সাগর-প্রিয়া দম্পতির প্রথম সন্তান ছেলে। তার বয়স ৭ বছর। কন্যা সন্তানের আশায় আবারও গর্ভধারণ করেন প্রিয়া।আলট্রাসনোগ্রামের পর চিকিৎসক জানিয়েছিলেন যমজ সন্তানের কথা। কিন্তু প্রিয়া খাতুন প্রসব করেছেন তিনটি ছেলে সন্তান। মেয়ে সন্তানের আশা পূরণ না হলেও একসঙ্গে তিনটি সন্তান পেয়ে ভীষণ খুশি এ দম্পতি।

গত রোববার (২২ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় পাবনা ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে নরমাল ডেলিভারির মাধ্যমে তিন সন্তানের জন্ম হয়।

প্রিয়ার পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে জনা গেছে, প্রায় এক যুগ আগে প্রেমের সম্পর্ক থেকে পারিবারিকভাবে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন পাবনার সাঁথিয়া উপজেলার ভুলবাড়িয়া ইউনিয়নের জগন্নাথপুর গ্রামের ভ্যানচালক সাগর হোসেন (৩২) ও পাবনা শহরের চকছাতিয়ানী এলাকার প্রিয়া খাতুন (২৬)।

পরে সাগর-প্রিয়া দম্পতির ঘর আলো করে আসে একটি ছেলে সন্তান। বর্তমানে ছেলের বয়স ৭ বছর। তার নাম পিয়াস। কন্যা সন্তানের আশায় আবারও গর্ভধারণ করেন প্রিয়া খাতুন। আলট্রাসনোগ্রাম করার পর চিকিৎসক তাদের জানিয়েছিলেন মার্চের ৮ তারিখের দিকে যমজ ছেলে সন্তান জন্মের কথা।

তবে চিকিৎসকের বলে দেওয়া নির্ধারিত সময়ের ২ মাস আগেই প্রসব ব্যথা ওঠে প্রিয়া খাতুনের। গত শনিবার (২১ জানুয়ারি) ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট পাবনা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয় তাকে। পরদিন রোববার (২২ জানুয়ারি) সন্ধ্যা ৬টা ৫ মিনিটে নরমাল ডেলিভারির মাধ্যমে জন্ম নেয় একসঙ্গে তিনটি ছেলে সন্তান। জন্মের পর তিন সন্তান ও মা সুস্থ রয়েছেন।

এরই মধ্যে তিন নবজাতকের নামও রাখা হয়েছে। একজনের নাম সাজিদ, আরেকজনের নাম সাদ এবং অপর শিশুর নাম সাজেক।

নবজাতকদের বাবা সাগর হোসেন বলেন, ‘আল্লাহর কাছে কন্যা সন্তান চেয়েছিলাম। আল্লাহ তিনটি যমজ সন্তান দিয়েছে, এতেও খুশি। সন্তানদের ইসলামের পথে শিক্ষিত করতে চাই। তবে আর্থিক অবস্থা খারাপ। জানি না কতদূর করতে পারব।’

প্রিয়া খাতুন বলেন, মার্চের ৮ তারিখে ডেলিভারি হওয়ার ডেট ছিল। তার দুই মাস আগেই প্রসব ব্যথা ওঠে। পরে হাসপাতালে ভর্তির পর নরমালে তিনটি যমজ ছেলে হয়েছে। আল্লাহর কাছে মেয়ে চেয়েছিলাম। তিন ছেলে সন্তান দিয়েছে। আমি তাতেই খুশি।

পাবনা জেনারেল হাসপাতালের গাইনি ও লেবার ওয়ার্ডের কর্তব্যরত স্টাফ নার্স শাহানা পারভীন বলেন, নরমাল ডেলিভারির মাধ্যমে বাচ্চা হলেও মা এবং বাচ্চারা উভয়েই সুস্থ আছে। তবে তিনটি সন্তান জন্য বাচ্চাদের মায়ের বুকের দুধ কম পাচ্ছে।

তিনি জানান, তিনটি বাচ্চার ওজন ২ কেজি করে। সন্তান জন্মের পর মায়ের জন্য এক ব্যাগ রক্তের প্রয়োজন হয়। তবে একজন রক্তদাতা স্বেচ্ছায় রক্তদান করায় ভোগান্তি হয়নি। বুধবার (২৪ জানুয়ারি) দুপুরে তাদের হাসপাতাল থেকে বাড়িতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। 

রাকিব হাসনা/এসকেডি