হবিগঞ্জে বিবিয়ানা গ্যাসফিল্ডের কম্পনে দেড় শতাধিক ঘরে ফাটল
হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলায় বিবিয়ানা গ্যাসফিল্ড এলাকায় অতিরিক্ত কম্পনে প্রায় দেড় শতাধিক ঘরে ফাটল ধরেছে। এ ঘটনার পর পেট্রো বাংলা কর্তৃক তদন্ত কমিটি সরেজমিনে বিবিয়ানা গ্যাসফিল্ড পরিদর্শন করেছেন।
রোববার (৪ ফেব্রুয়ারি) সকালে বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের তেল, গ্যাস ও খনিজ সম্পদ কর্পোরেশন ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড প্রোডাকশন বিভাগের পরিচালক আলতাফ হোসেন স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে তদন্ত কমিটির কথা উল্লেখ করা হয়।
বিজ্ঞাপন
সিলেট গ্যাসফিল্ড লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. মিজানুর রহমান কমিটির আহ্বায়ক ও পেট্রোবাংলার মহাব্যবস্থাপক (ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড প্রোডাকশন) মো. সালাহ উদ্দিনকে সদস্য সচিব এবং বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম এক্সপ্লোরেশন অ্যান্ড প্রোডাকশন কোম্পানি লিমিটেডের ভূতাত্ত্বিক বিভাগের মহাব্যবস্থাপক মো. আলমগীর হোসেনকে সদস্য করে এ তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। বিকেল ৪টার দিকে তদন্ত কমিটি সরেজমিনে বিবিয়ানা গ্যাসফিল্ড পরিদর্শন করেন।
এসময় বিবিয়ানা গ্যাসফিল্ডের কার্যক্রম সাময়িক বন্ধ ও ক্ষতিপূরণের দাবিতে আবারও গ্যাসক্ষেত্র ঘেরাও করে বিক্ষোভ করেছে এলাকাবাসী। স্থানীয়রা সুষ্ঠু তদন্ত ও ঘরবাড়িতে ফাটল দেখা দেওয়ার ঘটনায় শেভরণের কাছে ক্ষতিপূরণ দাবি করেন। অন্যথায় কঠোর কর্মসূচির হুঁশিয়ারিও দেওয়া হয়।
অপর দিকে রোববার সন্ধ্যায় জাতীয় সংসদের প্রথম অধিবেশনে হবিগঞ্জ-১ আসনের সংসদ সদস্য আমাতুল কিবরিয়া চৌধুরী কেয়া বিবিয়ানা গ্যাসফিল্ডের আশপাশের এলাকায় কম্পন, এলাকাবাসীর বাড়িঘরের ফাটলের কারণ সঠিকভাবে নির্ণয় ও ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার দাবি জানান।
শেভরন বাংলাদেশের মুখপাত্র শেখ জাহিদুর রহমান ই-মেইল এ এক ক্ষুদেবার্তায় বলেন, বিবিয়ানা গ্যাসফিল্ডের আশপাশের এলাকায় কম্পন ঘটনায় বর্তমানে শেভরন বাংলাদেশের কাছে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে বিবিয়ানা গ্যাস প্ল্যান্টের অপারেশনের মধ্যে কোনো সম্পর্ক রয়েছে বলে সনাক্ত করতে পারিনি। আমাদের প্রাথমিক ফোকাস হলো স্থানীয় মানুষের নিরাপত্তা, আমাদের সম্পদের সুরক্ষা এবং পরিবেশ সংরক্ষণ করা।
উল্লেখ্য, বিবিয়ানা গ্যাসফিল্ড যুক্তরাষ্ট্রের কোম্পানি শেভরনের অর্থায়নে পরিচালিত হচ্ছে। গত বৃহস্পতিবার থেকে শনিবার পর্যন্ত গ্যাসফিল্ডে বিকট শব্দ ও অতিরিক্ত কম্পন হয়। এতে ফাটল ধরে আশপাশের ১৫-২০ গ্রামের দেড় শতাধিক বাড়িঘর। এলাকাবাসী বিষয়টি বার বার কর্তৃপক্ষকে জানালেও কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
পরবর্তী সময়ে শনিবার রাতে ক্ষুব্ধ হয়ে আশেপাশের প্রায় ২০ গ্রামের কয়েক শতাধিক মানুষ বিবিয়ানা গ্যাসফিল্ড ঘেরাও করে বিবিয়ানা গ্যাসফিল্ডের কার্যক্রম বন্ধ করার দাবিতে বিক্ষোভ করে।
খবর পেয়ে স্থানীয় সংসদ সদস্য আমাতুল কিবরিয়া চৌধুরী কেয়া, নবীগঞ্জ থানার পুলিশ, স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান সহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তি ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি শান্ত করেন। এরপরে আবারও মধ্যরাতে একাধিকবার কম্পন হলে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে এলাকাবাসীদের মধ্যে। পরে রোববার আন্দোলনে নামেন স্থানীয়রা।
আরকে