মেডিকেলে প্রথম হওয়া সর্বা
‘মা-বাবা আমার সবচেয়ে বড় অনুপ্রেরণা’
কিশোরগঞ্জের কটিয়াদী উপজেলার তানজিম মুনতাকা সর্বা ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষে মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষায় প্রথম স্থান অধিকার করেছেন। ফলাফল প্রকাশের পর থেকেই তার মা-বাবার মুখে তৃপ্তির হাসি শোভা পাচ্ছে।
সোমবার (১২ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে দেশসেরা শিক্ষার্থীর মা চায়না বেগম বলেন, নিজেদের মা-বাবা হিসেবে সফল মনে হচ্ছে। পরিশ্রম করলে সফলতা আসবেই। আল্লাহর রহমতে আমাদের পরিশ্রম আপনাদের দোয়া আল্লাহ কবুল করেছেন।
বিজ্ঞাপন
তিনি বলেন, গতকাল রোববার দুপুরে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সভাকক্ষে পরীক্ষার ফল ঘোষণা করেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী অধ্যাপক ডা. সামন্ত লাল সেন। এরপর থেকেই আত্মীয় স্বজনসহ গণমাধ্যমকর্মীরা ফোন দিয়ে অভিনন্দন জানাচ্ছে। এ যেন এক পরম পাওয়া। আমার মেয়ে মানুষের কল্যাণে কাজ করবে এটাই আমাদের বড় সফলতা।
জানা গেছে, তানজিম মুনতাকা সর্বা ১০০ নম্বরের ১ ঘণ্টার এমসিকিউ পরীক্ষায় অংশ নিয়ে ৯২.৫ নম্বর পেয়ে দেশসেরা হয়েছেন। তিনি ভিকারুন্নেসা নুন স্কুল অ্যান্ড কলেজের বসুন্ধরা শাখা থেকে এসএসসি ও রাজধানীর হলিক্রস কলেজ থেকে এইচএসসি পরীক্ষা দিয়েছেন।
সারাদেশের মধ্যে মেডিকেলে প্রথম হওয়ায় উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে তানজিম মুনতাকা সর্বা বলেন, প্রথমেই আল্লাহর কাছে শুকরিয়া জানাই। আমার মা-বাবা ও শিক্ষকদের পরিশ্রম ও দোয়ায় আজকে এই সফলতা অর্জন করতে পেরেছি। আমার আত্মীয়-স্বজনের মধ্যে আমি প্রথম ডাক্তার হতে যাচ্ছি। আমার ছোট থেকেই ডাক্তার হতে চাওয়ার একটি বড় স্বপ্ন ছিল।
এছাড়া আমার শিক্ষকরা সবসময় অনুপ্রেরণা দিয়েছেন ডাক্তার হওয়ার জন্য। তাদের পরামর্শেই ডাক্তার হওয়ার স্বপ্নকে বাস্তবে রুপান্তর করার চেষ্টা করেছি। ব্যক্তিগত জীবনে মা-বাবা আমার সবচেয়ে বড় অনুপ্রেরণা। সব বিষয়েই আমি তাদের সাপোর্ট পেয়েছি। মেডিকেলে ভর্তির প্রস্তুতির সময় যখন হতাশায় থাকতাম, তখন বাবা-মা এমনভাবে আত্মবিশ্বাস দিতেন যে সব ঠিক হয়ে যেত। তাই বলতে পারি আম্মু-আব্বুর সহযোগিতাই আমাকে মেডিকেলে ভর্তি পরীক্ষায় প্রথম হওয়া সুযোগ তৈরি করে দিয়েছে।
তানজিমের বাবা আব্দুর রহমান (সবুজ) বলেন, আমি একটি কোম্পানির অ্যাডভাইজার হিসেবে কর্মরত আছি। আমি সিভিল ইঞ্জিনিয়ার। পরিবার নিয়ে রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় বসবাস করি। সর্বা ঢাকায় বড় হয়েছে। আমাদের মেয়ের এমন সাফল্যে আমরা খুবই উচ্ছ্বসিত। সবাই আমার মেয়ের জন্য দোয়া করবেন। সে যেন একজন মানবিক ডাক্তার হতে পারেন।
তানজিম মুনতাকা সর্বার চাচা কটিয়াদী পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর আলী হোসেন বলেন, এই সংবাদটি শোনার পর থেকেই আমার মধ্যে অন্যরকম এক শান্তি অনুভব হচ্ছে। আমার ভাতিজি তানজিম সর্বা ঢাকায় বড় হয়েছে। গতকাল তার এই সাফল্যের সংবাদটি প্রকাশ হওয়ার পর থেকেইে এলাকায় খুশির বন্যা বইছে। সে কটিয়াদী ও কিশোরগঞ্জের মুখ উজ্জ্বল করেছে। সে আমাদের গর্ব।
তানজিম মুনতাকা সর্বা কিশোরগঞ্জের কটিয়াদী পৌরসভার বেথইর গ্রামের ইঞ্জিনিয়ার আব্দুর রহমান (সবুজ) ও গৃহিনী চায়না বেগমের বড় কন্যা। ২ বোন ও ১ ভাইয়ের মধ্যে তিনি সবার বড়। তানজিমের এমন সাফল্যে পরিবার ও এলাকার স্বজনদের মাঝে আনন্দঘন পরিবেশ বিরাজ করছে।
এনামুল হক হৃদয়/আরকে