জলদস্যুদের হাতে জিম্মি নাবিক তারেকুলের বাবা
‘মালিকপক্ষ যোগাযোগ করছে, বলেছে যেভাবে হোক উদ্ধার করা হবে’
ভারত মহাসাগরে সোমালিয়ান জলদস্যুদের হাতে জিম্মিদের একজন ফরিদপুরের তারেকুল ইসলামের গ্রামের বাড়িতে তার পরিবারকে সান্ত্বনা দিতে গিয়েছিলেন ফরিদপুর জেলা প্রশাসক মো. কামরুল আহসান তালুকদার।
মঙ্গলবার (১৯ মার্চ) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে মধুখালির রায়পুর ইউনিয়নের ছকরিকান্দি গ্রামের ওই বাড়িতে যান তিনি। সেখানে ৩৫ মিনিট অবস্থানের পর ওই বাড়ি ত্যাগ করেন জেলা প্রশাসক।
বিজ্ঞাপন
সাক্ষাৎকালে মো. কামরুল আহসান তালুকদার সরকারের নেওয়া বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা উল্লেখ করেন ও তারেকুলের পরিবারকে সান্ত্বনা দেন। জেলা প্রশাসককে কাছে পেয়ে পরিবারের সদস্যরা সন্তানকে ফিরে পেতে সরকারের সহায়তা কামনা করেন। একইসঙ্গে সরকার যেন ওই জাহাজের সবাইকে জীবিত উদ্ধার করে, সেই আর্জি জানান জিম্মি নাবিকের বাবা মো. দেলোয়ার হোসেন ও মা হাসিনা বেগম।
এসময় উপস্থিত ছিলেন মধুখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মামনুন আহমেদ অনিক, প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. সুদেব কুমার দাস, সমাজসেবা কর্মকর্তা কল্লোল সাহা, রায়পুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. জাকির হোসেন মিয়া, ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য ও স্থানীয় গণ্যমাণ্য ব্যক্তিরা।
আরও পড়ুন
তারেকুল জলদস্যুদের কবলে পড়া কেএসআরএম গ্রুপের এমভি আব্দুল্লাহ জাহাজের থার্ড ইঞ্জিনিয়র হিসেবে কর্মরত। জাহাজটি আফ্রিকার মোজাম্বিক থেকে ৫৫ হাজার টন কয়লা নিয়ে সংযুক্ত আরব আমিরাতে যাওয়ার পথে গত ১২ মার্চ সোমালিয়ার জলদস্যুদের কবলে পড়ে। তারেকুলসহ ওই জাহাজের ২৩ জন নাবিক বর্তমানে দস্যুদের হাতে জিম্মি হয়ে আছেন।
তারেকুলের বাবা মো. দেলোয়ার হোসেন মোবাইলে এ প্রতিবেদককে বলেন, জাহাজটি জলদস্যুদের কবলে যাওয়ার পর গত ১২ মার্চ ছেলের সঙ্গে হোয়াটস অ্যাপে একাধিকবার কথা হয়েছে। কিন্তু গত সাতদিন ধরে ছেলের সঙ্গে আর কোনো কথা হয়নি।
তিনি বলেন, তবে জাহাজ কোম্পানির পক্ষে ক্যাপ্টেন ইফতেখার প্রতিদিন বিকেলে ফোন করে আমাদের খোঁজ-খবর নেন। ক্যাপ্টেন ইফতেখার বলেন, আপনারা চিন্তা করবেন না। সরকার আমাদের সহায়তা করছে, আমরাও চেষ্টা করছি। জলদস্যুদের সঙ্গে এখনো আমরা যোগাযোগ করতে পারিনি। আপনাদের সন্তান আমাদের কাছে আমানত। জলদস্যুদের দাবি মোতাবেক যত টাকা লাগে আমরা তাদের অক্ষত উদ্ধার করব। আপনাদের কাছে চাওয়া আপনারা ভেঙে পড়বেন না। আমাদের পূর্ব অভিজ্ঞতা আছে এবং এসব ক্ষেত্রে এক মাস দুই মাস তিন মাস মুক্তিপণের স্বার্থে জলদস্যুরা তাদের খাবার সরবরাহ করে থাকে। একটু সময় লাগতে পারে, তবে বিচলিত হবে না। আল্লাহর কাছে দোয়া করুন।
জেলা প্রশাসক মো. কামরুল আহসান তালুকদার বলেন, সরকার, জাহাজের মালিকপক্ষ ও শিপিং অ্যাসোসিয়েশন সম্মিলিতভাবে চেষ্টা করছে জাহাজটি উদ্ধার করতে।
তিনি আরও বলেন, সরকার জিম্মিদের পাশে আছে এবং তাদের মুক্তির জন্য কাজ করে যাচ্ছে। এ কথা জানাতে ও আশ্বাস দিতেই আমি আজ এখানে এসেছি। তবে দস্যুদের সঙ্গে যোগাযোগ করা কিংবা চাহিদার কথা আমরা এখনো জানতে পারিনি।
জহির হোসেন/এসএসএইচ