রাজশাহীতে নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন হিযবুত তাহরীরের দুইজন সক্রিয় সদস্য গ্রেপ্তার করেছে অ্যান্টি টেররিজম ইউনিট। বুধবার (২৯ নভেম্বর) সন্ধ্যা ৬টা ৪০ মিনিটে রাজশাহী নগরীর কেদুরমোড় এলাকার একটি ভাড়া বাসা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তাররা হলেন— সাতক্ষীরা জেলার কাশিগঞ্জ থানার চকরাম গোবিন্দপুর এলাকার আব্দুল মালিক গাজীর ছেলে ওমর ফারুক (২৮) ও চাঁপাইনবাবগঞ্জের গোমস্তাপুর উপজেলার দোকলা ডাঙ্গা এলাকার শাহজাহান আলীর ছেলে আসিফ শাহরিয়ার (২১)।

এটিইউর মিডিয়া অ্যান্ড অ্যাওয়ারনেস উইংয়ের পুলিশ সুপার মাহফুজুল আলম রাসেল সই করা এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে তথ্য জানানো হয়।

এতে বলা হয়, অ্যান্টি টেররিজম ইউনিটের নিজস্ব নজরদারি ও গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে বুধবার সন্ধ্যায় রাজশাহী মহানগরের রামচন্দ্রপুর, কেদুর মোড় বৌ বাজার এলাকা থেকে নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন ‘হিযবুত তাহরীর’র দুইজন সক্রিয় সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারকালে আসামিদের কাছ থেকে ‘হিযবুত তাহরীর’র কার্যক্রম পরিচালনায় ব্যবহৃত তিনটি মোবাইল ফোন, তিনটি সিম কার্ড, ‘হিযবুত তাহরীর’র প্রচারপত্র, এজেন্ডা সম্বলিত 'হিযবুত তাহরীর'র উদ্দেশ্য, কার্যক্রম, খিলাফত প্রতিষ্ঠার আহ্বান, দল গঠনের প্রক্রিয়া, রাষ্ট্র ও গণতন্ত্র বিরোধী লেখনীসহ বিপুল পরিমাণ উগ্রবাদী দালিলিক কাগজপত্র উদ্ধার করা হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়, গ্রেপ্তারকৃতরা একটি বাসা ভাড়া নিয়ে গোপনে নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন ‘হিযবুত তাহরীরের’ কার্যক্রম পরিচালনা, সংগঠনের অন্যান্য সদস্যদের নিয়ে গোপন বৈঠকে বসে রাষ্ট্র বিরোধী পরিকল্পনায় নিয়োজিত ছিল। গ্রেফতারকৃত ওমর ফারুক রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগ হতে ২০২০ সালে স্নাতক সম্পন্ন করে বর্তমানে একটি হার্ডওয়ার কোম্পানিতে কর্মরত আছে। আর গ্রেপ্তারকৃত আসিফ শাহরিয়ার বর্তমানে রাজশাহী সরকারি কলেজের পরিসংখ্যান বিভাগে স্নাতক ১ম বর্ষের ছাত্র। গ্রেফতারকৃত আসামিরা বিগত প্রায় ৫ বছর ধরে নিষিদ্ধ সংগঠনটির কার্যক্রমের সঙ্গে জড়িত। তারা উভয়েই রাজশাহী অঞ্চলে ‘হিযবুত তাহরীর’র অন্যতম সংগঠক হিসেবে কাজ করে আসছে।

আসামিরা বিভিন্ন এনক্রিপ্টেড মোবাইল অ্যাপস ব্যবহার করে সংগঠনের অন্যান্য সদস্যদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ করে আসছিল। আসামিরা নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন ‘হিযবুত তাহরীর’র অন্যান্য সদস্যদের সহায়তায় রাষ্ট্র বিরোধী ষড়যন্ত্র, হত্যা, দেশে অস্থিতিশীলতা ও অস্থিরতা সৃষ্টির লক্ষ্যে রাজশাহী শহরের বিভিন্ন স্থানে সরকার বিরোধী পোস্টারিং, অনলাইন ও সাইবার স্পেসের মাধ্যমে উগ্রবাদী, জননিরাপত্তা বিঘ্ন, জনমনে ত্রাস ও আতংক সৃষ্টির লক্ষ্যে প্রশিক্ষণ, পরিকল্পনা ও প্রস্তুতি গ্রহণ করে আসছিল। 

এর আগে ২০২৩ সালের ১৬ এপ্রিল অ্যান্টি টেররিজম ইউনিট কর্তৃক ‘হিযবুত তাহরীর’র দুইজন সদস্য মামুন অর রশিদ ও ইসমাইল হোসেনকে গ্রেপ্তারের পর আরএমপি, রাজশাহীর বোয়ালিয়া থানায় মামলা হয়। বোয়ালিয়া থানার মামলা নম্বর- ২৬। আর গ্রেপ্তারকৃত ওমর ফারুক এজাহারনামীয় পলাতক আসামি। গ্রেপ্তারকৃত অপর আসামি আসিফ শাহরিয়ার একই মামলায় তদন্তে প্রাপ্ত আসামি।

এ বিষয়ে রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশ অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (মিডিয়া) মো. জামিরুল ইসলাম বলেন, অ্যান্টি টেররিজম ইউনিট অভিযান পরিচালনা করেছিল। তারা দুজনকে গ্রেপ্তার করে।

শাহিনুল আশিক/এমএ