ফেনীতে আচরণবিধি লঙ্ঘন করে স্কুলপড়ুয়া শিক্ষার্থীদের নির্বাচনী প্রচারণায় আনার অভিযোগ উঠেছে সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের তথ্য ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক এবং ধর্মপুর আমিন উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয় ও মহাবিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি নূর উদ্দিন জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধে। 

মঙ্গলবার (২৬ ডিসেম্বর) দুপুরে ধর্মপুর আমিন উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয় সংলগ্ন সড়কে ফেনী-২ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী নিজাম উদ্দিন হাজারীর নির্বাচনী প্রচারণায় এমন চিত্র দেখা গেছে। এতে বিদ্যালয়ের প্রায় তিন শতাধিক শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন। 

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, তপ্ত রোদের মধ্যে নৌকার প্রার্থীর বিভিন্ন স্লোগান ও গানে গানে পথসভা মাতিয়ে রেখেছেন বিদ্যালয়ের ছাত্রীরা। এ সময় তারা বিভিন্ন সাজে সজ্জিত হয়ে গান পরিবেশন করেন। এছাড়া স্থানীয় রাজনৈতিক নেতাদের সঙ্গে স্লোগান দিতে দেখা যায় বিদ্যালয়ের ছাত্রদের।

প্রচারণায় অংশ নেওয়া বিদ্যালয়ের একাধিক শিক্ষার্থী ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমরা সকাল ৯টা থেকে নিজাম হাজারীকে বরণ করে নেওয়ার জন্য এখানে দাঁড়িয়েছি। স্কুলের স্যার ও সভাপতি আমাদের নিয়ে এসেছে। 

বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী বিবি আয়েশা আক্তার সুবর্ণা বলেন, আমাদের ক্লাসে মোট ১০০ জনের মত শিক্ষার্থী রয়েছে। তার মধ্যে মঙ্গলবার অনুষ্ঠানে মেয়ে অল্প কয়েকজন এলেও ছেলেরা সবাই এসেছে। আমাদের স্যাররা আসতে বলেছে সেজন্য বিদ্যালয় বন্ধ থাকলেও আমরা এসেছি।

তবে এ বিষয়ে বিদ্যালয়ে কর্মরত শিক্ষকদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করলেও কেউ মুখ খুলতে রাজি হয়নি।

অভিযোগ অস্বীকার করে আওয়ামী নেতা ও বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি নূর উদ্দিন জাহাঙ্গীর ঢাকা পোস্টকে বলেন, এখন বিদ্যালয় বন্ধ। কর্মসূচিতে শিক্ষার্থীদের অংশ নেওয়ার সুযোগ নেই। প্রচারণায় যারা অংশ নিয়েছে সবাই আমার নাতি-নাতনি এবং আত্মীয়স্বজন। তারা দলকে ভালোবেসে এসেছে।

তিন শতাধিক শিক্ষার্থী আত্মীয়স্বজন কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, প্রচারণায় স্কুলের শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণের বিষয়টি ভিত্তিহীন। আমাদের পরিবারের সঙ্গে এমপির পারিবারিক সম্পর্ক রয়েছে বিধায় অনেকে এসেছে। একটি গোষ্ঠী আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে মিথ্যাচার করছে।

জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক মুছাম্মৎ শাহীনা আক্তার ঢাকা পোস্টকে বলেন, নির্বাচনে শিশুদের ব্যবহার আচরণবিধি লঙ্ঘন। এ বিষয়ে প্রার্থীদের আগেই অবগত করা হয়েছিল। নির্বাচনী প্রচারণায় শিশুদের ব্যবহার হয়েছে কিনা তা নির্বাচনী মনিটরিং টিম খতিয়ে দেখবে। এমন কোনো অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

তারেক চৌধুরী/আরকে