গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার মৌচাক তেলির চালা এলাকায় গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণে অন্তত ২৮ দগ্ধ হয়েছেন। বুধবার (১৩ মার্চ) ইফতারের আগ মুহূর্তে সন্ধ্যা পৌনে ৬টার দিকে স্থানীয় শফিক খানের বাড়িতে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

গাজীপুর ফায়ার সার্ভিসের উপ-সহকারী পরিচালক আব্দুল্লাহ্ আল আরেফিন জানান, সংবাদ পাওয়ার পরপরই ঘটনাস্থলে ফায়ার সার্ভিসের টিম যায়। সেখানে গিয়ে দগ্ধ কাউকে পাওয়া যায়নি। ফায়ার সার্ভিস যাওয়ার আগেই দগ্ধদের চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। আমরা দগ্ধদের সংখ্যা সংগ্রহ করছি।

 এখণ পর্যন্ত মোট কতজন দগ্ধ হয়েছেন জানতে  চাইলে তিনি বলেন, ১৫ জনের দগ্ধ হওয়ার কথা নিশ্চিত হয়েছি। 

রাত ৮টা ১০ মিনিটে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পুলিশ ক্যাম্পে যোগাযোগ করা হলে কর্তব্যরত কর্মকর্তা জানান, বুধবার সন্ধ্যায় গাজীপুরে সিলিন্ডার বিস্ফোরণের ঘটনায় এখন পর্যন্ত দগ্ধ ২৮ জনকে পর্যায়ক্রমে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে নিয়ে আসা হয়েছে। তাদের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। 

স্থানীয়রা জানিয়েছেন, এ ঘটনায় মো. মাইদুল ইসলাম, মো. কুটি, মো. আরিফুল, মো. ইয়াসিন, মো. সোলেমান, মো. আকাশ, নূর নবী, মো. নিরব, মোছাম্মৎ শিল্পী, মো. নাঈম, মাহবুব, মশিউর ও মোতালেবসহ আরও অনেকেই আহত হয়েছেন। দগ্ধদের মধ্যে একই পরিবারের পাঁচজন রয়েছেন বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন।

ঘটনাস্থলে উপস্থিত একাধিক ব্যক্তি জানান, কালিয়াকৈর উপজেলার মৌচাক তেলির চালা এলাকায় শফিক খানের বাড়িটি স্থানীয় কয়েকটি কারখানার শ্রমিকদের কাছে ভাড়া দেওয়া হয়েছে। ওই বাড়ির নির্দিষ্ট রান্নাঘরে শ্রমিকরা রান্না করছিলেন। বুধবার ইফতারের আগ মুহূর্তে সন্ধ্যা পৌনে ৬টার দিকে একটি পরিবারের গ্যাস সিলিন্ডারের গ্যাস ফুরিয়ে গেলে নতুন আরেকটি সিলিন্ডারে সংযোগ দেওয়ার সময় নতুন সিলিন্ডারে আগুন ধরে যায়। এ অবস্থায় সিলিন্ডারটি রাস্তায় ফেলে দেওয়া হয়। আর এতে রাস্তায় থাকা লোকজনও দগ্ধ হয়। যেহেতু এটা শ্রমিক কলোনি, তাই এই অঞ্চলটি খুবই জনবহুল। ইফতারের আগে মাটির চুলায় রাস্তার ওপর রান্না করছিলেন কেউ কেউ। রাস্তায় বিস্ফোরিত গ্যাস সিলিন্ডার ফেলার কারণে তাদেরকে অনেকেই দগ্ধ হয়েছেন।

কোনাবাড়ী মডার্ন ফায়ার সার্ভিসের টিম লিডার মো. আশরাফ জানান, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে এসে কাউকে পাইনি। দগ্ধদের উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে পাঠানো হয়েছে।

তিনি বলেন, প্রথমে গ্যাস সিলিন্ডার থেকে আগুনে সূত্রপাত হয়। এ ঘটনায়  তথ্য সংগ্রহ করছি। পরবর্তীতে বিস্তারিত জানানো হবে।

কোনাবাড়ী ক্লিনিক অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারের ব্যবস্থাপক মো. রফিকুল ইসলাম জানান, ইফতারের আগে তিনজন দগ্ধ রোগী এসেছিল তাদেরকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

কোনাবাড়ী পপুলার হসপিটালের দায়িত্বরত কর্মকুর্তা মো. জাহিদ জানান, সিলিন্ডারের আগুনে দগ্ধ ১০ জনের অধিক রোগী এসেছিলেন। তাদের সবার শরীরের ৭০ শতাংশ পুড়ে গেছে। পরে তাদের গেট থেকেই অ্যাম্বুলেন্স যোগে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

শিহাব খান/আরএআর