জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের সাধারণ সম্পাদক শিরীন আখতার

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ফেনী-১ আসন থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের সাধারণ সম্পাদক শিরীন আখতার। গত ১০ বছরে দুই মেয়াদে সংসদ সদস্য থাকাকালীন তার সম্পদের পরিমাণ বেড়েছে কয়েকগুণ। সঙ্গে বেড়েছে ঋণের পরিমাণও। শিরীন আখতার এমপি দশম ও একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এ আসন থেকে মহাজোটের প্রার্থী হয়ে সংসদ সদস্য হন। 

এবারের হলফনামার তথ্যানুযায়ী, শিরীন আখতারের অস্থাবর সম্পত্তির মাঝে নিজের নামে ৫২ লাখ ৯৫ হাজার ৪৬০ টাকা, আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমা রয়েছে ৩৫ লাখ ৩০ হাজার ৬০৯ টাকা। তিনি কৃষিখাত থেকে বাৎসরিক আয় করেন ২ লাখ ৮০ হাজার ৫০০ টাকা। শেয়ার, সঞ্চয়পত্র ও ব্যাংক আমানত হিসেবে তার জমা আছে ১ লাখ ৮৫ হাজার ৭৮৪ টাকা।

২০১৪ সালে ফেনী-১ আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সংসদ সদস্য হওয়া শিরীন আখতারের নির্বাচনের হলফনামায় ৫৮ লাখ ১১ হাজার ৪৬১ টাকা মূল্যের স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি উল্লেখ ছিল। ৫ বছর পর ২০১৮ সালের নির্বাচনে হলফনামায় তার দেওয়া তথ্য অনুযায়ী সম্পত্তি ছিল ১ কোটি ৭৭ লাখ ৮৫ হাজার ৮৯০ টাকা। যা আগের ৫ বছরের তুলনায় তিনগুণ বেশি ছিল।

২০১৮ সালের হলফনামার তথ্য অনুযায়ী, শিরীন আখতারের গাজীপুরে ৯ লাখ ৫ হাজার ৪৭৫ টাকা মূল্যের ৬২ শতাংশ জমি, ধানমন্ডি ও ফেনী শহরে সাড়ে ১৯ লাখ টাকা মূল্যের ফ্ল্যাট ছিল। এফডিআর ও সঞ্চয় প্রকল্পে রাখা ছিল ৩৫ লাখ ৩৩ হাজার ৯৯১ টাকা। তার মধ্যে সংসদ সদস্য হিসেবে আয় করেছেন সাড়ে ২৩ লাখ টাকা। আয়ের খাতে কৃষি থেকে ২ লাখ ৬৮ হাজার ৫৫০ টাকা, শেয়ার, সঞ্চয় ও ব্যাংক আমানত থেকে ২ লাখ ২২ হাজার টাকা ছিল। ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমাকৃত অর্থের পরিমাণ ছিল ৪ লাখ ৯৯ হাজার ৫৮৭ টাকা। বিভিন্ন সঞ্চয়পত্রে বা স্থায়ী আমানতে বিনিয়োগ ছিল ৩৫ লাখ ৩৩ হাজার ৯৯১ টাকা। 

এবারের হলফনামায় দেখা যায়, শিরীন আখতারের রাজধানী ঢাকা উত্তরা ব্যাংক সাত মসজিদ শাখায় ৩০ লাখ ৫৭ হাজার ৯৬১ টাকা এবং মধুমতি ব্যাংক শেখ কামাল সরণি শাখায় ৯ লাখ ১৫ হাজার ৯৫৭ টাকা ঋণ রয়েছে। ২০১৮ সালের হলফনামা অনুযায়ী, শিরীন আখতারের রাজধানীর সাতমসজিদ রোড শাখার উত্তরা ব্যাংকে দুটি খাতে ২১ লাখ ৮৫ হাজার ৬৪৪ টাকা ঋণ ছিল। ৫ বছরের ব্যবধানে ঋণের পরিমাণ বেড়েছে ১৭ লাখ ৮৮ হাজার ২৭৪ টাকা।

বর্তমানে শিরীন আখতার রয়েছে ২টি গাড়ি। যার আর্থিক মূল্য ১ কোটি ৪০ লাখ ৬৫ হাজার ৪০৯ টাকা। ২০১৮ সালের হলফনামায় দেখা যায়, শিরীন আখতারের ৩৯ লাখ ৬৯ হাজার ১৬৯ টাকা মূল্যের একটি গাড়ি ছিল।

১৯৭৫ সালে সামরিক আইনে রংপুরে একটি মামলায় ২ বছরের সশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডিত হলেও পরবর্তীতে তা খালাস পেয়েছেন বলে হলফনামায় উল্লেখ করা হয়। 

শিরীন আখতার ছাত্র জীবন থেকেই রাজনীতি শুরু করেন। তিনি ডাকসু নির্বাচনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শামসুন্নাহার হল ছাত্রী সংসদের সমাজ সেবা সম্পাদক ছিলেন। ১৯৯০ সালে গণঅভ্যুত্থানে শ্রমিক জোট, স্কপ, ঐক্যবদ্ধ নারী সমাজের কেন্দ্রীয় নেত্রী হিসেবে ভূমিকা রাখেন। 
শিরীন আখতার ২০১৬ সালের ১২ মার্চ থেকে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) সাধারণ সম্পাদক হিসেবে রয়েছেন।

তারেক চৌধুরী/এএএ