ফরিদপুর সদর উপজেলার ডিক্রির চর ইউনিয়নে পদ্মা নদীর পাড়ে শিশু, তরুণ-তরুণীসহ সব বয়সী নারী-পুরুষের ঢল নেমেছিল। আকাশে উড়েছে রং-বেরঙের ঘুড়ি। দেখে মনে হয়েছে যেন শত শত বিচিত্র রকমের পাখি উড়ছে। আর সন্ধ্যার পর উড়েছে ফানুস।

শুক্রবার (২৬ জানুয়ারি) ফরিদপুর শহর থেকে তিন কিলোমিটার দূরে ধলার মোড়ে পদ্মা নদীর পাড়ে আবহমান বাংলার ঐতিহ্য ঘুড়ি উৎসবের আয়োজন করা হয়। ‘চলো হারাই শৈশবে’ প্রতিপাদ্য নিয়ে টিম ফরিদপুর সিটি ও পেপারটেক এই ঘুড়ি উৎসবের আয়োজন করে।

বিকেলে উদ্বোধন করেন ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক মো. কামরুল আহসান তালুকদার। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ফরিদপুরের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মোর্শেদ আলম।

আয়োজকরা জানান, ঘুড়ি উৎসবের পাশাপাশি ঘুড়ি বিক্রির ব্যবস্থাও ছিল। বিকেল ও সন্ধ্যায় সহস্রাধিক ঘুড়ি বিক্রি হয়েছে। এসব ঘুড়ি বিকেলে ওড়ানো হয়। আর সন্ধ্যায় ওড়ানো হয় ফানুস।

ফরিদপুর টাইমস ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থী মাদারীপুরের বাসিন্দা বৃষ্টি সরকার মিষ্টি ঢাকা পোস্টকে বলেন, ঘুড়ি উৎসব উপলক্ষ্যে যেমন ভিড় প্রত্যাশা করেছিলাম তার চেয়েও বেশি মানুষ হয়েছে। হাজার হাজার মানুষের সমাগম। ঘুড়ি ও ফানুস উড়ানোর দৃশ্য আসলে ভুলার মতো নয়। যদিও ভিড়, অটোরিকশায় ভাড়া বেশি নেওয়া, জায়গা না পাওয়ার মতো বিড়ম্বনা ছিল তবুও এমন সুন্দর উৎসবের জন্য এতটুকু বিড়ম্বনা কোনো অভিযোগ ছাড়াই সহ্য করা যায়।

ফরিদপুর শহরের পূর্ব খাবাসপুর মহল্লার বাসিন্দা ও সরকারি রাজেন্দ্র কলেজের গণিত বিভাগের স্নাতক প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী সুমাইয়া ইসলাম মিথীলা ঢাকা পোস্টকে বলেন, ধলার মোড় ফরিদপুরের অন্যতম সেরা ঘুরার জায়গা। শহরে বসবাস করলেও গত করোনার পর আর ধলার মোড়ে যাওয়া হয়ে উঠেনি। এবার ঘুরি উড়ানো দেখতে বান্ধবীদের নিয়ে এলাম। এমন একটা উৎসবের জন্য আমরা সারা বছর উদগ্রীব হয়ে থাকি।

সরকারি রাজেন্দ্র কলেজের ফিন্যান্স ও ব্যাংকিং বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র শাওন সরকার জয় বলেন, ঘুড়ি উৎসব এখন ফরিদপুরের প্রাণের উৎসব হয়ে গেছে। এখন আমাদের এটাতে না এলে ভালো লাগে না। প্রতি বছর ৩০ অথবা ৩১ ডিসেম্বর এটা হয়ে থাকে। তবে এবার নির্বাচনের কারণে পিছিয়ে আজ অনুষ্ঠিত হলো।

ফরিদপুর সিটির অ্যাডমিন এমদাদুল হাসান ঢাকা পোস্টকে বলেন, ঘুড়ি ও ফানুস উৎসবের পাশাপাশি র‍্যাফেল ড্র অনুষ্ঠিত হয়েছে। এ উৎসবে বিজয়ী ২০ জনকে পুরস্কার প্রদান করা হবে। যারা বিজয়ী হয়েছেন তাদের নাম পরবর্তীতে ফরিদপুর সিটির ফেসবুক পেজে প্রকাশ করা হবে।

জহির হোসেন/এমজেইউ