কোল্ড ইনজুরিতে নষ্ট হচ্ছে কৃষকের পান
শৈত্যপ্রবাহ ও ঘন কুয়াশার কারণে কৃষকের পানের বরজে কোল্ড ইনজুরিসহ শীতজনিত বিভিন্ন রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে। ফলে পানপাতা লালচে, হলুদবর্ণ ছাড়াও শুকিয়ে মারা যাচ্ছে। এ অবস্থায় রাজশাহীর মোহনপুর উপজেলায় পানের বরজগুলোতে। মোহনপুর ছাড়াও জেলার বাগমারা, দুর্গাপুর ও পুঠিয়ায় পানের চাষ হয়। এসব এলাকার পানের বরজগুলোতেও একই চিত্র দেখা গেছে।
জানা গেছে, রাজশাহীর মোহনপুর উপজেলায় এবছর পান চাষ হয়েছে ১ হাজার ৩১৭ হেক্টর জমিতে। অর্থকরী এই ফসলটি কেনাবেচায় স্থানীয়ভাবে গড়ে উঠেছে হাট-বাজার। ফলে চাষিদের পান কেনাবেচায় দূরের কোথাও যেতে হয় না। একই চিত্র বাগমারা, দুর্গাপুর ও পুঠিয়াতেও। এই উপজেলাগুলোতে পান বিক্রির ব্যবস্থা ভালো হওয়ায় চাষিদের মধ্যে পান চাষের আগ্রহ রয়েছে।
বিজ্ঞাপন
সরেজমিনে মোহনপুর উপজেলার বিভিন্ন এলাকার পানের বরজগুলো ঘুরে দেখা গেছে, শৈত্যপ্রবাহ ও ঘন কুয়াশার কারণে পানপাতায় কোল্ড ইনজুরি দেখা দিয়েছে। একইসঙ্গে কোনো কোনো পানের বরজে কোল্ড ইনজুরিতে গোড়া পচন রোগ দেখা দিয়েছে। ফলে পানপাতা লালচে, হলুদবর্ণ ধারণ করছে। আবার কিছু কিছু পানের পাতা শুকিয়ে যাচ্ছে।
চাষিরা জানান, প্রথম পান লালচে ও হলুদবর্ণের হয়ে যাচ্ছে। এরপরে পাতার নিচের অংশে শুকাতে শুরু করছে। একপর্যায়ে পুরো পানপাতা শুকিয়ে ঝড়ে যাচ্ছে। এতে করে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন তারা। তারা বলছেন, বছরের এই সময়ে তুলনামূলক পানের দাম বেশি থাকে। তাই তাদের লোকসানটাও বেশি হচ্ছে।
কেশরহাট পৌরসভার হরিদাগাছি গ্রামের কৃষক আতাউর রহমান পলাশ বলেন, শীতজনিত কারণে প্রায় দুই সপ্তাহ ধরে বরজের পান ঝরে পড়ছে। তবে রোদ উঠলে ঝরছে কম। তার প্রায় ১০ কাঠা জমিতে পানের বরজ রয়েছে। এই শীতে তার পানে কোল্ড ইনজুরি হওয়ায় প্রায় ১০ হাজার টাকার পান নষ্ট হয়েছে। পান পাতার সুরক্ষায় তিনি পলিথিন ব্যবহার করছেন।
উপজেলার সইপাড়া গ্রামের লুৎফর রহমান নামে এক কৃষক জানান, তার ১ বিঘা জমিতে পানের বরজ রয়েছে। প্রতিবছর শীতের মৌসুমে ঠান্ডা বাতাসে পানপাতা ঝরে পড়ে। একইসঙ্গে পানের কাণ্ডের অংশ শুকিয়ে নষ্ট হয়ে যায়। তবে বেশি পানের পাতার নিচের অংশ থেকে শুকিয়ে যাচ্ছে। পানের বরজে কীটনাশক ব্যবহার করা হলেও পান ঝরেপড়া বন্ধ হয়নি। এরপরও হেক্সোকোনাজল, রিডোমিল গোল্ড, কনফিডর জাতীয় কীটনাশক (ওষুধ) স্প্রে করা হচ্ছে।
কেশরহাটের কীটনাশক দোকানি কোবাদ আলী বলেন, ঠান্ডায় পান ঝরেপড়া বন্ধের জন্য সঠিকভাবে কোনো কীটনাশক কাজে আসে না। তবে কৃষকরা রিপকর্ড কনফিডর, সালকক্স, চিলেটেড জিংক ও রুট শক্তি এই জাতীয় কীটনাশক ব্যবহার করে থাকেন।
এ বিষয়ে মোহনপুর উপজেলা কৃষি অফিসার মোসা. মোস্তাকিমা খাতুন বলেন, কোল্ড ইনজুরি থেকে রক্ষার জন্য চাষিদের পলিথিন ব্যবহারের কথা বলা হচ্ছে। এছাড়া কীটনাশক ব্যবহারের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।
শাহিনুল আশিক/পিএইচ