দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রচারণায় রংপুর-১ (গঙ্গাচড়া ও আংশিক সিটি) আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী ও জাতীয় পাটির বহিষ্কৃত নেতা মসিউর রহমান রাঙ্গার বিরুদ্ধে আচরণবিধি ভঙ্গ করে ভোটারদের ভূরিভোজ করানোর অভিযোগ উঠেছে। 

শুক্রবার (২৯ ডিসেম্বর) উপজেলার কোলকোন্দ ইউনিয়নের দক্ষিণ কোলকোন্দ তাকিয়া শরীফ আলিম মাদ্রাসা মাঠে জুম্মার নামাজের পর তার নির্বাচনী পথসভায় আসা প্রায় ৭ হাজার লোকজনের ৪টা খাসি ও একটি গরু জবাই করে খাওয়ানো হয়। এর আগেও আচারণবিধি ভঙ্গের অভিযোগে রাঙ্গাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছিল।

রাঙ্গার কয়েকজন কর্মী-সমর্থক নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, শুক্রবারের পথসভার জন্য দুই তিন দিন আগে থেকে খাওয়ার ঘোষণা দিয়ে পুরো ইউনিয়নটির ভোটারদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে দাওয়াত দেওয়া হয়েছিল। পথসভায় অংশ নেওয়া মুসলিম ভোটারদের জন্য ৮ মণ ওজনের একটি গরু ও হিন্দু ভোটারদের জন্য ৪টি ছাগল জবাই করা হয়। অন্তত ২০ জন স্থানীয় ভোটারদের দাওয়াত ও খাবার দেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

পথসভায় আসা কোলকোন্দ হিন্দুপাড়া এলাকার আলো রাণী বলেন, কাইলক্যা রাঙ্গার লোক হামার উত্তি বাড়ি বাড়ি ঢুকি দাওয়াত দিয়া গেইছে। আর কয়া গেইছে যে টাকা দিবে আর পোলাও ভাত খাওয়াইবে। কিন্তু মিটিং শ্যাষত পোলাও ভাত দিল কিন্তু টাকা তো দিল না। ভোট কাক দেই দেই, রাঙ্গার মিটিংগোত আসি তো পোলাও খাওয়া হইল।

পথসভায় আসা কোলকোন্দ মাটিয়ালপাড়া এলাকার মিজানুর রহমান জানান, রাঙ্গা সাহেব খুব ভালো মানুষ। কালকে (বৃহস্পতিবার) রাঙ্গা স্যারের লোকজন বাড়িত যায়া খাবার দাওয়াত দিয়া আসছে। যায় আসছে তাকে খাবার দেয় চোল।

কথা হয় পিরের হাট এলাকার বক্কত উল্লার নামে এক ভোটারের সঙ্গে তিনি জানান, সেই ৩ দিন থাকি বাড়ি বাড়ি যায়া দাওয়াত দিয়া আসছে বাহে সবাকে নাকি বসে খাওয়াইবে তা এটে আসি খাবার নিয়া যে ঠ্যালাঠেলি।

এ বিষয়ে সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা নাহিদ তামান্নার সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, আমরা বিষয়টি জেনেছি সব তথ্য সংগ্রহ করেছি, নির্বাচনী অনুসন্ধানী কমিটির কাছে দেওয়া হয়েছে। এর আগে তৃতীয় লিঙ্গকে নিয়ে মন্তব্য করায় আচরণবিধি লঙ্ঘনের কারণে কারণ দর্শানোর নোটিশ প্রদান করা হয়েছিল।

এর আগেও মসিউর রহমান রাঙ্গার বিরুদ্ধে আচরণবিধি ভঙ্গ করে রংপুর-৩ আসনের প্রার্থী জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদের এবং তৃতীয় লিঙ্গের স্বতন্ত্র প্রার্থী আনোয়ারা ইসলাম রানীকে কটাক্ষ করে বক্তব্য প্রদানের অভিযোগ উঠে। 

ফরহাদুজ্জামান ফারুক/এএএ