জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) কৌশলে স্বামীর মাধ্যমে ডেকে নিয়ে ওই গৃহবধূকে দলবদ্ধভাবে ধর্ষণ করা হয় বলে জানিয়েছে পুলিশ। রোববার (৪ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে আশুলিয়া থানায় সংবাদ সম্মেলনে ঢাকা জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অবস) মো. আব্দুল্লাহিল কাফি এ তথ্য জানান।

সংবাদ সম্মেলনে তিনি জানান, ভুক্তভোগী গৃহবধূ (১৯) ও তার স্বামী (২৪) আশুলিয়ায় একটি ভাড়া বাসায় বসবাস করতেন। ভুক্তভোগী গৃহবধূর ভাড়া বাসার পাশের কক্ষেই অভিযুক্ত মামুনুর রশিদ মামুন (৪৪) ভাড়া থাকতেন। শনিবার রাতে মামুন ওই গৃহবধূর স্বামীকে ফোন করে জানান তার থাকার জায়গার সমস্যা। তিনি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে মীর মোশাররফ হলে তার পরিচিত মোস্তাফিজুর নামে এক ছাত্রের কাছে কিছু দিন থাকবেন। এ সময় মামুন তাকে দেখা করতে বলেন। তিনি শনিবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে মীর মোশাররফ হলের ৩১৭ কক্ষে গিয়ে মামুনের সঙ্গে দেখা করেন। পরে তার সঙ্গে মোস্তাফিজুর রহমান ও মুরাদের সাথে পরিচয় করিয়ে দেন মামুন। এ সময় কৌশলে মামুন তার কাপড়চোপড় আনার জন্য ওই গৃহবধূকে ফোন করতে বলেন। তার কথা মতো ওই গৃহবধূর স্বামী স্ত্রীকে ফোন করেন। 

স্ত্রীকে মামুনের কাপড়চোপড় নিয়ে বিশ্ববিদ্যালের মীর মোশাররফ হলের সামনে চায়ের দোকানে আসতে বলেন স্বামী। সেই কথা মতো ওই গৃহবধূ আসলে তার স্বামীর সঙ্গে চায়ের দোকানে দেখা হয়। এ সময় চায়ের দোকানে উপস্থিত মোস্তাফিজুর, মামুন ও মুরাদের সঙ্গে দেখা হয় তাদের। পরে স্বামীকে নিয়ে অভিযুক্ত মুরাদ কাপড়চোপড় রাখার জন্য হলে যান। এরপর তার স্বামীকে সেখানে মারধর করে বেঁধে রাখেন। তার ঘণ্টাখানেক পর তারা আবার ফিরে এসে ওই গৃহবধূর স্বামীকে ছেড়ে দেন। পরে তার স্বামী হল থেকে নিচে এসে ফোন করলে তার স্ত্রীর সঙ্গে দেখা হয় এবং ধর্ষণের ঘটনা জানতে পারেন। মোস্তাফিজুর ও মামুন ওই গৃহবধূকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বোটানিক্যাল গার্ডেনের ২ নম্বর গেটের উত্তর দিকে অন্তত ৫০ গজ ভেতরে বাগানের মধ্যে নিয়ে ধর্ষণ করেন। পরে বিষয়টি আশুলিয়া থানায় জানানো হয়। 

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অবস) মো. আব্দুল্লাহিল কাফি জানান, এ ঘটনায় জড়িত জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের ছাত্র ও বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান (২৮), একই বিভাগের ছাত্র সাগর সিদ্দিক (২৬) ও হাসানুজ্জামান (২৬) এবং উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী সাব্বির হাসানকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এছাড়াও দুইজন পলাতক আসামি বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের শিক্ষার্থী মুরাদ (২২) ও ভুক্তভোগী স্বামীর পূর্বপরিচিত (বহিরাগত) মামুনুর রশিদ মামুনকে গ্রেপ্তারের জন্য অভিযান অব্যাহত রয়েছে। 

সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সাভার সার্কেল) শাহিদুল ইসলাম, আশুলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এএফএম সায়েদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

আরএআর