প্রথমে ভেবেছিলাম— ট্রেনে আগুন লেগেছে
‘স্টেশনে বিরতি দেওয়া শেষে ঢাকার দিকে যেতেই বিকট শব্দ হয়ে ঝাঁকি দেয় ট্রেনটি। এসময় ঘুমঘুমভাব ছিল, কিছু না বুঝেই লাফ দিয়ে বগি থেকে প্লাটফর্মে নেমে পড়ি। আমার সঙ্গে আরো কয়েকজন ভয়ে নেমে পড়ে। তখন নামতে না পেরে একজন নারী ট্রেনেই অজ্ঞান হয়ে পড়ে।’
সোমবার (১৮ মার্চ) রাত সাড়ে ১০টার দিকে বঙ্গবন্ধু সেতুপূর্ব স্টেশনে দাঁড়িয়ে এভাবে দুর্ঘটনার সময়ের কথাগুলো বলছিলেন পঞ্চগড় এক্সপ্রেসের যাত্রী নওগাঁ থেকে আসা জাকির হোসেন।
বিজ্ঞাপন
তিনি বলেন, ট্রেনের ‘চ’ বগিতে ছিলাম। সেই বগিটিই দুর্ঘটনার কবলে পড়েছে। প্রথমে মনে হয়েছিল হয়ত আগুন লেগেছে ট্রেনে। ভয়ে সবাই দৌড়াদৌড়ি শুরু করে। নেমে দেখি টেনের চাকা পড়ে গেছে লাইন থেকে। এখন এত রাতে কীভাবে ঢাকায় পৌঁছাব, সেই টেনশনে আছি।
আরেক যাত্রী রনি বলেন, সকালে ঢাকায় কারারক্ষী চাকরির জন্য মাঠ পরীক্ষা রয়েছে। এখন কীভাবে সেখানে যোগদান করব? এতো রাতে বাসও কোথায় পাব? সারারাত স্টেশনেই কাটাতে হবে। আর এখনও উদ্ধার কার্যক্রম শুরু হয়নি।
সরেজমিনে দেখা গেছে, ঢাকাগামী পঞ্চগড় এক্সপ্রেস ট্রেনটি বঙ্গবন্ধু সেতুপূর্ব যাত্রা বিরতি শেষে যাওয়ার সময় ট্রেনের ‘চ’ বগি লাইনচ্যুত হয়। এতে ওই বগির চারটি চাকা লাইন থেকে পড়ে যায়। এতে রেললাইনও ক্ষতিগ্রস্ত হয়। দুর্ঘটনার পর যাত্রীদের চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।
এই রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত ট্রেনের বগি উদ্ধারকাজ শুরু করেনি রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ।
ট্রেন দুর্ঘটনার ফলে উত্তরবঙ্গগামী চিত্রা এক্সপ্রেস, দ্রুতযান এক্সপ্রেস, পদ্মা এক্সপ্রেস, লালমনিরহাট এক্সপ্রেস, চিলাহাটি ও কুড়িগ্রাম এক্সপ্রেস ট্রেন বিভিন্ন স্টেশনে আটকা পড়েছে।
বঙ্গবন্ধু সেতুপূর্ব স্টেশন মাস্টার খায়রুল ইসলাম বলেন, রাত ১০টার দিকে স্টেশনেই ট্রেনটি দুর্ঘটনার কবলে পড়ে। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। ঢাকা থেকে রিলিফ ট্রেন রওনা হয়েছে। কখন নাগাদ ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হবে, এটা এখনই বলা যাচ্ছে না।
এমজে