বেড়িবাঁধে মাটির পরিবর্তে বালু, স্থানীয়দের বাধার মুখে কাজ বন্ধ
পটুয়াখালীর পর্যটন কেন্দ্র কুয়াকাটায় গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা রক্ষায় ৪৮ পোল্ডারের (৩৭৫ মিটার) বন্যা নিয়ন্ত্রণ বেড়িবাঁধের কাজে মাটির পরিবর্তে বালু এবং ব্লক না দিয়ে জিও ব্যাগে লোকাল বালুভর্তি বস্তার ব্যবহার করা হয়। এরপর স্থানীয়দের বাধার মুখে কাজ বন্ধ করতে বাধ্য হয় কর্তৃপক্ষ।
বুধবার (২৪ জানুয়ারি) বিকেলে নানা অনিয়মের অভিযোগ আনেন স্থানীয় মানুষ ও কুয়াকাটা পৌর মেয়র। তারা বলেন, এই কাজের শুরু থেকেই বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতি করে কাজ শেষ করার চেষ্টা করেন কর্তৃপক্ষ।
বিজ্ঞাপন
স্থানীয়দের অভিযোগ, কুয়াকাটা চৌরাস্তার পশ্চিম দিকের এই বেড়িবাঁধের কাজটি খুবই নিম্নমানের এবং লোকাল বালু দিয়ে করা হচ্ছে যা আমাদের জন্য আরও বেশি ঝুঁকিপূর্ণ। বন্যার পানিতে চাপ দিলে নিমিষেই বাঁধটি বিলীন হয়ে যাবে এবং কুয়াকাটা এক নিমিষেই ধ্বংস হয়ে যাবে।
স্থানীয় বাসিন্দা তৈয়ব খলিফা বলেন, আমরা বার বার তাদের বালু দিতে নিষেধ করেছি। তারা আমাদের কথায় না শোনে উল্টো হুমকি দেয়। রাস্তার কাজে যে জিও ব্যাগ দিচ্ছে এগুলো একবছরও টিকবে না। আমরা চাই কাজটা যাতে ব্লক দিয়ে স্থায়ীভাবে করা হয়।
কুয়াকাটা পৌর মেয়র আনোয়ার হাওলাদার বলেন, এ কাজে অন্যান্য জায়গায় মাটি ব্যবহার করা হলেও এখানে বালু দিয়ে বেড়িবাঁধের কাজ করা হচ্ছিল, যা খুবই নিম্নমানের। এ উপকূলের মানুষ বন্যা ও জলোচ্ছ্বাসের ঝুঁকি নিয়ে বসবাস করে। তাই বেড়িবাঁধটি টেকসই ও মজবুত হলে বন্যা কিংবা জলোচ্ছ্বাস প্রতিরোধে ভূমিকা রাখবে। এই কাজটি যেন মানসম্মতভাবে শেষ করা হয় তার জোর দাবি জানাচ্ছি।
বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের ফিল্ড ইঞ্জিনিয়ার মনিরুল ইসলাম বলেন, উপকূলীয় বাঁধ উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় এ কাজটি হচ্ছে। মোট ৬টি পোল্ডারে প্রায় ১২০০ কোটি টাকার কাজ হচ্ছে। চায়নার ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চংকিং ইন্টারন্যাশনাল কনস্ট্রাকশন (সিকো) কোম্পানি এই কাজ করছে। আগামী ৩১ জানুয়ারি কাজের মেয়াদ শেষ হবে।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে কাজের ত্রুটির কথা স্বীকার করে তিনি আরও বলেন, এখানে মাটি দেওয়ার কথা ছিল কিন্তু কীভাবে বালু আসলো আমার জানা নেই। আমি গতকাল পটুয়াখালীতে ছিলাম তাই কাজের কাছে থাকতে পারিনি। ৪৮ পোল্ডারের এই ৩৭৫ মিটার কাজের জন্য আমাদের বাজেট ছিল না, তাই জরুরি ভিত্তিতে ব্লকের পরিবর্তে জিওব্যাগ দিয়ে কাজটি করা হচ্ছে। পরবর্তীতে আবার বাজেট পেলে ব্লক দেওয়া হবে। আপাতত স্থানীয়দের বাধার কারণে কাজটি বন্ধ রেখেছি। ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের বিষয়টি আমি অবহিত করব, তারা পরবর্তী পদক্ষেপ নেবেন।
এসএম আলমাস/এএএ