নম্বর ক্লোন করে এসিল্যান্ডকেই কল দিলেন প্রতারক
আমি কবিরহাট উপজেলার এসিল্যান্ড একেএম সেলিম বলছি। আপনার কাগজপত্রে ভুল আছে। যদি সঠিক করতে চান তাহলে ১৫ মিনিটের মধ্যে ২০ হাজার টাকা বিকাশ করুন। টাকা না দিলে আপনাকে জেল জরিমানা করা হবে।
এভাবেই নোয়াখালীর কবিরহাটের সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট অমৃত দেবনাথকে কথাগুলো বলছিলেন প্রতারক। মূলত এসিল্যান্ডের মোবাইল নম্বর ক্লোন করে জনপ্রতিনিধি ও সাধারণ মানুষের কাছ থেকে টাকা চাওয়ার অভিযোগে সরাসরি অমৃত দেবনাথ নিজেই ওই প্রতারকের সঙ্গে কথা বলেন।
বিজ্ঞাপন
বুধবার (১৭ জানুয়ারি) সকাল ৯টায় ঢাকা পোস্টকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেন কবিরহাট উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট অমৃত দেবনাথ।
তিনি বলেন, প্রতারক চক্র আমার অফিসিয়াল মুঠোফোন নম্বর ক্লোন করে জনপ্রতিনিধি ও সাধারণ সেবা প্রার্থী মানুষের কাছ থেকে টাকা চেয়েছে। আমি বিষয়টি জানতে পেরে সাথে সাথে তাদের দেওয়া অন্য নম্বরে কল দিলে সে আমাকে অফিসে আসতে বলে এবং টাকা না দিলে জেল জরিমানার কথা বলে। আমি যখন বললাম আমিই এসিল্যান্ড এবং আমি অফিসে আছি। তারপর সে ফোন বন্ধ করে দেয় আর যোগাযোগ করা যায়নি।
অমৃত দেবনাথ আরও বলেন, আমাদের এক জনপ্রতিনিধি আছেন যিনি ইটভাটা পরিচালনা করেন। তাকে ফোন দিয়ে ইটভাটার অনুমতি নাই মর্মে ৫০ হাজার টাকা দিতে বলা হয়। উনি আমার সম্পর্কে ভালো করেই জানেন তাই আমাকে ঘটনাটি জানান। আমি সতর্ক করে দেওয়ার পর আর ফোন দেওয়ার খবর পাইনি।
এ বিষয়ে জনগণকে সচেতন রাখতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকের ‘AC Land Kobirhat Noakhali' নামে অ্যাকাউন্ট থেকে একটি স্ট্যাটাসও দেওয়া হয়েছে।
স্টাটাসে লেখা রয়েছে, আসসালামু আলাইকুম। সহকারী কমিশনার (ভূমি), কবিরহাট এর অফিশিয়াল নম্বরটি ক্লোন করে এবং অন্য একটি নম্বর (01757549052) ব্যবহার করে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তির নিকট বিকাশে টাকা দাবি করা হচ্ছে। আমি দৃঢ়তার সাথে জানাচ্ছি এসিল্যান্ড, কবিরহাট এর সঙ্গে কোনোভাবেই সম্পৃক্ত নয়। এসিল্যান্ড কখনই কাউকে ফোন করে টাকা চাইতে পারে না। তাই অনুগ্রহ করে কেউ কোনো প্রতারণার ফাঁদে পড়বেন না এবং কোনো প্রকার আর্থিক লেনদেন না করার জন্য অনুরোধ জানাচ্ছি।
এ বিষয়ে কবিরহাট থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. হুমায়ুন কবির ঢাকা পোস্টকে বলেন, নম্বর ক্লোন করে বিভিন্ন লোকের কাছে টাকা দাবি করা হচ্ছে এমন তথ্য পেয়েছি। এ বিষয়ে অভিযোগ পেলে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
হাসিব আল আমিন/এমএএস