ভুট্টাক্ষেতে কাঁদছিল নবজাতক, উদ্ধার করল এলাকাবাসী
সিরাজগঞ্জের তাড়াশে ভুট্টাক্ষেত থেকে এক নবজাতককে উদ্ধার করেছে এলাকাবাসী। পরে ওই নবজাতককে তাড়াশ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে চেকআপের পর নবজাতককে উপজেলা নির্বাহী কর্তকর্তার নির্দেশে উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তার কার্যালয়ে নেওয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার (১২ মার্চ) সকাল ৮টার দিকে উপজেলার মাগুড়া বিনোদ ইউনিয়নের চড়হামকুড়িয়া গ্রামের পূর্ব পাশের ভুট্টাক্ষেত থেকে নবজাতকটিকে উদ্ধার করা হয়।
বিজ্ঞাপন
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার মাগুড়া বিনোদ ইউনিয়নের চড়হামকুড়িয়া গ্রামের মো. শামীম রেজার স্ত্রী মোছা. লাবনী খাতুন সকালে ছেলেকে নিয়ে বোরো ধানের জমি দেখতে যান। এ সময় ওই বোরো ধানের জমির পাশে ভুট্টাক্ষেতের ভেতর তার ছেলে বাচ্চার কান্নার শব্দ শুনতে পায়। কান্নার শব্দ শুনে তার মাকে বললে ভুট্টাক্ষেতের ভেতর গিয়ে নবজাতককে দেখতে পানু লাবনী খাতুন। পরে লাবনী খাতুন বাড়িতে ফিরে এসে তার স্বামীকে বিষয়টি জানালে তার স্বামী শামীম রেজাসহ এলাকার লোকজন ভুট্টাক্ষেত থেকে ওই মেয়ে নবজাতককে উদ্ধার করে তাড়াশ ৫০ শয্যা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করে। বিষয়টি তাড়াশ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে জানালে তিনি শিশুটিকে উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তার কার্যালয়ের তত্ত্বাবধানে পাঠান।
লাবনী খাতুন বলেন, আমি সকালে ছেলেকে নিয়ে বোরো ধানের জমি দেখতে গেলে ভুট্টাক্ষেত থেকে ওই মেয়ে বাচ্চাটি দেখেতে পেয়ে বাড়িতে নিয়ে আসি। পরে স্থানীয় লোকজনের সহযোগিতায় বাচ্চাকে তাড়াশ হাসপাতালে নিয়ে যাই।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মো. মনোয়ার হোসেন বলেন, বাচ্চাটি হাসপাতালে আনার পর তার শারীরিক অবস্থা পরীক্ষা করা হয়। বাচ্চার শারীরিক আবস্থা ভালো আছে, সুস্থ্য আছে।
উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা একেএম মনিরুজ্জামান বলেন, নবজাতক পাওয়ার খবরটি জানার পর নবজাতককে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে পাঠানো হয়। বর্তমানে বাচ্চাটি সুস্থ্য আছে। ইউএনও মহোদয়ের কাছে বাচ্চাটি দত্তক নেওয়ার জন্য অনেকে আবেদন করেছে। মিটিং করে এ বিষয় সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
এ ব্যাপারে তাড়াশ থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. নজরুল ইসলাম বলেন, থানা প্রশাসনের মাধ্যমে শিশুটিকে রাজশাহী সোনা মনি নিবাসে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
এ ব্যাপারে তাড়াশ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সুইচিং মং মারমা ঢাকা পোস্টকে বলেন, বাচ্চাটি দত্তক নেওয়ার জন্য অনেকেই আবেদন করেছেন। জেলা প্রশাসকের নির্দেশ মোতাবেক বাচ্চাটিকে রাজশাহী সোনা মনি নিবাসে পাঠানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে। আজকের মধ্যেই কাগজপত্র সম্পন্ন করে তাকে রাজশাহী পাঠানো হবে।
শুভ কুমার ঘোষ/আরএআর