শেখ হাসিনা ঘোষিত ‘ডামি’ প্রার্থীর ব্যাখ্যা দিয়েছেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও ফরিদপুর-১ (বোয়ালমারী, আলফাডাঙ্গা ও মধুখালী) আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী আবদুর রহমান।

আবদুর রহমান বলেন, ডামি প্রার্থী ও স্বতন্ত্র বা বিদ্রোহী প্রার্থী এক নয়। প্রধানমন্ত্রী যে ডামি প্রার্থী রাখতে বলেছেন সেটা সব জায়গায় নয়। যেসব আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ছাড়া অন্য কেউ মনোনয়ন জমা নাও দিতে পারেন; এমনটি অনুমেয় হলে সংশ্লিষ্ট আসনের নৌকার প্রার্থী নিজ দলে কাউকে প্রার্থী মনোনীত করবেন। এমনটাই বোঝানো হয়েছে। 

জেলা আওয়ামী লীগের এক বর্ধিত সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য এসব কথা বলেন দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আবদুর রহমান। রোববার (৩ ডিসেম্বর) দুপুর ২টার দিকে শহরের আলীপুর মহল্লা এলাকায় জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে এ বর্ধিত সভার আয়োজন করা হয়। 

আবদুর রহমান বলেন, প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যকে ভিন্নভাবে উপস্থাপন করে কেউ কেউ স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে নৌকাকে পরাজিত করতে মরিয়া হয়ে উঠেছেন। এটা দলীয় শিষ্টাচারের মধ্যে পড়ে না। তারা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করছেন। 

গণভবনে দেওয়া দলীয় প্রধান শেখ হাসিনার বক্তব্যের বিষয়ে আলোকপাত করে আবদুর রহমান বলেন, সেদিন গণভবনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী সকলে শেখ হাসিনাকে বলেছিলেন; আমরা আপনার উপরই দায়িত্ব দিলাম। তখন প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন, আমি যাকে মনোনয়ন দেব আপনারা সকলে তার পক্ষে কাজ করবেন। তবে কেউ যদি বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন তাহলে তার খবর আছে। ডামি প্রার্থী দাঁড় করিয়ে নির্বাচন করতে হবে।

আওয়ামী লীগের শীর্ষ এই নেতা বলেন, ডামি প্রার্থী এক জিনিস আর স্বতন্ত্র ও বিদ্রোহী প্রার্থী আরেক জিনিস। স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে তারা নাচছেন। যারা নাচার তারা এমনিতেই নাচতেন। এখন একটা উছিলা নিয়ে নাচছেন। বিভিন্ন জায়গায় ডাল চাল খেয়ে বেড়াচ্ছেন।

তিনি জেলা আওয়ামী লীগের নেতাদের উদ্দেশ্যে বলেন, ডামি প্রার্থীর নামে যারা স্বতন্ত্র প্রার্থী  হয়েছেন তাদের কর্মকাণ্ডের ছবি সংগ্রহ করুন। ১৭ তারিখ মনোনয়ন পত্র প্রত্যাহারের শেষ দিন। এর মধ্যে তারা মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার না করলে ১৮ বা ১৯ ডিসেম্বর জেলা আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ সীমিত আকারে হলেও বসে তাদের বহিষ্কারের সুপারিশ করে কেন্দ্রে পাঠান। কেন্দ্রের ওই সভায় সৌভাগ্যবশতই হোক আর দুর্ভাগ্যভশত হোক আমি থাকবো। আপনাদের ওই সুপারিশ কিভাবে পাশ করা যায় তা আমি দেখব।

তিনি বলেন, স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশ নেওয়া প্রার্থীদের দলে যাদের পদ পদবী আছে তাদের বহিষ্কার করা হবে। যাদের পদ নেই তারা কোনো দিন আওয়ামী লীগ করতে পারবে না।

তিনি আরও বলেন, ডামি প্রার্থী মানে এই না তাকে দিয়ে দলীয় প্রার্থীকে হারাতে হবে। ডামি প্রার্থী হবে দলীয় প্রার্থীর ইচ্ছেমত, যেখানে তিনি ছাড়া আর কোনো প্রার্থী নেই সেখানে। ফরিদপুরের চারটি আসনে আওয়ামী লীগের কোনো ডামি প্রার্থী নেই।

স্বতন্ত্র কোনো প্রার্থীকে কোনো চাপ দেওয়া হচ্ছে না। কেউ যদি চাপ দেওয়ার অভিযোগ করেন তা ভিত্তিহীন ও বিএনপি মার্কা অভিযোগ।

এ বর্ধিত সভায় সভাপতিত্ব করেন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও ফরিদপুর-৩ (সদর) আসনের নৌকার প্রার্থী শামীম হক। অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন ফরিদপুর-২ (সালথা-নগরকান্দা) আসনের নৌকার প্রার্থী বর্তমান সংসদ সদস্য শাহদাব আকবর লাবু, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহ মো. ইশতিয়াক, বোয়ালমারী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এম এম মোশাররফ হোসেন, সালথা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. ফকির মিয়া প্রমুখ।

এমএসএ