পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার লতাচাপলী ইউনিয়নে মম্বিপাড়া ও পৌরগোজা গ্রামের মাঝ দিয়ে বড়হরপাড়া খালের ওপর নির্মিত আয়রন ব্রিজটি ভেঙে একটি ট্রাক খালের ভেতর পড়ে গেছে। তবে কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। 

রোববার (২৫ ফেব্রুয়ারি) বেলা ১২টার দিকে মালবাহী একটি ট্রাক পার হওয়ার সময় ব্রিজটি ভেঙে যায়। এতে ভোগান্তিতে পড়েছে কুয়াকাটায় আগত পর্যটকসহ স্থানীয় পাঁচ গ্রামের মানুষ।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ২০০৫ সালে সেতুটি নির্মাণ করা হয়েছে। পুরনো এই ব্রিজ নড়বড়ে হয়ে পড়েছে প্রায় দুই বছর আগে। তবুও সংস্কার করা হয়নি। গত বছর হঠাৎ একদিন ব্রিজটি কিছু অংশ ভেঙে পড়ে। এই ব্রিজ দিয়ে প্রতিদিন লতাচাপলী ইউনিয়নের মম্বিপাড়া, নতুন বাজার, বড়য়ারপাড়া, পৈরঘোজা এবং স্কুল কলেজের ছাত্র-ছাত্রীসহ ৫ থেকে ৭ গ্রামের মানুষ চলাচল করে। কুয়াকাটায় অগত পর্যটকরা মিশ্রিপারা বৌদ্ধ মন্দির দেখতে যাওয়ার একমাত্র সহজ পথ ছিল এটি। ৮০ ফুট দৈর্ঘ্য ও ১০ ফুট চওড়া ব্রিজের সম্পূর্ণ অংশ ভেঙে খালে পড়ে আছে। এ নিয়ে গুরুত্ব নেই সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের। 

এ সময় প্রত্যক্ষদর্শী রুস্তম হাওলাদার বলেন, ট্রাকটি যখন ব্রিজের ওপরে উঠছিল তখন আমি তাদেরকে নিষেধ করেছি। কিন্তু তারা আমার কোনো কথা শোনেনি। তখন আমিও ব্রিজের ওপরেই ছিলাম। ট্রাকটি মাঝামাঝি আসতেই পুরো ব্রিজটি ভেঙে খালের মধ্যে পড়ে যায়। আমিও খালের মধ্যে পড়ে যাই। পরে সাতরে কিনারে উঠি।

স্থানীয় যুবক শাহাদাত হোসেন বলেন, এই ব্রিজটি দুই বছর ধরে খুবই ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় থাকলেও কোনো জনপ্রতিনিধির এ নিয়ে মাথা ব্যাথা নেই। এমনকি ব্রিজের এক মাথা আগেই ভেঙে গেছে সেখানে কাঠ দিয়ে জোড়া দেওয়া ছিল। এতদিন কোনোভাবে চলাচল করতে পারলেও এখন আমাদের চলাফেরা একেবারেই বন্ধ হয়ে গেছে। আমাদের দাবি খুব দ্রুত যেন এখানে ব্রিজ তৈরি করে দেওয়া হয়।

স্থানীয় পর্যটন ব্যবসায়ী জনি আলমগীর বলেন, কুয়াকাটায় আগত পর্যটকরা মিষ্টি পাড়া বৌদ্ধ বিহার, মিশ্রিপাড়া রাখাইন তাৎপল্লী, গঙ্গামতি লাল কাকড়ার চরসহ বিভিন্ন দর্শনীয় স্থানে যাওয়ার সহজ পথ ছিল এই ব্রিজটি। এখন এই পথটি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় স্থানীয়সহ  পর্যটকরা ভোগান্তিতে পড়েছেন।

কলাপাড়া উপজেলা এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ সাদিকুর রহমান বলেন, এটা নিয়ে আমরা এক বছর যাবৎ কাজ করছি। ইতোমধ্যে এটা নিয়ে হেড অফিসে একটি প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে, আমরা সেই অপেক্ষায় রয়েছি। তবে প্রাথমিকভাবে চলাচল স্বাভাবিক করায় সার্বিক সহযোগিতায় জন্য আমি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে ব্যবস্থা নেব।

এ বিষয়ে কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, ইতোমধ্যে বিষয়টি সম্পর্কে আমরা অবগত হয়েছি এবং পরিদর্শনের জন্য সেখানে একটি টিম পাঠানো হয়েছে। যেহেতু ব্রিজটি ভেঙে গেছে ঠিক করতে সময় লাগবে। তবে সংশ্লিষ্ট দপ্তরের সঙ্গে আমি কথা বলে ব্যবস্থা নিচ্ছি। 

এসএম আলমাস/আরকে