সাবেক বিএনপি নেতার জামিন করালেন নৌকার প্রার্থী শম্ভু
বরগুনায় নাশকতার চেষ্টার মামলায় গ্রেপ্তার সাবেক বিএনপি নেতা ও ইউপি চেয়ারম্যান মতিউর রহমান রাজার জামিন মঞ্জুর করেছেন আদালত। রাজার পক্ষে আদালতে জামিন আবেদন করেন বরগুনা-১ আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী অ্যাডভোকেট ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভু।
গতকাল মঙ্গলবার (২৬ ডিসেম্বর) বরগুনার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে রাজার জামিন আবেদনের শুনানি শেষে বিচারক রাসেল মজুমদার জামিন মঞ্জুর করেন। আদালত পুলিশের পরিদর্শক মাহবুবুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
বিজ্ঞাপন
আদালত সূত্রে জানা যায়, গ্রেপ্তারকৃত মতিউর রহমান রাজাকে বরগুনা-১ আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী অ্যাডভোকেট ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভুর জিম্মায় পরবর্তী ধার্য তারিখ জানুয়ারির ১০ ও ২৯ তারিখ পর্যন্ত পৃথক দুটি মামলায় জামিন দেওয়া হয়েছে। এ সময় রাজার পক্ষে জামিন শুনানিতে শম্ভুর ছেলে সুনাম দেবনাথ ও আইনজীবী তানজিবুল ইসলাম সুজন অংশ নিলেও অ্যাডভোকেট ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভু অংশগ্রহণ করেননি।
মতিউর রহমান রাজা বরগুনা জেলা বিএনপির (হালিম–নজরুল কমিটি) কমিটির সদস্য ছিলেন। এছাড়াও বরগুনা জেলা শ্রমিক দলের সভাপতি প্রার্থীও ছিলেন তিনি। তিনি সদর উপজেলার বদরখালী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান।
এর আগে গত রোববার (২৪ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় সদর উপজেলার গৌরিচন্না ইউনিয়নের গৌরিচন্না মাধ্যমিক বিদ্যালয় মাঠে বরগুনা-১ আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের জনসভায় বক্তব্য দেন বদরখালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মতিউর রহমান রাজা। এ সময় তিনি আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগে মনোনীত প্রার্থী ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভুকে বিজয়ী করতে নৌকা প্রতীকে ভোট দিতে ভোটারদের আহ্বান জানান। এছাড়া তার ইউনিয়ন থেকে সর্বোচ্চ ভোট নৌকায় দেওয়া না হলে চেয়ারম্যান পদ থেকে অব্যহতি নেবেন বলেও জানান তিনি।
নাশকতা মামলায় পলাতক আসামি ইউপি চেয়ারম্যান মতিউর রহমান রাজা নৌকা প্রতীকে ভোট চেয়ে বক্তব্য দেওয়ার পরপরই বিভিন্ন মহলে আলোচনায় আসেন। এরপর তাকে গ্রেপ্তার করতে তৎপর হয় পুলিশ। গত সোমবার (২৫ ডিসেম্বর) দুপুর ২টার দিকে বরগুনা সদর উপজেলার বদরখালী ইউনিয়নের বাওলকর এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে গোয়েন্দা পুলিশ। পরে ওই দিনই তাকে আদালতে হাজির করা হলে আদালত তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
এ বিষয়ে বরগুনা-১ আসনের আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভুর মুঠোফোনে কল করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।
এ বিষয়ে জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি নজরুল ইসলাম মোল্লা বলেন, মতিউর রহমান রাজা এক সময়ে জাতীয় পার্টির রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। পরবর্তীতে বিএনপিকে সমর্থন দিয়ে বিএনপি ঘোষিত বিভিন্ন আন্দোলনসহ মিছিল মিটিংয়ে অংশগ্রহণ করেছেন। এছাড়াও তিনি জেলা শ্রমিকদলের সভাপতি পদে প্রার্থীও ছিলেন।
নাশকতা মামলায় জামিন মঞ্জুরের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, মতিউর রহমান রাজা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে চেয়ারম্যান হিসেবে সুযোগ-সুবিধা পেতে সরকার দলীয় আওয়ামী লীগের বিভিন্ন নেতার সঙ্গে সম্পর্ক তৈরি করতে শুরু করেন। এ কারণেই বিএনপি করলেও একদিনের মধ্যে জামিন পেয়েছেন রাজা।
উল্লেখ্য, চলতি বছরের নভেম্বর মাসে বিস্ফোরকদ্রব্য ব্যবহার করে নাশকতার চেষ্টার অভিযোগে পুলিশ বাদী হয়ে বরগুনা জেলা বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের শতাধিক নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে সদর থানায় মামলা করে। ওই মামলায় মতিউর রহমান রাজাকেও আসামি করা হয়।
আরএআর