ভোটারদের কাছে ইতিবাচক সাড়া পাচ্ছেন জিন্নাহ
আস্থা-বিশ্বাস আর নির্ভরতায় ভর করে বগুড়া-২ (শিবগঞ্জ) আসনে জোটের প্রার্থী করা হয়েছে শরিফুল ইসলাম জিন্নাহকে। এই আসনের জনগণের প্রতিনিধিত্ব করা জিন্নাহ এবারও লাঙল প্রতীকে ভোট করছেন। শিবগঞ্জের মাটি-মানুষকে কাছে টেনে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও তিনি বিজয়ের বিজয়ের নিশান ওড়ানোর প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন।
ভোটাররাও জিন্নাহকে কেন্দ্র করেই শিবগঞ্জের উন্নয়নের রূপরেখা কল্পনা করছেন। উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতেই যোগ্য অভিভাবক জিন্নাহকে বেছে নেওয়ার কথা বলেছেন।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বগুড়া-২ আসনে মোট সাতজন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এর মধ্যে স্বতন্ত্র পার্থী আছেন তিনজন। একটি পৌরসভা ও ১২টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত এ আসনটিতে মোট ভোটার ৩ লাখ ২৬ হাজার ১৮৬ জন। এর মধ্যে পুরুষ ১ লাখ ৬৩ হাজার ৪৬৩ জন এবং নারী ১ লাখ ৬২ হাজার ৭২৩ জন। ভোটকেন্দ্র রয়েছে ১১০টি।
বিজ্ঞাপন
মুক্তিযুদ্ধের রনাঙ্গনের বীর সৈনিক শরিফুল ইসলাম জিন্নাহ বগুড়ার শিবগঞ্জের মহাস্থান এলাকার বাসিন্দা। জাতীয় পার্টির বগুড়া জেলা কমিটির সভাপতি ও কেন্দ্রীয় কমিটির ভাইস চেয়ারম্যানের দায়িত্বে আছেন তিনি। রাজনীতির পাশাপাশি পেশায় ব্যবসায়ী জিন্নাহ।
১৯৯০ সালে তিনি উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছিলেন। ২০১৪ সালে প্রথমবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। এরপর ২০১৮ সালে ফের সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন শরিফুল ইসলাম জিন্নাহ।
ভোটারদের কাছে জানা যায়, এলাকার উন্নয়নে শরিফুল ইসলাম জিন্নাহর ভূমিকা অনবদ্য। করোনাকালে দেশের সবার মাঝে যখন আতঙ্ক বিরাজমান ছিল। সেই সময়েও নিজের এলাকার মানুষদের মাঝে খাদ্য ও অন্যান্য সহায়তা নিয়ে পাশে ছিলেন জিন্নাহ।
সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার এলাকার বিভিন্ন উল্লেখযোগ্য উন্নয়নে ভূমিকা রেখেছেন এই জনপ্রতিনিধি। নির্বাচিত হওয়ার দশ বছর আগে যেসব গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় যে কাজ হয়নি, সেসব কাজ আগে হাতে নেন তিনি।
রাস্তা ঘাট, ব্রিজ কালভার্ট সংস্কারসহ নতুন রাস্তা নির্মাণ কাজ শুরু করেন। দীর্ঘদিন ধরে অকেজো, চলাচলের অনুপযোগী রাস্তাগুলো সংস্কার করেন জিন্নাহ। এছাড়া বহু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের উন্নয়ন, একাডেমিক ভবন নির্মাণ, আইসিটি ভবন নির্মাণে তার প্রত্যক্ষ অবদান দেখেছেন ভোটাররা।
স্থানীয়রা জানায়, তার উল্লেখযোগ্য কাজ ছিল শিবগঞ্জের নাগর ব্রিজ সংস্কার। এই ব্রিজ বরাবরই বিগত সময়ের এমপিদের চোখের আড়ালে ছিল। অথচ ব্রিজটি দিয়ে উপজেলার পাঁচটি ইউনিয়নের কয়েক হাজার মানুষ প্রতিদিন যাতায়াত করেন।
কৃষিভিত্তিক উপজেলা শিবগঞ্জের গ্রামীণ বাজার অবকাঠামো উন্নয়নে চলতি বছরে প্রায় তিন কোটি টাকা মূল্যের (৪ তলা ভিত্তি বিশিষ্ট দ্বিতল) ভবন নির্মাণ কাজের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করেন এমপি জিন্নাহ।
এছাড়া কৃষকদের চলাচলের জন্য রাস্তাঘাটের উন্নয়নে সবচেয়ে বেশি নজর রেখেছেন শরিফুল ইসলাম জিন্নাহ। পাশাপাশি দুস্থ প্রতিবন্ধীদের জন্য হুইল চেয়ার, নারীদের সেলাই মেশিনসহ নানা ধরনের সহায়তা অব্যাহত থেকেছে তার সংসদীয় এলাকায়। এমপি জিন্নাহর আরেকটি উল্লেখযোগ্য কাজ হলো, দশম নির্বাচনে তার প্রতিশ্রুতি ছিল জুয়া, হাউজি মেলা বন্ধ করা। সংসদ সদস্য হওয়ার পর তিনি সেই প্রতিশ্রুতি রক্ষা করেছিলেন। শিবগঞ্জের এসব অবৈধ মেলা বন্ধ করে স্থানীয় মানুষদের মাঝে শান্তি ফিরিয়ে এনেছেন তিনি।
শিবগঞ্জ উপজেলা জাতীয় পার্টির সাংগঠনিক সম্পাদক শাহিনুর রহমান বলেন, এমপি জিন্নাহ নিজ দলের লোকজনের প্রতি সবসময় খেয়াল রেখেছেন। তার আরেকটি বড় গুন তিনি জাতীয় পার্টির নেতা হলেও কখনও অন্য রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মীদের আলাদা চোখে দেখেননি। শিবগঞ্জ বিএনপি-জামায়াত অধ্যুষিত এলাকা। সেখানে সব দলের মানুষের কাছে তিনি সমানভাবে সম্মান পেয়েছেন।
শাহিনুর রহমান বলেন, এই গুনের প্রতিদান এমপি জিন্নাহ অবশ্যই পাবেন। বিগত দশ বছরে তিনি যা করেছেন, তার আগে কেউ সেই কাজ করেননি। এবারও ভোটের মাঠে ভোটারদের কাছে ইতিবাচক সাড়া পাচ্ছেন তিনি। এবং বিপুল ভোটে বিজয়ী হবে বলে আমাদের আশা।
শরিফুল ইসলাম জিন্নাহ বলেন, আগামী ৭ জানুয়ারি দেশে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। এই নির্বাচন জাতির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এটা আমাদের অস্তিত্বের একটি প্রশ্ন।
স্বাধীনতা যুদ্ধে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নেতৃত্ব দিয়েছেন। সেই যুদ্ধে আমিও অংশগ্রহণ করেছি। ফলশ্রুতিতে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন বাস্তবায়ন করা আমারও একটি দায়িত্ব।
এই লক্ষে এবার জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিয়েছি। আমি আশাবাদী এবারও বিপুল ভোটে আমি নির্বাচিত হবো। বিভিন্ন জায়গায় গণসংযোগ করছি, বিপুল সাড়া পাচ্ছি।
তবে এবারের নির্বাচনে ভোটারদের কেন্দ্রে নিয়ে আসা একটা বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে মনে হয়েছে আমাদের কাছে বলে মন্তব্য করেন জিন্নাহ।
লাঙ্গলের এই প্রার্থী বলেন, কিছু কিছু ভোটারের মাঝে আস্থার সংকট রয়েছে। তারা বুঝতে পারছে না এবার ভোট কীভাবে হবে। আমরা তাদের বলছি, আশ্বস্ত করছি। তারা সন্তুষ্ট, নিশ্চিন্তে কেন্দ্রে ভোট দিতে আসতে পারবেন। এবং আমি বলতে পারি আগামী ৭ জানুয়ারি বিপুল ভোটে আমি জয় লাভ করবো।
আসাফ-উদ-দৌলা নিওন/এমএএস