ঝালকাঠির রাজাপুর সরকারি কলেজে পরীক্ষার্থীদের কাছ থেকে ৭০০ করে টাকা নেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। ২০২৪ সালে ডিগ্রি পরীক্ষার প্রবেশপত্র বিতরণে পরীক্ষাকেন্দ্রে খরচের নামে অবৈধ চাঁদা আদায় করা হচ্ছে বলে দাবি শিক্ষার্থীদের।

শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, কেন্দ্রীয় পরীক্ষার ফরম পূরণের সময় কলেজের প্রত্যেক শিক্ষার্থীর কাছ থেকে ৩৫০০ করে টাকা নেওয়া হয়েছে। আবার পরীক্ষার প্রবেশপত্র দেওয়ার সময় নেওয়া হয় ৭০০ টাকা করে। বোর্ডের কোনো নির্ধারিত ফি না থাকার পরেও কলেজ কর্তৃপক্ষ শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ৭০০ টাকা করে নিচ্ছে। এতে বিপাকে পড়েছে অনেক পরীক্ষার্থী। টাকা না থাকায় প্রবেশপত্র নিতে পারছে না বলেও অভিযোগ করেছে কয়েকজন পরীক্ষার্থী।

জানা যায়, আগামী বৃহস্পতিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) ডিগ্রি পরীক্ষা শুরু হচ্ছে। এরই মধ্যে গতকাল রোববার থেকে কলেজ কর্তৃপক্ষ ডিগ্রি পরীক্ষার প্রবেশপত্র বিতরণ শুরু করে। কলেজে গিয়ে প্রবেশপত্র চাইলে তাদের কাছে ৭০০ টাকা চায় কলেজ কর্তৃপক্ষ। তাদের কাছে থাকা ৫০০ টাকা দিলে কর্তৃপক্ষ তাদের ৭০০ টাকার নিচে দিলে হবে না বলে ফিরিয়ে দেয়। তবে কলেজ নোটিশ বোর্ডে লেখা ৪৫০ টাকা করে দিতে হবে। এরপরে কলেজ অধ্যক্ষর কাছে গেলেও তিনি জানান ৭০০ টাকার কমে হবে না। কলেজের অফিস সহকারী মো. চুন্নু প্রত্যেক শিক্ষার্থীকে ৭০০ টাকা করে নিয়ে রসিদ ছাড়া খাতায় লিখে প্রবেশপত্র দিচ্ছে। প্রবেশপত্র সংগ্রহ করছে পরীক্ষার্থীরা। এমন অভিযোগ একাধিক শিক্ষার্থীর। 

বিনামূল্যে পরীক্ষার্থীদের প্রবেশপত্র দেওয়ার নিয়ম রয়েছে। কিন্তু ঝালকাঠি জেলার রাজাপুর সরকারি কলেজে পরীক্ষার্থীর কাছ থেকে ৭০০ টাকা করে ফি নেওয়া হচ্ছে। তবে কলেজ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, কেন্দ্র পরিচালনার জন্য তাদের খরচ বহন করতে হয়। এ জন্য প্রবেশপত্র নিতে পরীক্ষার্থীদের কাছ থেকে সামান্য কিছু টাকা নেওয়া হয়।

অভিভাবকরা জানান, কলেজ কর্তৃপক্ষ শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ফরম পূরণের সময় অতিরিক্ত টাকা নিয়েছে। এখন আবার প্রবেশপত্রের জন্য টাকা নিচ্ছে। সব অভিভাবকদের তো এক রকম আয় নেই। অনেকেই দুমুঠো ভাত খেয়ে কোনরকম জীবনযাপন করে তারপর আবার ছেলে-মেয়েদের লেখা পড়ার জন্য কত খরচ করতে হয়। এরপরে এভাবে অভিভাবকদের ওপর বাড়তি চাপ দিচ্ছে কলেজ কর্তৃপক্ষ।

এ বিষয়ে রাজাপুর সরকারি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আব্দুর রাজ্জাক বলেন, এটি পরীক্ষা কেন্দ্র খরচের জন্য নেওয়া হচ্ছে। তবে কেউ অসচ্ছল হলে বা অনুরোধ করলে তাদের কাছ থেকে কমিয়ে নেওয়া হচ্ছে। এই চাঁদা গোপনভাবে নেওয়া হচ্ছে না। সবাই জানে এতে বেআইনি কিছু নেই। পরীক্ষা কেন্দ্রে ইউএনও এবং প্রশাসনের লোক আসবে তারপর শিক্ষকরা থাকবে তাদের সবাইকে নাস্তা-পানি খাওয়াতে হবে। এরপর অনেক পরীক্ষা রমজান মাসে হবে তখন শিক্ষকদের ইফতারি খাওয়াতে হবে এতো খরচ পাব কোথায়? তাই পরীক্ষার্থীদের থেকে টাকা নেওয়া হচ্ছে।

সরকারি কলেজে পরীক্ষা কেন্দ্রে সরকারের বরাদ্দ থাকে এরপর আবার কেন্দ্র খরচের জন্য পরীক্ষার্থীরা কীসের টাকা দিবে এমন প্রশ্নের কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি অধ্যক্ষ।

রাজাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও)  ফারহানা ইয়াসমিন বলেন, এ বিষয়ে আমি কিছু জানি না। তবে শিক্ষার্থীদের থেকে কেন নাস্তার খরচ নেবে। উপজেলা প্রশাসন তো নাস্তা খাওয়ার জন্য কেন্দ্রে যায় না। কেউ যদি অভিযোগ করে অবশ্যই আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তারপরও কলেজের অধ্যক্ষর সঙ্গে কথা বলে বিষয়টি দেখব।।

মো. নাঈম/আরকে