নোয়াখালীর কবিরহাট উপজেলায় নৈশপ্রহরী মো. শহীদ উল্যাকে (৬০) হত্যা করে দুই স্বর্ণের দোকানে ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। এতে অন্তত তিন কোটি টাকার স্বর্ণ ও নগদ টাকা লুট করে ডাকাতরা।

বৃহস্পতিবার (৭ ডিসেম্বর) দিবাগত রাত সাড়ে ৩টা থেকে শুক্রবার ভোর সাড়ে ৪টা পর্যন্ত উপজেলার চাপরাশিরহাট ইউনিয়নের চাপরাশিরহাট পশ্চিম বাজারে এ ডাকাতি ও হত্যার ঘটনা ঘটে। 

নিহত মো. শহীদ উল্যা কবিরহাট উপজেলার ধানশালিক ইউনিয়নের উপদ্দি লামছি গ্রামের শামসুল হকের ছেলে।

ডাকাতি হওয়া দোকান দুইটি হলো মা-মনি জুয়েলার্স ও নূর জুয়েলার্স। দুই দোকানের প্রায় তিন কোটি টাকার মালামাল লুট হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন মালিকপক্ষ।

স্থানীয় বাসিন্দা নুর ইসলাম ঢাকা পোস্টকে বলেন, প্রতিদিনের মতো বৃহস্পতিবার রাতে চাপরাশিরহাট বাজারে ব্যবসায়ীরা দোকান বন্ধ করে বাড়ি চলে যায়। রাতে বাজার পাহারা দেন পাঁচজন নৈশপ্রহরী। রাত সাড়ে ৩টার দিকে ২০ থেকে ২৫ জনের একদল ডাকাত একটি পিকআপ ভ্যান নিয়ে চাপরাশিরহাট পশ্চিম বাজার আসে। পরে তারা তিনজন নৈশপ্রহরীকে বেঁধে মুখে টেপ লাগিয়ে দেয়। এ সময় ধস্তাধস্তি করতে গেলে শহীদ উল্যাহকে প্রথমে মাথায় আঘাত ও পরে শ্বাসরোধে করে হত্যা করে ডাকাত দলের সদস্যরা। এরপর বেঁধে রাখা বাকি দুজনকে পিটিয়ে আহত করা হয়।

নুর ইসলাম আরও বলেন, বিষয়টি টের পেয়ে বাজারে থাকা দুইজন সিএনজি চালক বের হয়ে আসলে তাদেরও মারধর করে বেঁধে রাখা হয়। পরে বাজারের মা-মনি জুয়েলার্স ও নূর জুয়েলার্সের লকার ভাঙচুর করে কয়েক শ ভরি স্বর্ণ এবং নগদ অর্থ লুট করে নিয়ে যায়। ডাকাতির সময় দোকানগুলোতে ব্যাপক ভাঙচুর করা হয়।

ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী মা-মনি জুয়েলার্সের মালিক মিন্টু চন্দ্র নাথ ঢাকা পোস্টকে বলেন, ডাকাত দল আমার স্বর্ণের দোকানের লকার গ্যাস সিলিন্ডার ব্যবহার করে কেটে ২৫০ ভরি স্বর্ণ, ১৫০ ভরি রুপা ও নগদ আড়াই লাখ টাকা লুট করে নিয়ে যায়। যার আনুমানিক দাম প্রায় আড়াই কোটি টাকা। 

মেসার্স নূর জুয়েলার্সের মালিক নুর আলম ঢাকা পোস্টকে বলেন, পরিকল্পিতভাবে এই বাজারে ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। আমার নূর জুয়েলার্স থেকে স্বর্ণ ও রুপা লুট করে নিয়ে যায়। এ ছাড়া আমার দোকানে প্রচুর ভাঙচুর করা হয়েছে।

চাপরাশিরহাট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মহিউদ্দিন টিটু ঢাকা পোস্টকে বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ডাকাত দল রাত সাড়ে তিনটা থেকে প্রায় সাড়ে ৪টা পর্যন্ত দুটি স্বর্ণের দোকানে লুটপাট চালায়। ডাকাতি শেষে তারা গাড়ি নিয়ে ফেনীর সোনাগাজীর দিকে চলে যায় বলে লোকজন জানিয়েছে। বিষয়টি পুলিশকে জানালে তারা এসে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে।

কবিরহাট থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রফিকুল ইসলাম ঢাকা পোস্টকে বলেন, খবর পেয়ে জেলা পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারাসহ আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। ঘটনাস্থল থেকে অনেকগুলো আলামত সংগ্রহ করা হয়েছে। মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। ঘটনার তদন্ত চলছে। দোষীদের খুঁজে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

হাসিব আল আমিন/এএএ