ঝালকাঠির সদর উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা (টিইও) খোন্দকার জসিম আহমদের দুর্নীতি-অনিয়ম ও বরিশাল শহরে ১০তলা ভবন নির্মাণের বিষয়ে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। 

বুধবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) জেলার প্রাথমিক শিক্ষা অফিসে তদন্ত কার্যক্রম শুরু করা হবে।

প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক (উপবৃত্তি) মো. কবির উদ্দিনকে তদন্ত কমিটির প্রধান করা হয়েছে। তিনি নিজে উপস্থিত থেকে খোন্দকার জসিম আহমদের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্টদের সাক্ষ্য-প্রমাণ নেবেন। ইতোমধ্যে অভিযোগকারী ও সংশ্লিষ্টদের উপস্থিত থাকার জন্য চিঠি দেওয়া হয়েছে।

চিঠি সূত্রে জানা গেছে, গত ১৮ ডিসেম্বর বিভিন্ন পত্রিকায় খোন্দকার জসিম আহমদের নানা অনিয়ম এবং বরিশাল শহরে করিম কুটির এলাকায় ১০তলা ভবনের নির্মাণাধীন ছয়তলা বাড়ির বিষয়ে সংবাদ প্রকাশিত হয়। পরে বরিশাল জর্ডন রোডের বাসিন্দা সাংবাদিক বায়েজিদ আহমদ প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। এসব অভিযোগ তদন্ত করার জন্য সহকারী পরিচালক মো. কবির উদ্দিনকে দায়িত্ব দেয় প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর।

জানা গেছে, ২০২১ সালের এপ্রিল মাসে খোন্দকার জসিম আহমদ উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা হিসেবে ঝালকাঠিতে যোগদানের পর শিক্ষকদের কাছ থেকে নানা অজুহাতে টাকা আদায় করা শুরু করেন। অনলাইন শিক্ষক বদলিতে অনিয়ম, ক্ষুদ্র মেরামতের বরাদ্দ হওয়া স্কুল প্রতি টাকা আদায়, শিক্ষকদের পাসপোর্ট করার অনুমতিতে টাকা নেওয়াসহ নানা অভিযোগে ১৫ জন প্রাথমিক শিক্ষক খোন্দকার জসিম আহমদের বিরুদ্ধে ২০২২ সালের ডিসেম্বর মাসে মহাপরিচালক বরাবর অভিযোগ দায়ের করেছিলেন।

এরপর ২০২৩ সালের ৫ মার্চ এ অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত করেন ঢাকা অফিসের সহকারী পরিচালক (অর্থ) মো. নুরুল ইসলাম। অভিযোগকারী শিক্ষকরা জসিম আহমদের বিরুদ্ধে সাক্ষ্যও দেন। কিন্তু কোনো এক অজানা কারণে গত এক বছরেও তদন্ত রিপোর্ট প্রকাশ করা হয়নি।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ঝালকাঠির একাধিক প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক জানান, খোন্দকার জসিম আহমেদ ঝালকাঠিতে যোগদান করেছেন প্রায় তিন বছর হয়েছে। ২০২৬ সালে তার অবসর যাওয়ার কথা। তিনি সবসময় দাম্ভিকতার সঙ্গে বলেন, যত অনিয়মই করি, আমাকে ২০২৬ সালের আগে কেউ ঝালকাঠি থেকে সরাতে পারবে না। উপর থেকে এ চুক্তি করেই এসেছি।

অন্যদিকে অভিযোগকারী সাংবাদিক বায়েজিদ আহম্মদ বলেন, নানা ধরনের চাপ উপেক্ষা করে আমি সাক্ষ্য দিতে যাব। সত্য ঘটনা তথ্য প্রমাণসহ তদন্ত কর্মকর্তার কাছে তুলে ধরব।

সব অভিযোগ স্বীকার করে অভিযুক্ত খোন্দকার জসিম আহমদ বলেন, আমার বিরুদ্ধে আনা সব অভিযোগ ভিত্তিহীন। আমি বৈধভাবেই বাড়ি করেছি। সব কাগজপত্র আমি তদন্ত কর্মকর্তার কাছে তুলে ধরব।

মো. নাঈম/পিএইচ