কিশোর গ্যাং গ্রুপের সন্ত্রাসীদের দাবি করা চাঁদা না দেওয়ার কারণে মিলন হোসেনকে (২৭) হত্যা করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে কুষ্টিয়া জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সহসভাপতি এসকে সজিবসহ ৫ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সজিব কিশোর গ্যাং বিএসবি গ্রুপের প্রধান।

এর আগে শনিবার (৩ জানুয়ারি) সকালে উপজেলার হরিপুর চর থেকে পুলিশ মিলন হোসেনের ১০ টুকরো করা মরদেহ উদ্ধার করে। তিনি গত বুধবার থেকে নিখোঁজ ছিলেন।

এ বিষয়ে কুষ্টিয়া মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সোহেল রানা ঢাকা পোস্টকে বলেন, ১০ টুকরো করা মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। মিলন অনলাইনে কাজ করতেন। অভিযুক্তরা তার কাছে চাঁদা দাবি করেছিল। চাঁদা না দেওয়ার কারণেই তারা হত্যা করা হয়েছে। বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

মিলনের ৮ টুকরো মরদেহ দেখে কান্নায় ভেঙে পড়েন স্বজনরা

গ্রেপ্তার হওয়া সজিব শৃঙ্খলা পরিপন্থি কার্যকলাপে জড়িত থাকার কারণে ২০২২ সালের ১ জানুয়ারি কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ থেকে বহিষ্কার করা হয়। বর্তমানে তিনি স্বেচ্ছাসেবক লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। তিনি কুষ্টিয়া আড়ুয়াপাড়ার এক সময়ের মাদক ব্যবসায়ী মিলন শেখ ওরফে ডাল মিলনের ছেলে।

নিহত মিলন হোসেন কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার পূর্ব বাহির মাদি এলাকার মাওলা বক্সের ছেলে। তিনি আউট সোর্সিংয়ের কাজ করতেন। গত ১০ মাস আগে বিয়ে করেন। স্ত্রীকে নিয়ে কুষ্টিয়া শহরের হাউজিং এলাকায় ভাড়া বাড়িতে থাকতেন। 

মিলনের স্ত্রী মিমি খাতুন ঢাকা পোস্টকে বলেন, সন্ত্রাসীদের চাঁদা না দেওয়ার কারণে আমার স্বামীকে ১০ টুকরো করে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়েছে। গত বুধবার হাউজিং এলাকার সজল নামের একজন আমার স্বামীর মোবাইলে কল করে ডেকে নিয়ে যান। তার সঙ্গে দেখা করে বাসায় এসে বুধবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে আবার বের হয়ে যান। এরপর থেকে তাকে আর খুঁজে পাওয়া যায়নি। এরপর ওইদিনই আমি কুষ্টিয়া মডেল থানায় জিডি করি। পরেরদিন দুপুর পর্যন্ত আমার স্বামীর মোবাইল নম্বর খোলা ছিল। বিষয়টি পুলিশকে জানালেও তারা গুরুত্ব দেয়নি। তখন পদক্ষেপ নিলে আমার স্বামীকে জীবিত উদ্ধার করতে পারত। আজ সকালে খবর পেয়ে মর্গে এসেছি। এ হত্যার সঙ্গে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।

রাজু আহমেদ/এএএ