একাধিকবার কল করলেও তিনি ধরেননি।

নীলফামারীর জেলা প্রশাসক পঙ্কজ ঘোষ ঢাকা পোস্টকে বলেন, ওই কলেজের একটা বিষয় নিয়ে অভিযোগ পেয়েছি। তবে অধ্যক্ষের কক্ষে তালা ঝোলানোর বিষয়টি জানি না। খোঁজ নিয়ে দেখব।

শরিফুল ইসলাম/এএএ