মানুদাকান্ত লাহিড়ী (৬২)

সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে মানুদাকান্ত লাহিড়ী (৬২) নামে এক বৃদ্ধকে ব্যক্তিকে পিটিয়ে গুরুতর জখম করার অভিযোগ উঠেছে মশিউর রহমান ও তার দুই ছেলের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় মানুদাকান্ত লাহিড়ীর স্ত্রী শান্তনা লাহিড়ী বাদি হয়ে শাহজাদপুর থানায় ৩ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা ৪ থেকে ৫ জনকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেছেন।

মানুদাকান্ত লাহিড়ী (৬২) গত ৮ দিন ধরে ঢাকার ধানমন্ডির ইবনে সিনা হাসপাতালের আইসিইউতে লাইফ সাপোর্টে রয়েছেন। এক সপ্তাহ অতিবাহিত হলেও থানা পুলিশ এ ঘটনায় এখনো কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি। তবে অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারে আন্তরিক চেষ্টা চলছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। 

গুরুতর আহত মানুদাকান্ত লাহিড়ী (৬২) উপজেলার কৈজুরী ইউনিয়নের জামিরতা গুধিবাড়ী গ্রামের মৃত লক্ষীকান্ত লাহিড়ীর ছেলে। ঘটনায় জড়িত মূলহোতা একই গ্রামের মশিউর রহমান (৪৫) ও তার দুই ছেলে আবির রহমান (২৫) ও নিবির রহমান সনি (২২)। 

মামলার এজাহার ও আহতের স্ত্রী শান্তনা লাহিড়ীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, একই গ্রামের মশিউর রহমানের ছেলে আবির রহমান ও নিবির রহমান সনি বাড়ির সামনের সড়কের চা স্টলে গত মঙ্গলবার (১৬ জানুয়ারি) ইয়ারকি ফাজলামি করতে থাকে। এ সময় মানুদাকান্ত লাহিড়ী তাদের বারণ করে এবং চুল বড় থাকায় চুল কাটতে বলেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে আবির ও সনির বাবা মশিউর রহমান মানুদাকান্তকে জরুরি কথা আছে বলে ফোন করে তাদের বাড়ির সামনে ডেকে নেয়। 

মানুদাকান্ত সরল বিশ্বাসে সেখানে গেলে মশিউর রহমানের নির্দেশে তার ২ ছেলে আবির ও সনি তাদের সহযোগী কয়েকজন বখাটে যুবক দিয়ে দেশীয় ধারালো অস্ত্র নিয়ে মানুদাকান্ত লাহিড়ীর ওপর অতর্কিত হামলা চালিয়ে বেধড়ক মারধর করেন। এ সময় তার চিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে আসে। তখন তারা বিভিন্ন ভয়ভীতি ও প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে চলে যায়। এক পর্যায়ে মানুদাকান্তের নাক মুখ দিয়ে প্রচুর রক্তক্ষরণ হলে তিনি জ্ঞান হারিয়ে মাটিতে পড়ে যান। পরে তাকে ঢাকার ইবনে সিনা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বর্তমানে তিনি সেখানের আইসিইউতে লাইফ সাপোর্টে রয়েছেন। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত তার জ্ঞান ফেরেনি বলে স্বজনেরা নিশ্চিত করেছেন। 

শাহজাদপুর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খায়রুল বাসার জানান, প্রাথমিক তদন্তে ঘটনার সত্যতা পাওয়া গেছে। এ বিষয়ে শাহজাদপুর থানায় একটি মামলা দায়ের হয়েছে। আশা করছি দ্রুত আসামিদের আইনের আওতায় আনা হবে। 

শাহজাদপুর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. কামরুজ্জামান ঢাকা পোস্টকে বলেন, তারা মামলাটি করতেই একটু দেরি করে ফেলেছেন, যার ফলে আসামিরা পালানোর সুযোগ পেয়েছে। মামলাটি আমরা অধিক গুরুত্ব দিয়ে দেখছি। ইতোমধ্যে আসামিদের গ্রেপ্তারে আমাদের একাধিক টিম নানা জায়গায় কাজ করছে। আশা করছি খুব দ্রুত তাদের গ্রেপ্তার করতে পারব। 

শুভ কুমার ঘোষ/এএএ