গাজীপুরের টঙ্গীতে বিশ্ব ইজতেমার প্রস্তুতি চলছে পুরোদমে। এরই মধ্যে ৩৫ ভাগ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। আগামী ১২ দিনের মধ্যে ইজতেমার পুরো কাজ সম্পন্ন  হবে বলে জানিয়েছে আয়োজক কমিটি।

শনিবার (২০ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় মাওলানা যোবায়েরের অনুসারী বিশ্ব ইজতেমার মিডিয়া সমন্বয়কারী মুফতি জহির ইবনে মুসলিম এ তথ্য জানিয়েছেন।

তিনি বলেন, আগামী ২ ফেব্রুয়ারি থেকে বিশ্ব ইজতেমা শুরু হবে। ইতোমধ্যে ময়দানের প্রায় ৩৫ ভাগ কাজ শেষ হয়েছে। স্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে এগিয়ে চলছে ইজতেমার প্রস্তুতি কাজ, সওয়াবের আশায় স্বেচ্ছাসেবীরা ময়দানে কাজ করছেন। আর বাকি কাজ আগামী ১ ফেব্রুয়ারির মধ্যেই শেষ হয়ে যাবে, যথা সময়ে ইজতেমা শুরু হবে ইনশাআল্লাহ।

এদিকে টঙ্গীর তুরাগ নদের তীরে শুরু হচ্ছে বিশ্ব তাবলীগ জামাতের বার্ষিক মহাসম্মেলন বিশ্ব ইজতেমা। ইজতেমার শীর্ষ মুরব্বীদের মতবিরোধের কারণে এবারও ইজতেমা অনুষ্ঠিত হবে দু’দফায়। প্রথম দফায় মাওলানা যোবায়ের অনুসারী মুসল্লিরা অংশ নেবেন। আগামী ২ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হয়ে ৪ ফেব্রুয়ারি আখেরী মোনাজাতের মধ্য দিয়ে শেষ হবে প্রথম দফা।

এরপর মাঝে ৪ দিন বিরতি দিয়ে ৯ ফেব্রুয়ারি দ্বিতীয় দফায় শুরু হবে মাওলানা সা’দ অনুসারীদের বিশ্ব ইজতেমা। ১১ ফেব্রুয়ারি আখেরি মোনাজাতের মধ্যদিয়ে শেষ হবে ২য় দফা তথা বিশ্ব ইজতেমার ৫৭তম আসর। বিশ্ব ইজতেমাকে সামনে রেখে এগিয়ে চলছে প্রস্তুতি কাজ।

সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, বিশ্ব ইজতেমা উপলক্ষে টঙ্গীর তুরাগ নদের তীরে প্রায় ১৬০ একর জমির ওপর তাবলীগ জামাতের সদস্যদের থাকার জন্য বিশাল চটের প্যান্ডেল তৈরি করা হচ্ছে। মঞ্চ নির্মাণ, মাঠের উত্তর-পশ্চিম কোণে টিনের চালা ও ইটের গাঁথুনির দেয়াল দিয়ে নির্মাণ করা হচ্ছে বিদেশি মেহমানদের আবাসন ব্যবস্থা।

আন্তর্জাতিক নিবাসে বিদ্যুৎ, গ্যাস ও টেলিফোন সংযোগসহ আধুনিক বিভিন্ন সুবিধা রাখার সর্বাত্মক চেষ্টা করা হচ্ছে। ইজতেমা মাঠে মুসল্লিদের সুবিধার্থে খাবার পানি, অজুখানা, গোসলখানা সংস্কার, পুরোনো টিউবওয়েল, বাথরুম ও কাঁচা-পাকা টয়লেট সংস্কার, ইটের সলিং করা রাস্তা তৈরি ও পুরোনো ভাঙ্গাচোরা রাস্তা-ড্রেন সংস্কার করা হচ্ছে।

এছাড়া বিদ্যুৎ লাইন, গ্যাস লাইন, পানির পাইপ লাইন, পানির ট্যাংক বসানো, বাঁশের খুঁটি বসানো, নামাজের দাগ কাটা, মাঠের ময়লা-আবর্জনা পরিষ্কারসহ প্যান্ডেল সাজগোজের কাজ করা হচ্ছে। ময়দানের পশ্চিম ও উত্তর-পূর্ব পাশের নিচু স্থানে বালি ফেলে উচুঁ করা হয়েছে।

মুসল্লিদের যাতায়াতে যাতে কোনও রকম ব্যাঘাত না ঘটে সেজন্য তুরাগ নদে সেনাবাহিনীর ইঞ্জিনিয়ারিং কোরের সদস্যরা ভাসমান সেতু নির্মাণ করবেন। মাঠে মুসল্লিদের অবস্থানও জেলাওয়ারি নির্দিষ্ট খিত্তায় (ভাগে) বিভক্ত করা হচ্ছে।

ময়দানে তাবলীগ জামাতের অনুসারী সদস্য, স্থানীয় মাদ্রাসা, স্কুল কলেজের ছাত্র-শিক্ষক, বিভিন্ন সরকারি-আধা সরকারি অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা স্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে এসব কাজ করছেন।

শিহাব খান/টিএম