মিয়ানমার থেকে আবারও মর্টারশেল এসে পড়ল বাংলাদেশে
বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়িতে আবারও মিয়ানমার থেকে ছোড়া মর্টারশেল এসে পড়েছে। এ নিয়ে ঘুমধুম ইউনিয়নে আতঙ্ক বিরাজ করছে।মঙ্গলবার (৬ ফেব্রুয়ারি) সকাল ৮টায় মিয়ানমার থেকে ছোঁড়া মর্টারশেল এসে পড়ে ঘুমধুম ইউনিয়নের মধ্যমপাড়া বীর মুক্তিযোদ্ধা নুরুল ইসলামের বাড়ির পাশে।
এসময় ছৈয়দ নুর সিকদারের বাড়ির জানালার কিছু অংশ ফেটে গেছে। তবে এতে কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি বলে জানিয়েছেন ইউপি সদস্য দিল মোহাম্মদ ভুট্টো।
বিজ্ঞাপন
এছাড়া গতকাল সোমবার দুপর আড়াইটার দিকে উপজেলার ঘুমধুম ইউনিয়নের জলপাইতলী গ্রামে মিয়ানমার থেকে ছোড়া মর্টারশেলের আঘাতে হোসনে আরা (৪৫) নামে এক বাংলাদেশি নারী এবং নবী হোসেন নামে এক রোহিঙ্গা (৬৫) নিহত হন।
এদিকে মঙ্গলবার সকাল ৬টা থেকে ১০টা পর্যন্ত ঘুমধুমের মধ্যমপাড়া এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, গ্রামে কয়েকজন পুরুষ ছাড়া কেউ নেই। নারী-শিশুরা গ্রাম ছেড়ে অন্যত্র অবস্থান নিয়েছে। সবার মধ্যে আতঙ্ক কাজ করছে। প্রতিদিনের মতো আজও কোনো মানুষ কাজকর্মে বের হয়নি।
স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ওপারে মিয়ানমারের ঢেঁকুবুনিয়া সীমান্ত চৌকি দখলকে কেন্দ্র করে বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরকান আর্মি (এএ) ও মিয়ানমার সীমান্তরক্ষী বাহিনী বর্ডার গার্ড পুলিশের (বিজিপি) মধ্যে ব্যাপক গোলাগুলি ও মর্টারশেল নিক্ষেপ হচ্ছে। এতে কেঁপে কেঁপে উঠছে বাংলাদেশের সীমান্ত এলাকার অন্তত ৮টি গ্রাম।
বেতবুনিয়া এলাকার বাসিন্দা এনামুল হক বলেন, এখন যতটুকু ভয় পাচ্ছে মানুষ, স্বাধীনতা যুদ্ধের সময়ও এত ভয় পাইনি। শুনেছি সোমবার দিবাগত রাতে সংঘর্ষ চলাকালে মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর অন্তত আরও ৭ জন সদস্যকে পালিয়ে বাংলাদেশে ঢুকতে দেখা গেছে।
এদিকে মিয়ানমারের বর্ডার গার্ড পুলিশের (বিজিপি) কয়েকটি ক্যাম্প দখলে নিয়েছে বলে দাবি করেছে বিদ্রোহী আরকান আর্মির সদস্যরা। তাদের ধারণ করা একটি ভিডিওতে দেখা যায় বিজিপি ক্যাম্প দখলের পর সেখান থেকে অস্ত্র ও গোলাবারুদ গাড়িতে তুলছেন তারা।
এদিকে মিয়ানমারের অভ্যন্তরে বিদ্রোহীদের সঙ্গে চলমান সংঘর্ষের জেরে এখন পর্যন্ত দেশটির সীমান্তরক্ষী বাহিনী বর্ডার গার্ড পুলিশের (বিজিপি) ১১৪ জন সদস্য অস্ত্রসহ বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছেন। বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. শরীফুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, নতুন করে যারা প্রবেশ করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) তাদেরকে নিরস্ত্রীকরণ করে নিরাপদ আশ্রয়ে নিয়েছে। মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত আশ্রয় নেওয়া বিজিপির সদস্য সংখ্যা ছিল ১১৩। পরে আরও দুজনকে রিসিভ করলে সে সংখ্যা হয় ১১৫। এরপর বিজিপির সদস্যসহ বিভিন্ন বাহিনীর আরও ১১৪ জন প্রবেশ করেন।
আরকে