নৌকায় ভোট চেয়ে হাত তুলে ওয়াদা করালেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও লীগের সাধারণ ও সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী নোয়াখালী-৫ (কোম্পানীগঞ্জ-কবিরহাট) আসনের আওয়ামী লীগের প্রার্থী ওবায়দুল কাদের। রোববার (৩১ ডিসেম্বর) বিকেল ৩টায় ধানশিড়ি  ইউনিয়নের মকবুল চৌধুরী হাট স্কুল মাঠে এক পথসভায় তিনি এ ওয়াদা করান। 

ওবায়দুল কাদের বলেন, ভোট বিরোধীরা জানে নির্বাচন করে শেখ হাসিনাকে হটানো যাবে না। এজন্য তারা চোরাগোপ্তা পথে সরকার হটাতে চায়। লাশ ফেলে বা লাশ বানিয়ে হলেও তারা নির্বাচন বানচাল করতে চায়। এটাই তাদের শপথ, এটাই তাদের উদ্দেশ্য। আপনারা শেখ হাসিনার জন্য আছেন? হাত তুলে দেখান। সাত জানুয়ারি দলে দলে নৌকা মার্কায় ভোট দেবেন। 

ওবায়দুল কাদের আরও বলেন, আমি লক্ষ্য করেছি ভোটের প্রতি মানুষের অকুণ্ঠ সমর্থন রয়েছে। আন্তর্জাতিক শক্তি ও আমাদের প্রতিপক্ষ ভোটের পরিবেশ এবং ভোটারের উপস্থিতি নিয়ে প্রশ্ন করছে। নিন্দুকেরা নিন্দা করছে। যত নিন্দা করুক, যত ভয় দেখাক, হুমকি ধামকি দিক, নিষেধাজ্ঞার কথা বলুক আমরা ভয় পাই না। শেখ হাসিনা বিশ্বাস করে জনগণের শক্তিকে।

জোর করে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকতে চায় না উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, জোর করে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকতে চায় না। আমরা জোর করে ইলেকশনে জিততে চাই না। নিরপেক্ষ নির্বাচন করবে ইলেকশন কমিশন। দলে দলে মানুষ ভোট কেন্দ্রে গিয়ে ভোট দেবেন। সংবিধান বাঁচাতে এই নির্বাচনের দরকার আছে। আমাদের মুক্তিযুদ্ধকে বাঁচাতে এই নির্বাচন অপরিহার্য। আমাদের স্বাধীনতা রক্ষায় এই নির্বাচনের এই মুহূর্তে বিকল্প নাই।

এসময় জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শহিদ উল্যাহ খান সোহেল, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আবদুল ওয়াদুদ পিন্টু, ফেনী-২ আসনের আওয়ামী লীগের প্রার্থী ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নিজাম উদ্দিন হাজারী, কবিরহাট উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোহাম্মদ ইব্রাহীম, সাধারণ সম্পাদক জহিরুল হক রায়হানসহ আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। 

এর আগে সকাল ১০টায় বাবা-মায়ের কবর জিয়ারত করে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলায় ভোট চেয়ে এলাকায় গণসংযোগ শুরু করেন ওবায়দুল কাদের। এরপর বসুরহাট পৌরসভা, চরকাঁকড়া ইউনিয়নের সিদ্দিকীয়া বাজার, কবিরহাট উপজেলার চাপরাশিরহাট ইউনিয়নের বিভিন্ন বাজারসহ বিভিন্ন এলাকায় গণসংযোগ করেন তিনি।

জানা যায়, গত শুক্রবার (২২ ডিসেম্বর) সকালে বাবা-মায়ের কবর জিয়ারত করে বসুরহাট বাজারে উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ের সামনে পথসভায় বক্তব্য রাখেন। এরপর শনিবার (২৩ ডিসেম্বর) দুপুর পর্যন্ত কোম্পানীগঞ্জ উপজেলায় গণসংযোগ শেষে বিকেলে কবিরহাট উপজেলায় পথসভায় বক্তব্য রাখেন। নির্বাচনী প্রচারণার অংশ হিসেবে রোববার (৩১ ডিসেম্বর) সকাল ১০টায় বাবা-মায়ের কবর জিয়ারত করে ফের গণসংযোগ শুরু করেন তিনি।

রিটার্নিং কর্মকর্তার দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, নোয়াখালী-৫ (কোম্পানীগঞ্জ-কবিরহাট) আসনে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের (নৌকা), ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশের মোহাম্মদ শামসুদ্দোহা (চেয়ার), জাসদের মোহাম্মদ মকছুদের রহমান (মশাল), জাতীয় পার্টির খাজা তানভীর আহমেদ (লাঙ্গল) ও বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক মুক্তিজোটের শাকিল মাহমুদ চৌধুরী (ছড়ি) প্রতীক পেয়ে প্রচারণা করছেন। এ আসনে মোট ভোটারের সংখ্যা চার লাখ চার হাজার ৯৭৭ জন। তার মধ্যে পুরুষ ভোটার হলেন দুই লাখ নয় হাজার ৬৯৩ জন ও নারী ভোটার হলেন এক লাখ ৯৫ হাজার ২৮৪ জন। ১৩২ কেন্দ্রে ৯০০ ভোটকক্ষে এসব মানুষ তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন।

প্রসঙ্গত, ১৯৯১ সালের পঞ্চম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ থেকে প্রথমবার মনোনয়ন পেয়েছিলেন ওবায়দুল কাদের। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সপ্তমবার মনোনয়ন পেলেন তিনি। এর আগে নোয়াখালী-৫ আসন থেকে তিনি আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে সপ্তম, নবম, দশম এবং একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জয় লাভ করেন তিনি। ওবায়দুল কাদের ১৯৫২ সালের ১ জানুয়ারি নোয়াখালী জেলার কোম্পানীগঞ্জ থানার বড় রাজাপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবার নাম মোশাররফ হোসেন এবং মাতা ফজিলাতুন্নেছা।

হাসিব আল আমিন/এমএএস