স্ত্রীর বান্ধবীকে ধর্ষণ : সেই যুবলীগ নেতাকে অব্যাহতি
স্ত্রীর বান্ধবীর করা ধর্ষণ মামলায় সিরাজগঞ্জের কাজিপুর উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক আলী আসলামকে দল থেকে সাময়িক অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে বৃহস্পতিবার (১৪ ডিসেম্বর) তাকে দল থেকে সাময়িক অব্যাহতি দেয় জেলা যুবলীগ।
সিরাজগঞ্জ জেলা যুবলীগের আহ্বায়ক রাশেদ ইউসুফ জুয়েল ও যুগ্ম আহ্বায়ক হাসান শহীদ চঞ্চল, সঞ্জয় সাহা ও আলহাজ সরকার স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞাপন
সিরাজগঞ্জ জেলা যুবলীগের আহ্বায়ক রাশেদ ইউসুফ জুয়েল জানান, দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অপরাধে আসলামকে সাময়িক অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। অব্যাহতির বিষয়টি কেন্দ্রীয় কমিটির নেতাদের জানানো হয়েছে।
এদিকে ধর্ষণের ঘটনায় থানায় মামলা করার পর ভুক্তভোগী নারীকে যুবলীগ নেতা আসলাম হুমকি-ধমকি দিচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। বুধবার জেলা শহরে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে প্রশাসনের কাছে নিরাপত্তা চেয়েছেন ভুক্তভোগী ওই নারী।
এর আগে বিয়ের দাবিতে আসলামের বাড়িতে অনশন, বিষপানে আত্মহত্যার চেষ্টাও করেন ওই নারী। এ নিয়ে ঢাকা পোস্টসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদও প্রকাশিত হয়।
মামলার অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে, কাজিপুর উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক আলী আসলাম ভুক্তভোগী নারীর বান্ধবীর স্বামী। আলী আসলাম যুবলীগের নেতা হওয়ায় সে বিভিন্ন সময় সরকারি চাকরি দেওয়ার প্রলোভন দেখাত। চলতি বছরের ৩০ এপ্রিল যুবলীগ নেতা আলী আসলাম ওই নারীকে কাগজপত্র নিয়ে তার বাড়িতে আসতে বলেন। পরে তাদের মধ্যে আলাপ আলোচনার এক পর্যায়ে যুবলীগ নেতা বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে তাকে ধর্ষণ করে। পরবর্তীতেও একাধিকবার ধর্ষণ করেন তিনি। এরই একপর্যায়ে ভুক্তভোগী নারী বিয়ের জন্য যুবলীগ নেতাকে চাপ সৃষ্টি করলে তিনি বিয়ে করবে না বলে জানিয়ে দেয়।
এরপর গত ১১ নভেম্বর বিয়ের দাবিতে যুবলীগ নেতা আলী আসলামের বাড়িতে অনশন করেন ওই নারী। রাতে বিয়ের জন্য কাজী অফিসে নিয়ে যাওয়ার কথা বলে যুবলীগ নেতা আসলাম তার এক পরিচিত ছোট ভাই আরিফের বাড়িতে নিয়ে যায়। সেখানে যুবলীগ নেতা ভয়ভীতি দেখিয়ে কলেজ ছাত্রীর সঙ্গে তার শারীরিক সম্পর্ক হয়নি এই মর্মে স্বীকারোক্তিমূলক একটি ভিডিও ধারণ করে। পরে এই ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করেন।
মিথ্যা স্বীকারোক্তি ফেসবুকে প্রচার ও ওই কলেজ ছাত্রীর পরিবারের প্রতি ভয়ভীতি চলমান থাকায় গত ৯ ডিসেম্বর বিকেলে কলেজছাত্রী আত্মহত্যা করার উদ্দেশ্যে বিষপান করেন। পরবর্তীতে তাকে চিকিৎসার জন্য সিরাজগঞ্জের ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। গত ১০ ডিসেম্বর যুবলীগ নেতা আলী আসলামকে একমাত্র আসামি করে কাজিপুর থানায় ধর্ষণ মামলা দায়ের করেন ওই নারী।
এদিকে মামলার চারদিনেও যুবলীগ নেতাকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ।
শুভ কুমার ঘোষ/এসকেডি