সাম্প্রতিক সময়ে কুয়াকাটায় সবচেয়ে বেশি পর্যটক হচ্ছে বিভিন্ন স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা, ক্লাব, সেচ্ছাসেবী সংগঠন, রাজনৈতিক সংগঠন, বিভিন্ন এনজিওসহ শত শত বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের। শিক্ষা সফরে কুয়াকাটায় বেড়াতে আসা যেন অনেকেরই পছন্দের তালিকায় শীর্ষে। কিন্তু কুয়াকাটার বাস টার্মিনাল এবং বিভিন্ন পার্কিংয়ে সর্বোচ্চ পার্কিং ধারণক্ষমতা রয়েছে চার-পাঁচ শ গাড়ির। ধারণক্ষমতার বেশি গাড়ি কুয়াকাটায় আসায় রাস্তায় দীর্ঘ যানজট তৈরি হয়েছে।

শুক্রবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) সাপ্তাহিক ছুটিতে কানায় কানায় পূর্ণ কুয়াকাটার সকল দর্শনীয় স্থান। বাস টার্মিনাল এবং অস্থায়ী পার্কিংগুলোতে পার্কিং করার পরেও শত শত বাস ও প্রাইভেটকার পার্কিং করা হয়েছে মহাসড়ক ও বেড়িবাঁধের ওপরে। কুয়াকাটা জিরো পয়েন্ট চৌরাস্তা থেকে দুদিকে প্রায় চার কিলোমিটার এলোপাতাড়ি পার্কিং করা হয়েছে। আর তাতেই যেন ভোগান্তির কোনো শেষ নেই পর্যটক ও স্থানীয়দের।  

বাগেরহাট থেকে পরিবার নিয়ে বেড়াতে আসা পর্যটক আবু তাহের বলেন, হোটেল থেকে শিশুদের নিয়ে প্রায় দুই কিলোমিটার হেঁটে সৈকতে নেমেছি। রাস্তার দুইপাশে এমনভাবে গাড়িগুলো পার্কিং করে রেখেছে, রিকশা নিয়ে যাওয়ার মতো কোনো পরিস্থিতি নেই। তাই কষ্ট করে হেঁটেই সৈকতে এসেছি। কুয়াকাটায় পার্কিং সুবিধা বাড়ানো দরকার। অন্যথায় পর্যটক এবং স্থানীয়রা সবাই চরম ভোগান্তির শিকার হবে। 

ব্যাটারিচালিত অটোচালক সাজ্জাদ হোসেন বলেন, বিভিন্ন ছুটির দিনে এতবেশি গাড়ি রাস্তার দুপাশে পার্কিং করে রাখা হয় যে আমাদের গাড়ি নিয়ে রাস্তায় উঠতে পারি না। এভাবে যদি বাস, প্রাইভেটকার রাস্তায় পার্কিং করা হয় তাহলে আমরা গাড়ি চালাব কীভাবে?

কুয়াকাটার স্থানীয় মৎস্য ব্যবসায়ী মিরাজ শিকদার বলেন, কুয়াকাটা মহাসড়কের তিন থেকে চার কিলোমিটার রাস্তা জুড়ে এলোপাথাড়িভাবে বাস মাইক্রোবাসগুলো পার্কিং করা হয়েছে। রাস্তার পাশে এভাবে গাড়ি রাখার কারণে আমাদের মাছের গাড়ি বের করতে পারছি না। পর্যটকদের গাড়ির জন্য আলাদা পার্কিং ব্যবস্থা করা উচিত।

এ বিষয়ে কুয়াকাটা পৌর মেয়র মো. আনোয়ার হাওলাদার বলেন, যে পরিমাণ পর্যটক কুয়াকাটায় আসে সে পরিমাণ পার্কিং সুবিধা আমাদের কুয়াকাটার বাস টার্মিনালের নেই। তবুও বাড়তি সুবিধা দেওয়ার জন্য আমরা অস্থায়ী কিছু পার্কিং স্থান তৈরি করেছি। তাতেও আমরা সামাল দিতে পারছি না। তবে সামনের দিকে পার্কিং সুবিধা বাড়ানোর চেষ্টা করব।

কুয়াকাটা টুরিস্ট পুলিশ রিজিয়নের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আবুল কালাম আজাদ বলেন, কুয়াকাটায় ধারণক্ষমতার বেশি গাড়ি প্রবেশ করায় পার্কিং সুবিধা দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে পৌর প্রশাসনকে। আর সেজন্যই মূলত রাস্তায় গাড়িগুলো পার্কিং করেছে তারা। সামনের দিকে পার্কিং সুবিধা বাড়ানোর প্রস্তাব দিয়েছি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে।

এসএম আলমাস/এএএ