দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নীলফামারীর চারটি সংসদীয় আসনে মোট ৩৭ জন প্রার্থীর মধ্যে ২৪ জনের মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করা হয়েছে। এসময় আটজনের মনোনয়নপত্র বাতিল এবং পাঁচজনের মনোনয়ন স্থগিত করা হয়েছে। রোববার (৩ ডিসেম্বর) সকাল ১০টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত রির্টানিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই শেষে রাতে এ ঘোষণা দেন রির্টানিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক পঙ্কজ ঘোষ।

অপরদিকে স্থগিত হওয়া ওই পাঁচ প্রার্থীর মনোনয়ন পুনরায় যাচাই-বাছাই শেষে সোমবার সিদ্ধান্ত ঘোষণা করা হবে বলে জানান তিনি।

রির্টানিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক পঙ্কজ ঘোষ জানান, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নীলফামারীর চারটি সংসদীয় আসনে মধ্যে নীলফামারী-১ (ডোমার-ডিমলা) আসনে মোট ১০ জনের মনোনয়ন পত্রের মধ্যে পাঁচজনের মনোনয়ন বৈধ, দু’টি বাতিল ও তিনটি স্থগিত করা হয়েছে। বৈধ প্রার্থীরা হলেন, আওয়ামী লীগ মনোনীত বীমুক্তিযোদ্ধা আফতাব উদ্দিন সরকার, জাতীয় পার্টি (এ) মনোনীত তছলিম উদ্দিন, বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট ফ্রন্ট (বিএনএফ) মনোনীত মো. সিরাজুল ইসলাম ও জাতীয় পার্টি (জেপি) মনোনীত মখদুম আজম মাশরাফী এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী খায়রুল আলম বাবুল। অপর দিকে এই আসনে দু’জনের মনোনয়ন বাতিল করা হয়েছে। এরা হলেন, ন্যাশনাল পিপলস পার্টির করুণাময় মল্লিক ও স্বতন্ত্র প্রার্থী ইমরান কবির চৌধুরী (জনি)। মনোনয়ন স্থগিত করা হয়েছে বিএনএমের জাফর ইকবাল সিদ্দিকী, তৃণমূল বিএনপির এনকে আলম চৌধুরী এবং জাকের পার্টির লতিবালী রহমান লতিফ।

নীলফামারী-২ (সদর) আসনের ৬ জন প্রার্থীর মধ্যে চারজন প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বৈধ হয়েছে। বৈধ প্রার্থীরা হলেন, আওয়ামী লীগের আসাদুজাজামান নূর, জাতীয় পার্টির (এ) মো. শাহজাহান আলী চৌধুরী, জাকের পার্টির মো. আবু সাঈদ, বাংলাদেশ কংগ্রেসর মো. মোরছালীন ইসলাম (বাংলাদেশ কংগ্রেস)। এই আসনে দুজন প্রার্থীর মনোনয়ন বাতিল করা হয়েছে। এরা হলেন ন্যাশনাল পিপলস পার্টির প্রার্থী বিকাশ চন্দ্র অধিকারী এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী জয়নাল আবেদীন।

নীলফামারী-৩ (জলঢাকা) আসনে ১২ জন প্রার্থীর মধ্যে সাতজন প্রার্থীর মনোনয়ন বৈধ ঘোষণা করে তিনটি বাতিল ও দুটি মনোনয়নপত্র স্থগিত রাখা হয়েছে। বৈধ প্রাথীরা হলেন, আওয়ামী লীগের গোলাম মোস্তফা, জাতীয় পার্টির রানা মোহাম্মদ সোহেল, তৃণমূল বিএনপি খলিলুর রহমান, গণতন্ত্র পার্টির মোজ্জাম্মেল হক, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) অধ্যাপক আজিজুল ইসলাম, স্বতন্ত্র প্রার্থী (জাতীয় পার্টি বিদ্রোহী) কাজী ফারুক কাদের, স্বতন্ত্র প্রার্থী (আওয়ামী লীগ বিদ্রোহী) আবু সাঈদ শামীম। মনোনয়ন বাতিল করা হয়েছে স্বতন্ত্র প্রার্থী (আওয়ামী লীগ বিদ্রোহী) মার্জিয়া সুলতানা, হুকুম আলী খান ও মো. রোকুনুজ্জামান। স্থগিত করা হয় স্বতন্ত্র প্রার্থী (আওয়ামী লীগ বিদ্রোহী) সাদ্দাম হোসেন পাভেল ও বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির বাদশা আলমগীর।

নীলফামারী-৪ (সৈয়দপুর-কিশোরগঞ্জ) আসনে ৯ জন প্রার্থীর মধ্যে ৮ জনের প্রার্থীতার মনোনয়ন বৈধ ঘোষণা করে স্বতন্ত্র প্রার্থী সিদ্দিকুল আলমের মনোনয়নপত্র বাতিল ঘোষণা করা হয়। বৈধ প্রার্থীরা হলেন, জাতীয় পার্টির আহসান আদেলুর রহমান, আওয়ামী লীগের জাকীর হোসেন বাবুল, তৃণমূল বিএনপির আব্দুল্লাহ আল নাসের, এনপিপি’র আব্দুল হাই সরকার, বিএনএম’র সাজেদুল করিম, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) আজিজুল হক এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী (আওয়ামী লীগ বিদ্রোহী) মোখছেদুল মোমিন ও সাখাওয়াৎ হোসেন খোকন।

রির্টানিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক পঙ্কজ ঘোষ আরও জানান, যে আটজন প্রার্থী মনোনয়নপত্র বাতিল হয়েছে তার অধিকাংশই স্বতন্ত্র প্রার্থী। এক শতাংশ ভোটারের স্বাক্ষর জটিলতা থাকায় এবং মৃত ব্যক্তিকে ভোটার হিসেবে তালিকাভুক্ত করায় তাদের মনোনয়ন অবৈধ বলে ঘোষণা করা হয়।  

বাতিল হওয়া প্রার্থীরা রির্টানিং কর্মকর্তার দেওয়া সিদ্ধান্তে সংক্ষুব্ধ হলে তারা নির্বাচন কমিশনে আগামী ৫ থেকে ৯ ডিসেম্বরের মধ্যে আপিল করতে পারবেন। অপর দিকে স্থগিত হওয়া পাঁচজন প্রার্থীর মনোনয়নগুলো পুনরায় যাচাই-বাছাই পূর্বক সোমবার বিকেল চারটায় চুড়ান্ত সিদ্ধান্ত ঘোষণা দেওয়া হবে বলে জানান রির্টানিং কর্মকর্তা পঙ্কজ ঘোষ।

শরিফুল ইসলাম/আরকে