কিশোরগঞ্জের মিঠামইন থেকে অপহৃত সাত বছরের শিশু খোকা মিয়াকে অপহরণের চারদিন পর গাজীপুরের চৌরাস্তা এলাকা থেকে উদ্ধার করেছে র‍্যাব। একইসঙ্গে অপহরণকারী মো. রাকিবকে (২১) গতকাল বুধবার ময়মনসিংহ রেলস্টেশন এলাকা থেকে আটক করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (৭ সেপ্টেম্বর) দুপুরে কিশোরগঞ্জ র‌্যাব ক্যাম্পের কোম্পানি অধিনায়ক আশরাফুল কবির র‌্যাব কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। 

এই বিষয়ে র‌্যাব কমান্ডার জানান, জেলার মিঠামইনের উপজেলার ঢাকী পূর্বহাটি গ্রামের দিদারুল ইসলাম গাজীপুরের চাকরি করেন। সেখানে ময়মনসিংহের হালুয়াঘাট উপজেলার চুয়ানো গ্রামের মৃত শফিকুলের ছেলে মো. রাকিব পরিচয় গোপন রেখে দিদারুলের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তোলেন। রাকিব একপর্যায়ে দিদারুলকে 'ধর্ম ভাই' বানিয়ে সম্পর্ক আরও গভীর করেন। গত ১ ডিসেম্বর রাকিব মিঠামইনের ঢাকী পূর্বহাটি গ্রামে দিদারুলের গ্রামের বাড়িতে বেড়াতে যান। বাড়িতে গিয়ে দিদারুলের সাত বছরের ছোট ভাই শিশু খোকা মিয়াকে সঙ্গে নিয়ে মিঠামইন বাজারে ঘুরতে যান রাকিব। দিন গড়িয়ে রাত গভীর হলেও রাকিব ও খোকা মিয়া বাড়িতে না আসায় দিদারুল রাকিবের মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করলে ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।

এ র‍্যাব কর্মকর্তা আরও জানান, পরবর্তীতে ৪ ডিসেম্বর রাকিব তার ব্যক্তিগত মোবাইল ফোন ব্যাবহার করে দিদারুলের কাছে মুক্তিপণ দাবি করেন। মুক্তিপণ না দিলে খোকা মিয়াকে জীবিত পাওয়া যাবে না বলেও হুমকি দেন। 

ছোট ভাইয়ের সন্ধানের জন্য দিদারুল ইসলাম মিঠামইন থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন। তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় গাজীপুরের চৌরাস্তা এলাকায় রাকিবের অবস্থান নিশ্চিত হয়ে অভিযান চালায় র‌্যাব। অভিযানের বিষয়টি আঁচ করতে পেরে অপহরণকারী রাকিব ভিকটিম খোকা মিয়াকে রেখে সেখান থেকে পালিয়ে যান। পরে র‌্যাব সদস্যরা খোকা মিয়াকে উদ্ধার করেন। এ অবস্থায় অপহরণকারী মো. রাকিবকে ধরতে র‌্যাব সদস্যরা অভিযান অব্যাহত রাখে। বুধবার দুপুরে তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় ময়মনসিংহের কোতোয়ালী থানাধীন রেল স্টেশন এলাকা থেকে অপহরণকারী রাকিবকে আটক করেন র‌্যাব সদস্যরা।

কিশোরগঞ্জ র‌্যাব ক্যাম্পের কোম্পানি অধিনায়ক আশরাফুল কবির বলেন, এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা নিতে আটক রাকিবকে মিঠামইন থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।

মিঠামইন থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আহসান হাবিব জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার অপহরণের শিকার শিশু ও অপহরণকারী রাকিবকে কিশোরগঞ্জ আদালতে পাঠানো হয়েছে।

মোহাম্মদ এনামুল হক হৃদয়/এমএএস