আর আচরণবিধি লঙ্ঘন করবেন না বলে জানিয়েছেন ফরিদপুর-৪ (ভাঙ্গা, সদরপুর ও চরভদ্রাসন) আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য ও দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী মজিবুর রহমান চৌধুরী নিক্সন। 

শুক্রবার (১ ডিসেম্বর) বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে ফরিদপুর আদালতে নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন করার অভিযোগের জবাব দিয়ে বেরিয়ে এসে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা জানান। এদিন যুগ্ম জেলা ও দায়রা দ্বিতীয় আদালতের বিচারক মোহাম্মদ মঈন উদ্দীন চৌধুরীর আদালতে হাজির হয়ে লিখিত ব্যাখ্যা জমা দেন এই সংসদ সদস্য। 

নিক্সন চৌধুরী বলেন, মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার সময় সারা দেশের প্রায় সব প্রার্থীই মিটিং মিছিল করে মনোনয়ন জমা দিল, কিন্তু শোকজ খাওয়ার সময় আমি আর সাকিব আল হাসান খেলাম। সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে দেখতে পেলাম সারা দেশেই এগুলো হয়েছে, কিন্তু আমাদের মতো কিছু মানুষকে শোকজ করা হয়েছে। তবে আমি মনে করি এটা দেওয়াতে ভালো হয়েছে। সবাই সাবধান হবে, পরবর্তীতে যাতে কেউ নির্বাচনী আচরনবিধি লঙ্ঘন না করে।

তিনি আরও বলেন, আচরণবিধি লঙ্ঘনের যে শোকজটা আসছে, আসলে আমাদের লোকসংখ্যা অনেক বেড়ে গেছে। আমরা জনপ্রতিনিধি, আমরা কাউকে তো দাওয়াত দেইনি। আমরা মনোনয়ন জমা দিব এই খবরে লোকজন কোথা থেকে আসছে, কীভাবে আসছে, আসলে এটা আটকে রাখাও সম্ভব না। আমরাতো ইচ্ছা করে এটা করিনি। রিটার্নিং অফিসারের কার্যালয়ে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছি, আমার সঙ্গে পাঁচজনের বেশি লোক ছিল না। অনেকেই জমা দিতে এসেছে, কার লোক কোথা থেকে এসেছে সেটা তো আমরা বলতে পারব না।

নিক্সন বলেন, নির্বাচনী আচরণবিধি মেনেই আমরা নির্বাচন করবো। মনোনয়ন জমা দেওয়ার সময় সারা দেশেই কিন্তু মিটিং মিছিল হইছে। শোকজ খাওয়ার সময় আমি আর সাকিব আল হাসান খেলাম। সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে দেখতে পেলাম সারা দেশেই এগুলো হয়েছে, কিন্তু আমাদের মতো কিছু মানুষকে শোকজ করা হয়েছে।  

তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী একটি সুষ্ঠু ও সুন্দর নির্বাচন চাচ্ছেন। আমরাও আমাদের কর্মী সমর্থকদের বোঝাচ্ছি যে আপনারাও নির্বাচনটি সুষ্ঠু ও সুন্দর করতে সহযোগিতা করেন। কেউ যাতে নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন না করে, সেটাও বোঝাচ্ছি।

নিক্সন চৌধুরী বলেন, আমার এবং সাকিব আল হাসানকে নিয়ে মিডিয়ায় বেশি প্রচার করা হয়েছে। আপনাদের দায়িত্বের জায়গা থেকেই আপনারা নিউজ প্রচার করেছেন। সকলকেই নির্বাচনী বিধি মেনে চলা উচিত। আসলে আমাদের যে কর্মী সমর্থক তাদের আনন্দ উল্লাস কন্ট্রোল করা আমাদের জন্য কষ্টকর হয়ে যায়। এ কারণে মাঝে মধ্যে আচরণবিধি লঙ্ঘন হয়ে যায়। আমরা তাদের বোঝাচ্ছি নির্বাচনে যাতে তারা আচরণবিধি লঙ্ঘন না করে।

তিনি বলেন, আজ আদালতে হাজির হয়ে লিখিতভাবে শোকজের জবাব দিয়েছি। জবাবে বলেছি আমরা আর এ ধরনের আচরণবিধি লঙ্ঘন করব না। কর্মী সমর্থকদেরকেও সতর্ক করা হয়েছে।

এর আগে গত ২৯ নভেম্বর জেলা রিটার্নিং অফিসারের কাছে ফরিদপুর ৪- আসনের প্রার্থী হিসেবে মনোয়নপত্র দাখিল করেন মজিবুর রহমান চৌধুরী নিক্সন। কয়েকশো মাইক্রোবাস ও মোটরসাইকেলের বহর নিয়ে তিনি একটি ছাদখোলা গাড়িতে নির্বাচনী এলাকার বিভিন্ন স্থান পরিদর্শন করে ফরিদপুর শহরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে জেলা পরিষদের সামনে এসে পৌঁছান। তারপর হেঁটে গিয়ে জেলা প্রশাসকের কাছে মনোনয়নপত্র জমা দেন তিনি। এতে সংসদীয় নির্বাচনে রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীর আচরণবিধিমালা অনুযায়ী তিনি আচরণবিধি লঙ্ঘন করেছেন বলে তাকে শোকজ করা হয়।

এ বিষয়ে নিক্সন চৌধুরীর বিরুদ্ধে কেন প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না তা জানাতে শুক্রবার বিকেল সাড়ে ৩টার মধ্যে যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ ২য় আদালতের অস্থায়ী কার্যালয়ে সশরীরে উপস্থিত হয়ে তাকে লিখিত ব্যাখ্যা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। এর প্রেক্ষিতেই নিক্সন চৌধুরী নির্বাচনী অনুসন্ধান কমিটির ফরিদপুর-৪আসনের চেয়ারম্যান এবং জেলা যুগ্ম ও দায়রা জজ (২য় আদালত) মোহাম্মদ মঈন উদ্দীন চৌধুরীর কার্যালয়ে আসেন।

জহির হোসেন/আরএআর