মুন্সীগঞ্জের গজারিয়া উপজেলায় টি কে গ্রুপের মালিকানাধীন সুপার বোর্ড কারখানার আগুন ছয় ঘণ্টায়ও নিয়ন্ত্রণে আনতে পারেনি ফায়ার সার্ভিস। রোববার (২৪) দুপুর সোয়া ১টার দিকে উপজেলার হোসেন্দী ইউনিয়নের জামালদি এলাকায় এ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। আগুন নিয়ন্ত্রণে ফায়ার সার্ভিসের ১২টি ইউনিট কাজ করছে। 

সন্ধ্যা সোয়া ৭টার দিকে ফায়ার সার্ভিসের কন্ট্রোল রুমে দায়িত্বরত ফায়ার ফাইটার আনিসুর রহমান ঢাকা পোস্টকে বলেন, গজারিয়ার সুপার বোর্ড কারখানার আগুন এখনো নিয়ন্ত্রণে আসেনি। আগুন নিয়ন্ত্রণে ফায়ার সার্ভিসের ১২টি ইউনিট কাজ করছে। 

গজারিয়া ফায়ার সার্ভিসের ইনচার্জ রিফাত মল্লিক বলেন, অগ্নিকাণ্ডের খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে ছুটে যাই। প্রথমে গজারিয়া ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের দুটি ইউনিট অগ্নি নির্বাপনে কাজ শুরু করি। পরে নারায়ণগঞ্জ ও ঢাকা থেকে আরও আটটি ইউনিট অগ্নিনির্বাপণে যোগ দেয়। ভেতরে দাহ্য পদার্থ থাকায় অগ্নিনির্বাপণে সমস্যা হচ্ছে। 

প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সকাল থেকে ওই কারখানা কাজ করছিলেন শ্রমিকরা। দুপুর সোয়া ১টার দিকে কারখানায় দাউ দাউ করে আগুন জ্বলতে দেখা যায়। কারখানার শ্রমিক ও স্থানীয়রা স্থানীয়ভাবে আগুন নেভানোর চেষ্টা করেন। তবে আগুনের তীব্রতা বেশি হওয়ায় ব্যর্থ হন তারা। কারখানার পাশেই নদীতে পাটখড়ি বোঝাই তিনটি ট্রলার অবস্থান করছিল। একপর্যায়ে কারখানার আগুনের ফুলকি বাতাসের মাধ্যমে ওই ট্রলারগুলোতে পড়লে মালামালসহ ট্রলারও আগুনে পুড়ে যায়। পরে ফায়ার সার্ভিসকে খবর দেওয়া হয়।

কারখানার শ্রমিক আবুল কাসেম বলেন, কারখানার ভেতরে প্রচুর পরিমাণে পাটখড়ির মজুত ছিল। রোববার আমরা যথারীতি কাজ করছিলাম। কারখানার এক পাশে সামান্য আগুনের ফুলকি দেখা যায়। সে সময় অগ্নিনির্বাপণ যন্ত্র দিয়ে আগুন নেভানোর চেষ্টা করি। পাটখড়িতে লাগা আগুন মুহূর্তেই সম্পূর্ণ কারখানায় ছড়িয়ে পড়তে থাকে। পরে ভেতরে আমরা যারা ছিলাম, তারা নিরাপদে বেরিয়ে আসি। 

আরেক শ্রমিক তরিকুল ইসলাম বলেন, আমাদের কারখানার পাশে একটি ওয়েল্ডিং করার প্রতিষ্ঠান রয়েছে। ওই প্রতিষ্ঠানের ওয়েল্ডিং করার সময় আগুনের ফুলকি আমাদের গোডাউনের পাটখড়িতে এসে পড়েছিল। সেখান থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়েছে বলে দাবি করেন তিনি। 

এদিকে কারখানার আগুন নেভাতে গিয়ে মাহিম (৩৫), শরিফুল ইসলাম (৩০) ও মো. হিরণসহ কারখানার ৫ শ্রমিক এবং স্থানীয় ৭ জন আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। আহতদের উদ্ধার করে স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।

গজারিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কোহিনুর আক্তার জানান, আগুন নিয়ন্ত্রণে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা কাজ করছেন। এখন আগুন কিছুটা সহনীয় পর্যায়ে এসেছে।

ব ম শামীম/আরএআর